পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Syre হিউমের মনে কখনো স্থান পাইয়াছিল বা পাইতে পারে,ইহা কল্পনা করাও অসাধ্য বলিয়৷ মনে হয়। ডফারিস্ অতি অল্পকালমধ্যেই কংগ্রেসের প্রতি যে বিরূপভাব প্রকাশ করিতে আরম্ভ করেন, তাহাতেই তাহার আস্তরিক আদর্শ ও অভিপ্রায় বিলক্ষণ বুঝিতে পারা যায়। আর অন্ত্র-আইন-সম্বন্ধে হিউম্ চিরকাল যে ভাব পোষণ করিয়া আসিয়াছিলেন, তাহু দেখিয়া তিনিও যে কংগ্রেস সম্যকৃরূপে রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসনের আদর্শের অনুসরণ করুক, এরূপ ইচ্ছা করিতেন, এমন ধারণা জন্মে না। ডফারিণের কুটিলনীতি হিউমের মনে স্থান পাইয়াছিল, এমন কথা বলা অসঙ্গত হইবে। কিন্তু জগতের আর দশটা স্বাধীনজাতি যেমন আত্মনিষ্ঠ হইয়া আপনার সনাতন-লক্ষ্য-সাধনে নিযুক্ত রহিয়াছে, ভারতবর্ষও সেইপ্রকার ব্রিটিশবন্ধনমুক্ত হইয়া সম্পূর্ণরূপে আত্মনিষ্ঠ ও আত্মপ্রতিষ্ঠ হউক,—এত বড় আদর্শ যে তিনিও অবিচলিতচিত্তে ধারণা করিতে পারিয়াছিলেন, এমন কথাও বলিতে পারি না । হিউমের মত উদারপ্রকৃতির ইংরেজ এদেশে আর কেহ আসিয়াছেন কি না, জানি না। কিন্তু র্তার সদাশয়তা যতই বড় হউক না কেন, তিনি যে ইংরেজঃ এ কথা তিনিও ভুলিতে পারেন নাই, আমরাও ভুলিতে পারি না। তার পর হিউম্ আযেীবন ভারতশাসনের অঙ্গীভূত হইয়া ছিলেন। হঠাৎ তার পক্ষে ঐ শাসনের প্রতি একেবারে স্নেহশূন্ত হওয়া একান্ত অসম্ভব বলিয়াই মনে হয়। চিরাভ্যস্ত সৌভাগ্যসম্ভোগের প্রতি এমন নিঃশেষ বৈরাগ্য দৈবাম্বগ্রহে কথন-কখন জন্মিয় बछाच=वि । [ ৬ষ্ঠ ৰব, অগ্রহায়ণ । থাকে সত্য, কিন্তু হিউমের সেরূপ হইয়াছিল বলিয়া কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না । তিনি ভারতবাসীকে ভালবাসেন, ইহা শতবার স্বীকার করি । তিনি ভারতের কল্যাণকামনা করেন ; ভারতবাসী জনগণের মুখস্বচ্ছন্দতা বৃদ্ধি পাউক, ইহা তিনি সৰ্ব্বাস্তঃকরণে ইচ্ছা করেন ;–এ সকলই সত্য। কিন্তু তবুও ইহ বিশ্বাস করিতে পারি না যে, আমরা ষে বস্ত চাই, তিনিও ঠিক তাহাই কংগ্রেসের লক্ষ্য বলিয়া প্রতিষ্ঠিত করিতে চাহিয়াছিলেন । ঔদার্য্যানেীদাৰ্য্যনিৰ্ব্বিশেষে ভারতে ব্রিটিশরাজনীতি সৰ্ব্বদাই এক লক্ষ্য ধরিয়া চলিয়াছে। ভারতে ব্রিটিশপ্রভুশক্তির অচলপ্রতিষ্ঠা সেই লক্ষ্য। ঋজু-কুটিল, কোমল-কঠোর, বিবিধ পন্থা অবলম্বন করিয়া প্রত্যেক ব্রিটিশরাজপুরুষই এই লক্ষ্য ধরিয়া চলিয়াছেন। কেহ বা বুদ্ধিমান, তাই প্রজারঞ্জনের দ্বার রাজশক্তিকে প্রজাবর্গের স্নেহমমতার মধ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত করিবার চেষ্টা করিয়াছেন ; আর কেহ বা স্বল্পবুদ্ধি, তাই প্রজার ইচ্ছা অনিচ্ছা ও সুখদুঃখের প্রতি উদাসীন হইয়া শুদ্ধ পশুবল, বাহুবল ও কৌশলবলে রাজশক্তিকে অপরাজেয় করিবার প্রয়াস পাইয়াছেন । কিন্তু মুদুল-কঠোর উভয়বিধ শাসনেরই লক্ষ্য এক—ব্রিটিশ প্রভুশক্তিকে ভারতে চিরস্থায়ী করা। সৰ্ব্বাপেক্ষ উদারমতি ও সদাশয় র্যাহারা, র্তাহারাও প্রজার স্বত্বস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করাকে শাসনের চরমলক্ষ্য বলিয়া কখনো মনে করেন নাই। ব্রিটিশপ্রভূশক্তিকে বদ্ধমূল করিবার জন্য যতটুকু পরিমাণে প্রজার স্তৰস্বাধীনতার সম্প্রসারণ একান্ত আবগুক , হইয়াছে, ততটুকু পরিমাণে র্তাহার সে বিষয়ে