পাতা:বঙ্গভাষা ও সাহিত্য - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই অমূল্য পুস্তকাধারটি নগেন্দ্রবাবুর সম্পূর্ণরূপে অধিকৃত থাকা আমরা বাঞ্ছনীয় মনে করি না। স্বৰ্গীয় রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র এবং রজনীকান্ত গুপ্ত প্ৰভৃতি পণ্ডিতগণের লাইব্রেরীর পরিণাম স্মরণ করিয়া আমাদের ভীতি জন্মিয়াছে। এই পুথিগুলির অতি নগণ্য অংশও এখন পৰ্য্যন্ত প্ৰকাশিত হয় নাই। বাঙ্গালাভাষার এই দুস্তপ্ৰাপ্য প্ৰাচীন নিদর্শন গুলি গভর্ণমেণ্টের লাইব্রেরী কিংবা কোন অর্থশালী সাধারণ পাঠাগারে সুরক্ষিত থাকা উচিত। অন্তত: এমন কোন বিশিষ্ট ধনী ব্যক্তির হস্তগত থাকিলেও চলিতে পারে, যে স্থল হইতে ইহাদের নিলামে বিক্রয় হইবার আশঙ্কা অল্প। এই পুখিগুলির একখানি নষ্ট হইলে তৎস্থল পূরণ হওয়া দুষ্কর। নগেন্দ্রবাবুকে ইহাদের অধিকারের লোভ ছাড়িয়া দিতে প্ৰবৰ্ত্তিত করা বাঞ্ছনীয়। আমরা সাহিত্যের উন্নতিকল্পে এই পুথিগুলিকে ধ্বংস হইতে রক্ষা করিবার উপায় নিৰ্দ্ধারণ করিয়া যে মন্তব্য প্ৰকাশ করিলাম, আশা করি সুহৃদ্ধর তাহাতে বিরক্ত হইবেন না । এই পুস্তকগুলি হইতে আমি বৰ্ত্তমান সংস্করণে বিশেষ সাহায্য লাভ করিয়াছি, তাহা বলা নিম্প্রয়োজন । যে সকল পুথি, আমার এই গ্রন্থের প্রথম সংস্করণ প্ৰকাশিত হওয়ার পরে আবিষ্কৃত হইয়াছে, বর্তমান সংস্করণে আমি তাহাদের অধিকাংশের নৃত্যুনাধিক বিবরণ প্রদান করিয়াছি। গ্রন্থভাগে অনুল্লিখিত পুথিগুলির একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণী পুস্তকশেষে প্রদত্ত হইল। এরূপ গ্রন্থে সমস্ত পুথিরই উল্লেখ তাত আবশ্যক নহে এজন্য সামান্য সংখ্যক পুথির উল্লেখ করি নাই। এবার এই পুস্তকখানি পূর্ব সংস্করণের আয়তনের অনুন। একচতুর্থাংশ বাড়িয়া গেল। একটি বিস্তৃত বর্ণনানুযায়ী অনুক্ৰমণিকা সৰ্বশেষে প্রদত্ত হইল। এই অনুক্ৰমণিকাটি এবং গ্রন্থের পূর্বভাগে সন্নিবিষ্ট সুচিপত্র আমার প্রিয় বন্ধু সুলেখক শ্ৰীযুক্ত মন্মথনাথ সেন, বি. এ. মহাশয় প্ৰস্তুত করিয়া আমার চিরকৃতজ্ঞতাভাজন হইয়াছেন। অধ্যায়াংশগুলি পুস্তকের পূর্ববত্তী একটি ক্ষুদ্র সুচিকা দ্বারা নির্দিষ্ট হইল। এই সংশোধন, পরিবাৰ্ত্তন এবং পরিবদ্ধনাদি ব্যাপারে আমার যেরূপ গুরুতর পরিশ্রম করিতে হইয়াছিল, তাহা আমার স্বাস্থ্যের পক্ষে নিতান্ত প্ৰকাশইয়াছে। তথাপি প্ৰাণান্ত পরিশ্রমে তাহা করিয়াছি। কখনও কখনও কিছু লিখিয়া এত আঁৎ-২১. পড়িয়াছি যে ১০/১৫ দিন শয্যা হইতে উঠিতে সমর্থ W ii হই নাই। ফরিদপুর থাকা কালে আমি নিজ হাতে লিখিতে একান্ত অক্ষম ছিলাম। আমি বলিয়া যাইতাম, শ্ৰীযুক্ত উপেন্দ্ৰচন্দ্র মজুমদার নামক জনৈক বঙ্গভাষানুরাগী উৎসাহী যুবক স্নেহপরবশ হইয়া তাহা লিখিয়া দিতেন। তঁহার নিকট আমি এজন্য একান্ত ঋণী । আমার এরূপ সঙ্গতি নাই যে প্রািফ ইত্যাদি সংশোধনের ভাল বন্দোবন্ত করিতে পারি, সুতরাং প্রেস হইতেই পূজনীয় শ্ৰীযুক্ত কালীনারায়ণ সান্যাল মহাশয় তাহার বন্দোবস্ত করিয়া দিয়াছিলেন,