পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3e 8 মহান্ত তাহার অপরাদ্ধ ; এই দুই অঙ্গে গুরুশক্তি পূর্ণ ও প্রকট হয়। যে গুরুশক্তি শিবাজীর জীবন ও চরিত্রকে অধিকার করিয়া তাহাকে লক্ষ্যপথে পরিচালিত করিয়াছিল, তাহাও এই দ্বিবিধ অঙ্গেই পূর্ণত প্রাপ্ত হইয়াছিল। ইহীর চৈত্য-অঙ্গ, অন্তর্যামী, অদৃশুদিক্ ছিলেন-ভবানী, ইহার মহাস্তঅঙ্গ, বাহ ও লৌকিক দিকৃ ছিলেন–রামদাস । রামদাসই শিবাজীর অন্তর্নিহিত ভবানী বা ভগবৎশক্তিকে জাগাইয়া তোলেন, আবার এই ভবানীই রামদাসের শিক্ষাদীক্ষার প্রতাক্ষ প্রামাণ্য প্রদান করিয়া শিবাজীকে রামদাসের চরণে আত্মোৎসর্গ করিতে প্রবৃত্ত করেন । শিবাজীর জীবনের অপ্রকটশক্তির বিগ্ৰহ ছিলেন ভবানী, তাহার চরিত্রের প্রকট আদর্শ ছিলেন রামদাস । ভবানী ও রামদাস—এ দুয়ের কাহাকেও ছাড়িয়া শিবাজীকে ধরিতে, বুঝিতে,জানিতে ও আত্মস্থ ও আত্মসাৎ করিতে পারা যাইবে না। যোগাসনে উপবিষ্ট রামদাস, র্তাহার সম্মুখে জননীহুঃখভারথিন্ন, মাতৃগৃঙ্খলমোচনে কৃতসঙ্কল্প, স্বদেশের স্বাধীনতার জন্ত মহাসাধনায় নিযুক্ত শিবাজী ; এবং মধ্যস্থানে, উভয়কে ধারণ করিয়া, উভয়ের গুরুশিষ্যসম্বন্ধের স্বত্ররূপে বিদ্যমান মহাপ্রলয়ঙ্করী অসুরদলনী " কল্যাণমূৰ্ত্তি—ভবানী ; এই ত্ৰিমূৰ্ত্তিতেই ছত্রপতি মহারাজ শিবাজীর চরিত্রের প্লকৃততত্ত্ব প্রকাশিত হয়। এই ত্রি ঠিকেই শিবাজী-মহোৎসব-সমিতি শিবাজীচরিত্রের বিগ্ৰহরূপে শিবাজীমেলায় এবারে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন। প্রাকৃতজনে এই মূৰ্বিত্রয়ের নিগুঢ়তত্ব বুঝিতে পারে নাই—সে অধিকার তাছাদের तछिल्लsॉन । [ ७छे बर्म, श्रांत्रिन । জন্মে নাই, কিন্তু তাহারাও ভবানীচরণতলুে রামদাসশিষ্য শিবাজীকে প্রত্যক্ষ করিয়া স্থলভাবে তাহার চরিত্রের যে রস গ্রহণ করিতে পারিয়াছে, শুধু বক্তৃত বা কথকতাদির দ্বারা তাহা কখনো ধরিতে পারিত বলিয়া মনে হয় না। এই মূৰ্ত্তিত্রয়সাহায্যে এবারে শিবাজীর প্রতি লোকের মনে যে ভক্তির উদ্রেক হইয়াছে, হাজার সভাসমিতি ও বক্তৃতা করিয়া কদাপি তাহ জাগাইতে পারা যাইত না। লোকশিক্ষার্থে এই সকল প্রতিকৃতি ও চাক্ষুষ ছবির সাহায্যগ্রহণ না করিলে চলিবে না। কিন্তু এই মূৰ্বিত্রয়ের প্রতিষ্ঠাতে তত্ত্বদশী দর্শকও অসাধারণ উদ্দীপনা ও তৃপ্তি লাভ করিয়াছেন বলিয়াই বিশ্বাস করি। তত্ত্বদর্শীর নিকট যথাযোগ্য বিগ্ৰহাদির যে মূল্য, প্রাকৃতজনের নিকটে তাহ নাই। ফলত যাহার তত্ত্বজ্ঞান ন ফুটিয়াছে, সে কদাপি বিগ্ৰহাদির প্রকৃত মৰ্ম্মগ্রহণে সমর্থ হয় না। যে কখনো মাতৃমুক্তি প্রত্যক্ষ করে নাই, সন্তানবতী রমণীর অঙ্গসমাবেশের মধ্যে, রক্তমাংসের ভিতর দিয়া, যে বিশাল, যে মমতাময়, যে প্রাণময়, যে আত্মহারা মাতৃভাব প্রকাশিত হয়, ইহা ঘে কখনো দেখে নাই এবং এই পীনপয়োধরা রমণীমূৰ্ত্তি দেখিয়া যাহার চক্ষু উহারই মধ্যে বিশ্বজনীন মাতৃত্বের প্রতিবিম্ব মানসচক্ষে প্রত্যক্ষ করে নাই,—সে কখনো ম্যাডোনা বা গণেশজননীর স্বরূপ উপলব্ধি করিতে পরিবে না । ম্যাডোনার ছবি বা গণেশজননীর মুৰ্ত্তির মধ্যে বিশ্বজননীর আভাস প্রাপ্ত হওয়া প্রাক্কতজনের সাধ্যাতীত। ইং কেবল তত্ত্বদর্শীরই পক্ষে সম্ভব। শিবাজী মহোৎসবের মূৰ্ত্তিত্রয়ে এইজন্য প্রাকৃতজনে