চতুর্থ সংখ্যা । ] বান্ধন। অকাৱাদি বর্ণ স্বত পৱিত বা মিলিত ধ্বনিত বা ‘স্বরিত হয়, এইজন্ত তাহাদিগকে স্বর বলে, স্বরশব্দের অর্থ ধ্বনি বা শব্দ। অতএব যে বর্ণ স্বত স্বরিত বা ধ্বনিত হয়, তাহাকে স্বর কহে । আর ককারাদি বর্ণসকল স্বত ধ্বনিত বা স্বরিত হয় না, এইজন্য তাহারা স্বরবাচ্য নহে । তাহাদিগকে ব্যঞ্জনবর্ণ বলা যায় ; কারণ,স্বরের সাহায্য ব্যতিরেকে তাহারা শদিতাবস্থা প্রাপ্ত হয় না, তুহার স্বত কেবল মসি বা অঞ্জনাবস্থাতেই বৰ্ত্তমান থাকে, অর্থাৎ তাহার একমাত্র 'লিথিতাবস্থাতেই বর্তমান থাকে। স্বরবর্ণ দুই অবস্থাতেই স্বত বর্তমান ; কিন্তু ককারাদি কেবলমাত্র অঞ্জনাবস্থাতেই বর্তমান আছে, হয় ত এইজষ্ঠই তাহাদের নাম ব্যঞ্জনবর্ণ হইয়াছে, এইরূপ অমুস্থান করা चांश्च । - সাহিত্যে, অলঙ্কারে ব্যঞ্জনশব্দের অর্থ প্রকাশ, কিন্তু সেই অর্থ এস্থলে সংলগ্ন হয় না । চলিতভাষায় ইহার অর্থ ভোজ্যাল্পের উপকরণ। আমরা কেবল অঞ্জনাত্মক বর্ণকে ব্যঞ্জনবর্ণ বলাই অধিক সঙ্গত মনে করি। অকারাদি স্বরবর্ণসকল স্বরাত্মক এবং অঞ্জনাস্মক, কিন্তু ককারাদি বর্ণ কেবল অল্পনাত্মক, কেবল অঞ্জনেই তাহদের প্রকাশ, তাহারা স্বরের সাহায্য ব্যতীত শব্দাকারে প্রকাশিত शं नां । . . ব্যঞ্জনবর্ণ স্বতন্ত্রভাবে শব্দ নহে, স্বরই শব্দ এবং শঙ্গই ভাষা ; অতএব স্বরবর্ণ ই ভাষার মূল। : ব্যঞ্জনবর্ণসকল স্বরে যুক্ত হইয়া স্বরকে বিভিন্ন রূপ প্রদান করে, তাহার স্বর • বা শব্দের ওপমাত্র; যথা—প বলিতে যেরূপে ওঠৰয় মিলিত করিতে হয়, সেইভাবে ওষ্ঠ অক্ষরের প্রকৃতি ও স্বরবর্ণেচ্চারণ । 'lys মিলিত করিয়া অকারধ্বনি করিলে উক্ত . অকারের উচ্চারণ প হয়। ন বলিতে যেমন দন্তের সহিত জিহবাগ্রকে মিলাইতে হয়, সেইভাবে মিলাইয়া অকার উচ্চারণ করিলে সেই অকার নরূপ ধারণ করিয়া বহির্গত হয়। ক বলিতে যেভাবে জিহবামূলকে কষ্ঠের সহিত মিলাইতে হয়, সেইভাবে মিলাইয়া-ধরিয়া তৎপরে আ উচ্চারণ করিলে তাহাক হইয় আবিভূত হয় ; অতএব প, ন, ক উক্ত অকারকেই বিভিন্নপ্রকার উচ্চারণ প্রদান করে। ব্যঞ্জন শব্দ নহে, স্বরই শব্দ, ব্যঞ্জন তাহার বৈচিত্র্যবিধায়ক গুণমাত্র। উচ্চারণ। - “ভাষাতত্ত্ব” প্রথমখণ্ডে বলা হইয়াছে যে, আমাদের সংস্কৃত এবং কথিত ভাষার মধ্যে যে পার্থক্য, তাহার প্রধান কারণ উচ্চারণদোষ ; আমরা সংস্কৃতও উচ্চারণ করিতে জানি না এবং বাঙলাও যে প্রকার লিখিয়৷ থাকি, সেইপ্রকার উচ্চারণ করি না। বলা বাহুল্য যে, উচ্চারণই ভাষাৰ মূল ? তাহার, ব্যতিক্রম হইলে ভাষাই বিভিন্ন বলিয়া বোধ হয়। মনে করুন, ইষ শব্দের অর্থ আশ্বিনমাস, আবার ইস্ বলিতে সাধারণ ভাষাতে আশ্চর্য্যের ভাবও বুঝায়, আর ঈশ অর্থ ঈশ্বর, এবং ঈষ, অর্থ লাঙলের ফলা"। ইহাদের সকলের যদি একপ্রকার উচ্চারুণ করি, তবে শ্রোতা কি অর্থ বুঝিবে ? ইহা-শব্দের অর্থ এই বস্তু বা কাৰ্য্য কিংবা ভাব, ঈহ! অর্থ চেষ্টা, কিন্তু উচ্চারণ আমরা একইপ্রকার করিা থাকি। আমাদের নিকট হ্রস্বদীর্ধের প্রভেদ নাই ; ইংরেজীভাষাতে steel শৰকে যদি still উচ্চারণ করা যায়, তবে তাছায় সম্পূর্ণবিভিন্নাৰ
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১৯৬
অবয়ব