বঙ্কিমবাবু ও স্বদেশী ইতিহাস। বাঙলার ইতিহাস নাই,--ইতিহাস হইতে পারে না ; বাঙালী চিরকাল ভীরু ; ইহার গৃহে তস্কর বা দস্থ্য প্রবেশ করিলে রমণীর অঞ্চলের ভিতর লুকাইতে চাহে, সাহস করিয়া লড়িতে পারে না ; ইঙ্গর এমন দুর্বলু, ভারু ও কাপুরুষ যে, কখন যুদ্ধ করে নাই—এইরূপ একটা ধারণা কিছুকাল হইতে বাঙালীর মধ্যে, কি জানি কেমন করিয়া, স্থান পাইয়াছিল। নিন্দুক লর্ড মেকলে বাঙালী দুৰ্ব্বল, ভীরু, কাপুরুষ, প্রবঞ্চক ও মিথাবাদী, এই মিথ্যাপবাদ उद्वैि চেকুনাই ভাষায় প্রচার করিল । ইংরেজিশিক্ষার কল্যাণে শিক্ষিতবাঙালী সেই কুৎসাক লঙ্কিত পুস্তক স্বাস্তাকুড়ে ছুড়িয়া ফেলিয়া দিল না, তাহা দুলিয়া-জুলিয়া পাঠ করিতে লাগিল, এবং যে স্থানটায় বাঙালীচরিত্রে কলঙ্কপুরীষ গাঢ়ভাবে প্রলেপিত হইয়াছে, সেই স্থানের উপর্ম পরম্পর এমন করিয়া আস্বাদন করিল যে, বলিতে ঘৃণা ও লজ্জা হয়, তাহা একেবারে মুখ-স্থ ও উদর-স্থ ক্টরিল, আর বলিল, “মেকলের ‘টাইল কি স্বন্দর !" জেমস মিলের ইতিহাসে হিন্মুজাতির নিন্দ ও আগৌরব পাঠ করিয়া ইংরেজ সিভিলিয়ানগণ, ধাৰাদিগের অয়ে আপনার প্রতিপালিত হইবেন, তাহাদিগকে ঘৃণা করিতে শিথিয় ‘ভারতে পদার্পণ করেন, তাহ আশ্চর্য্য নহে । আশ্চৰ্য্য এই যে, বাঙালী মেকলেপ্রচারিত স্বজাতিকুৎসা উদরস্থ করিয়া আত্মমৰ্য্যাদা ও স্বজাতিসম্মানের মস্তক চৰ্ব্বিত করিলেন ; মের্কলে যাছা বলিয়াছেন, তাহা বিশ্বাস করিলেন ; যাহা বিদেশী অত্যাচারের ফল, তাহাকে বাঙালীজাতিচরিত্রের মজ্জাগত দোষ মনে করিলেন। ইংরেজ বলিলেন—“বাঙালি ! তোমরা বরাবর দুৰ্ব্বল, ভীরু ও কাপুরুষ ” অম্নি ইংরেজের শিষ্যস্থানোপেত বাঙালী বলিলেন “আজ্ঞে, তাই।” ইংরেজ বলিলেন— “বাঙালি ! তোমরা চিরকাল দুৰ্ব্বল ও কাপুরুষ, সুতরাং তোমাদিগের কষ্মিনকালে স্বাধীনতা ছিল না ।” বাঙালী উত্তর করিলেন—“আজ্ঞে, তাই ত বোধ হইতেছে।” ইংরেজ আরও বলিলেন—“বাঙালি ! * দুঃখিত হইও না, তোমার কোন দোষ নাই। দোষ তোমাদিগের দেশের,—বঙ্গদেশের, তাহার বাষ্পপূর্ণ বায়ুর এবং তাহার বারিসিক্ত ভূমির। এ স্থানে বীরপুরুষ জন্মান দূরে থাকুক, বীরজাতি এদেশে আদিয়া দীর্ঘকাল বাস করিলে দুৰ্ব্বল হইয় পড়ে। আর, ভীরুতা দুৰ্ব্বলতার অনিবাৰ্য্য ফল । সুতরাং তুমি যে দুৰ্ব্বল ও ভীরু ও কাপুরুষ, তাহাতে তোমারকোন দোষ নাই, তুমি অমৃতাপ করিও না।” * दीडानो बनिएगन-७डू, श्वाब मैनहै। একটু ঠাণ্ড হইল। আপনার কৃপায় এখন সার কথা বুৰিলাম, আমাদিগের কোন দোষ ।
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩৭৯
অবয়ব