পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○ケ8 বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, কাৰ্ত্তিক । আমাদের কল্পনা আকৃষ্ট না হইয়া প্রতিহত হইতে থাকে। তাহ ঔদার্য্য হইতে উৎসারিত নহে, তাহ প্রাচুর্য্য হইতে উদ্বলিত ट्झ नांशे । এই গেল নকল-করা অত্যুক্তি। কিন্তু নকল, বাহা আড়ম্বরে মূলকে ছাড়াইবার চেষ্টা করে, এ কথা সকলেই জানে । সুতরাং সাহেব যদি সাহেবী ছাড়িয়া নবাবা ধরে, তবে তাহাতে যে আতিশযা প্রকাশ হইয়। পড়ে, তাহ কতকটা কৃত্রিম, অতএব তাহার দ্বারা জাতিগত অভু্যক্তির প্রকৃতি ঠিক ধর ষায় না। ঠিক খাটি বিলাতি অতু্যক্তির একটা দৃষ্টান্ত মনে পড়িতেছে। গবমেণ্ট সেই দৃষ্টান্তটি আমাদের চোখের সাম্নে পাথরের স্তম্ভ দিয়া স্থায়িভাবে খাড়া করিয়া তুলিয়াছেন, তাই সেটা হঠাং মনে পড়িল । তাহা অন্ধকূপহত্যার অত্যুক্তি। পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, প্রাচ্য অ yাক্তি মানসিক ঢিলামি। আমরা কিছু প্রাচুর্য্যপ্রিয়, আঁটা আঁটি আমাদের সহে না । দেখ না আমা দের কাপড়গুলা ঢিলাঢ়ালা, চেয়ে অনেক বেশি—ইংরেজের বেশভূষা কাটছাট, ঠিক মাপসই—এমন কি, আমাদের মতে তাই আঁটিতে আঁটিতে ও কাটিতে কাটিতে শালীনতার সীমা ছাড়াইয়া গেছে। আমর, হয় প্রচুররূপে নগ্ন, নয় প্রচুররূপে আবৃত। আমাদের কথাবার্তাও সেই ধরণের,—হয় একেবারে মেীনের কাছাকাছি, নয় উদার ভাবে সুবিস্তৃত । আমাদের ব্যবহার ও তাই, হয় অতিশয় সংষত, নয় হৃদয়াবেগে উচ্ছ,সিত। কিন্তু ইংরেজের অত্যুক্তির সেই স্বাভা অবিগুকের বিক প্রাচুর্য্য নাই,—তাহ অত্যুক্তি হইলেও খৰ্ব্বকায় । তাহ। আপনার অমূলকতাকে নিপুণভাবে মাটিচাপা দিয়া ঠিক সমূলকতার মত সাজাইয়৷ তুলিতে পারে। প্রাচ্য অত্যুক্তির অতিটুকুই শোভা, তাহাই তাহার অলঙ্কার, সুতরাং তাহা অসঙ্কোচে বাহিরে আপনাকে ঘোষণা করে। ইংরেজি অত্যুক্তির অতিটুকুই গভীরভাবে ভিতরে থাকিয়া যায়—বাহিরে তাহ বাস্তবের সংযত সাজ পরিয়া খাটি সত্যের সঙ্গিত এক পংক্তিতে বসিয়া পড়ে । আমরা হইলে বলিতাম,অন্ধকূপের মধ্যে হাজারে লোক মরিয়াছে । সংবাদটাকে একেবারে একঠেলায় অত্যুক্তির মাঝ-দরিয়ার মধ্যে রওনা করিয়া দিতাম । হলওয়েল সাহেব একেবারে জনসংখ্যা সম্পূর্ণ নির্দিষ্ট করিয়া তাহার তালিকা দিয়া অন্ধকূপের আয়তন একেবারে ফুট-হিসাবে গণনা করিয়া দিয়াছেন ! যেন সত্যের মধ্যে কোথা ও কোন ছিদ্র নাই । ওদিকে যে গণিতশাস্ত্র তাহার প্রতিবাদী হইয়া বসিয়া আছে, সেটা খেয়াল করেন নাই। হলওয়েলের মিথ্য যে কতস্থানে কতরূপে ধরা পড়িয়াছে, তাহা শ্ৰীযুক্ত অক্ষয়কুমার মৈত্ৰেয় মহাশয়ের সিরাজদ্দেলে। গ্রন্থে ভালরূপেই অলোচিত হইয়াছে । আমাদের উপদেষ্ট কার্জন সাহেবের নিকট স্পৰ্দ্ধা পাঠয়া হলওলের সেই অত্যুক্তি রাজপথের মাঝখানে মাটি ফুড়িয়া স্বর্গের দিকে পাষাণ-অঙ্গুষ্ঠ উত্থাপিত করিয়াছে । 铬4 ● কিন্তু আমাদের এই কথাগুলা বিশুদ্ধ বিদ্বেষমূলক রলিয়৷ ঠেকিতে পারে। সেইজন্য