পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$8 रील्लंडfनं । ৬ষ্ঠ বর্ধ, জ্যৈষ্ঠ। জল আদৌ তিনি ব্যবহার করিতেন না। সেজন্য কলিকাতাসহরের ভিতর, বিস্তর লোকজন, বিশেষত র্তাহার আশ্রিত ব্ৰহ্মচারিণী বিধবারদল লইয়া বেশীদিন বাস করা সম্ভব হয় নাই । কয়লাঘাটার গঙ্গাতীরে একটি বৃহৎ বাট তাহার জন্ত নির্দিষ্ট হইয়ূছিল। আমি পুটিয়া অঞ্চলের কয়জন আত্মীয় ছাত্রসহ মাঝে মাঝে র্তাহাকে প্রণাম করিতে যাইতাম । নালাশ্রেণীর লোক সৰ্ব্বদা তাহার প্রবাসগৃহ সরগরম রাখিত । ইহার ভিতর দানপ্রার্থীর সংখ্যাই বিস্তর, বলা বাহুল্য। র্তাহার অধিকাংশ দান কোথাও সহজে সাধারণের গোচর হইতে পাইত না, কিন্তু কলিকাতায় দেশহিতকর কার্য্যের নামে দানগ্রহণের এক অপূৰ্ব্ব কৌশল তাহাকে বিস্মিত করিয়াছিল। তিনি যদি দান করিতেন পাচঁশত খবরের কাগজে উঠিত পনরশূত এবং যদি প্রতিশ্রত হইতেন হাজার, তিনগুণের কথা নিনাদিত হইত। দানপ্রার্থীর শেষে খবরের কাগজে প্রকাশিত অর্থটারই দাবি করিয়া বসিতেন। যে-কোন শ্রেণীর লোক কোন.প্রার্থনা লইয়া কয়লাঘাটায় তাহার দ্বারস্থ হইত, তাহাকে রিক্তহস্তে ফিরিতে হইত না । কেহ গাড়িতে গেলে যাতায়াতের খরচ পর্য্যস্ত পাইত। গঙ্গাতীরে তিনি কাহার ও কোন উপহার লইতে অসমর্থ, ইহ, সম্ভবত না জানিয়া কোন কোন পদস্থ ব্যক্তি উপঢৌকন পাঠাইয় র্তাহাকে বিলক্ষণ বিপদে ফেলিতেন । এদিকে তাহা লইলে গঙ্গাতীরে দানগ্রহণের প্রত্যবায়ভাগিনী হইতে হয়, অহুদিকে তাহার কোন কার্যে কেহ মনে ক্লেশ না পান,ইহাও দেখিতে হইবে। শেষে আমলাদের কেহ সে-সব দ্রব্যসম্ভার গ্রহণ করিয়া তৎক্ষণাৎ দুঃখীলোকদের মধ্যে বিতরণ করিয়া দিতেন, উপহারবাহক ও বাহিকার দল রাজসংসার হইতে প্রচুর পুরস্কার লাভ করিয়া ফিরিয়া যাইত। অবশু, ভিতরের কথা তাহারা বুঝিয়ান যাইত, এমন নহে। কল্লিকাতায় তাহার নিজের স্বাস্থ্য মন্দ ছিল না । কিন্তু গঙ্গাসাগরে মানের পর এবং তদুপলক্ষে নিয়মাতিরিক্ত কৃচ্ছসাধন জন্ত তিনি অসুস্থ হইয়া পড়েন। সেই ষে তাহার স্বাস্থ্য ভাঙিয়া গেল, আর কুখন তাহ সম্পূর্ণ সারিল না। মুরশীদাবাদের বিখ্যাত কবিরাজ গঙ্গাধর সেন মহাশয়, কয়মাস ধরিয়া তাহার চিকিৎসা করিয়াছিলেন । আমরা সে-বার গ্রীষ্মাবকাশের সময় গিয়া দেখি, কবিরাজপ্রবর বেশ আসর জম্‌কাইয়া বসিয়াছেন, রাজবাটীতে ঔষধপ্রস্তুতের ধুম পড়িয়া গিয়াছে। লোকে তার হাত যশ ছিল না। পাণ্ডিত্যে তিনি দিগ্বিজয়ী ছিলেন, সৰ্ব্বশাস্ত্রে তাহার দৃষ্টি ছিল। পড়াশুনার অভ্যাস প্রবীণবয়সেও যেরূপ ছিল, মনে করিলে আশ্চৰ্য্য হইতে হয়। তাহার স্পষ্টবাদিত এবং চরিত্রের স্বাধীনতা দেশের সর্বত্র পরিচিত ছিল । অল্পদিনের ভিতর পুটিয়াতেও সে পরিচয়ের অভাব হয় নাই। রাজবাটীর কোন কোন সরিকের রাজারা ভদ্রলোককে “আপনি” বলিতে জানিতেন না । কবিরাজমহাশয় দেখা করিতে গিয়াছেন। তিনি দেশবিখ্যাত চিকিৎসক এবং লোক সোজা নন। তাহকে "তুমি” বলা যায় না, কিন্তু “আপনি”ই বা বলা হয় কিরূপে ? রাজা কৌশলে.আলাপ করিতে লাগিলেন, কৰ্ত্তা" উহ্য রাপিষ্ঠ। কেবল কৰ্ম্ম ও ক্রিয়ার এদ্বিবন্ধন নমুনা এইরূপ --“কবিরাজের কবে আসা হইয়াছে ?”—“কোথায় বাসাগওয়া বলিত, তমন