পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একাদশ সংখ্যা । ] তীর্থদর্শন। ○○○

  • য়াতের গলিগুলিরও এই তুর্দশা । ইহা হিন্দুসমাজের নিতান্ত লজ্জার বিষয়। মিউনি সিপ্যালিটির ত দেখিতেছি এদিকে যত্ন নাই। শুনিয়াছি, কাশীস্ত হিন্দুসমাজ নিষ্ঠাবান্‌ ; বাঙালীকে অনাচারী বলিয়া আমাদের ‘পশ্চিমা’ জ্ঞাতিগণ টিটুকারী দেন, কিন্তু হিন্দুধর্মের কেন্দ্রস্থল সুপবিত্র বারাণসীধামের অপরিচ্ছন্নতাবিষয়ে তাহার এত নিশ্চেষ্ট কেন ? এই সকল স্থলেই হিন্দুজাতি ও খ্ৰীষ্টান ইংরেজজাতির মধ্যে প্রভেদ বেশ বুঝিতে পুরো যায় •

• কাশীতে নানারূপ অনাচার-ব্যভিচার অহরহ অাচরিত হইতেছে। অনেক কলুষিতচরিত্র নরনারী এখানে আশ্রয় লইতেছে ও যেষাং কুত্র গতিনাস্তি তেষাং বারাণসী গতিঃ এই বাণীর সার্থকতা সম্পূদন করিতেছে। এই কারণে অনেক ইংরেজী শিক্ষিতুলোকের এই স্থানের উপর একটা বিষম অশ্রদ্ধা আছে। কিন্তু আমার মনে একদিনের তরেও সেরূপ অশ্রদ্ধার উদ্রেক হয় নাই। পবিত্র জাহ্লবীসলিলে বিষ্ঠামূত্র-আবর্জনাদি পড়িতেছে, তাহাতে কি জাহ্লবীবারির পবিত্রতা নষ্ট হয় ? পতিতপাবনী স্বরধুনীর ন্তায় বিশ্বনাথের পুরীও পাপীর সংস্পর্শে কলঙ্কিত হয় নাই, বরং পাপীদিগকে নিজুক্রোড়ে স্থান দিয়া তাহাদের পাপক্ষালনের পথ দেখাইতেছে। হিন্দুঞ্জাতির অন্যতম কাৰ্ত্তি মানমন্দিরের দুর্দশা দেখিলে চক্ষে জল আসে,—হিন্দুজাতি g সত্যসত্যই অন্তঃসারশূন্ত হইয়া পড়ি#ifছ, তাহার আর দ্বিতীয় প্রমাণের প্রয়োজন হয় না। হিন্দুজাতি অন্তনিরপেক্ষ হইয়া ,জ্যোতিষশাস্ত্রে কতদূর উন্নতিলাভ করিয়াছিল, তাহার অকাট্যপ্রমুণে এই মানমন্দিরে v) te প্রতিষ্ঠিত যন্ত্রনিচয় । কিন্তু মানমন্দিরের নিম্নতল এখন গোশালায় পরিণত হইয়াছে, গোমূত্র ও গোময়ের গন্ধে সমস্ত পুরী আমোদিত। এই সকল দেখিলেই হৃদয়ঙ্গম হয় যে, প্রাচীন হিন্দুজাতি সকল বিষয়েরই ধর্মের সহিত সংযোগ রাখিয়া কি দূরদৃষ্টির পরিচয় দিয়াছেন। এই মানমন্দিরের যদি ধৰ্ম্মের সঙ্গে সামান্তমাত্রও সংযোগ থাকিত, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রাদির মধ্যে যদি একটি পাষাণবিগ্রহ দেবতারূপে স্থাপিত হইতেন, তাহ হইলে এই মানমন্দিরের চেহারা ফিরিয়া যাইত। intellect এর ব্যাপারে সাধারণলোকের মন কখনই আকৃষ্ট হয় না। তাই আমাদের পূৰ্ব্বপুরুষগণ গ্রহণ, তিথি, নক্ষত্র, ঋতুপরিবর্তন প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনার সঙ্গে ধৰ্ম্মের স্বত্র গাথিয়া দিয়া সেগুলির দিকে সাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণের অমোঘ উপায় বিধান করিয়া গিয়াছেন। আমরা অদূরদর্শী হইয়া পড়িয়াছি, তাই আধুনিক সভ্যতার প্রসাদে সেগুলিকে কুসংস্কার বলিয়া উড়াইয়া দিই। * দেবদর্শনে হৃদয় বিমল আনন্দ, বিস্ময় ও ভক্তিরসে আপ্লুত হয় নাই। এখানকার পনর-আনা দেববিগ্রহই পাষাণময় শিবলিঙ্গ । বিশ্বেশ্বর, কেদারেশ্বর, নকুল্লেশ্বর, তিলভাণ্ডেশ্বর, পাতালেশ্বর, পুষ্পদন্তেশ্বর, সকলেরই সেই এক ধাচা ; গঠনে কোন কারিকুরীর চিহ্ল নাই, মন্দিরগুলির ভিতরেও কোন কারুকার্য বা গঠনপরিপাটা নাই, সহজ মানবমনে কোন বিরাটুভাবের উদ্রেক করিবার শক্তি এই পাষাণখণ্ডের ও পাণখুপের নাই। মানবজাতির ইতিহাসে এমন একদিন ছিল, যখন “ੇ মুড়ি-শিলা ভক্তিপথে নেয়ে হইলেই মানব Pure