পাতা:বঙ্গভাষা ও সাহিত্য - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গৌড়ীয় যুগ ܠ ܬܠ বসাইবা।” “আমি তোমার দেশে ভাত কোথায় পাইব ?” “তোমার জন্য দিন রাত কৃষাণের হল বাহিয়া নানারূপ ধান জন্মাইবে।” কিন্তু বালিকা বধূব এই গুলিই চূড়ান্ত প্রশ্ন নহে। যে কথাটি বলিতে তাহার বুক দুরু দুরু কঁাপিয়া উঠিতেছে, চোখে জল উথলিয়া উঠিতেছে সেই কথাটি সে কম্পিত ওষ্ঠ্যাধরে, গদগদকণ্ঠে শেষে বলিয়া ফেলিল। “তোমার দেশে যাব আমি মা বলিব কারে " হৃদয়ের নিভৃত স্থানের ব্যথাটি ব্যক্ত করিয়া সে কঁাদিয়া ফেলিল। সূৰ্য্য তখন আদরে তাহার গলা জড়াইয়া ধরিয়া বলিলেন, “আমার যে মা আছে মা বলিবে তারে।”-এই বাৎসল্য মধুর চিত্রের পরিণতি বঙ্গদেশের মৰ্ম্মস্পৰ্শী পরবত্তী আগমনী গানে। ঈষ্ট ঈ ( 8 ) পদাবলী শাখা । Z ক। পদাবলী সাহিত্য । খ । চণ্ডীদাস এবং রামী । গ। বিদ্যাপতি ! ক । পদাবলী সাহিত্য । বঙ্গদেশে প্রেমের অবতার হইয়াছিল, বাঙ্গালী কবি প্ৰেম-বৰ্ণনায় অদ্বিতীয় । বৈষ্ণব কবিগণ প্রেমের যে নিষ্কাম মাধুৰ্য্য বর্ণনা করিয়াছেন, তাহা প্ৰাচীন বঙ্গসাহিত্যে পবিত্রতার সুধাধারা প্ৰবাহিত করিয়া দিয়াছে। পদাবলী সাহিত্য প্রেমের রাজ্য, নয়নজলের রাজ্য। পূৰ্ব্বারাগ, উক্তি, প্ৰত্যুক্তি, প্রথম মিলন, সস্তোগ, অভিসার, কারণমান, নিৰ্হেতু মান, প্রেম-বৈচিত্র, দানলীলা, নৌকাবিলাস, বাসন্তী লীলা, বিরহ, পুনর্মিলন, প্রেমের এই বহু বিভাগের পর্য্যায়ে পৰ্য্যায়ে কেবল কোমল অশ্রুর উৎস ; ইহাতে স্বার্থের আহুতি, অধিকারের বিলোপ ; বাঞ্ছিতের দেহ স্পর্শ করিতে, দেখিয়া চক্ষু জুড়াইতে, তজ্জাত অপূর্ব পরিমল আত্মাণ করিতে, মধুগন্ধে অন্ধ আলির ন্যায় স্বৰ্গীয় প্রেমিক কবিগণ কঁাদিয়া বেড়াইয়াছিলেন, পদাবলী সাহিত্য তঁহাদের অশ্রুর ইতিহাস। বৈষ্ণব পদাবলীর কেন্দ্ৰভূত এক স্বৰ্গীয় উপাদান আছে, উহা মানবীয় প্ৰেমগীত গাহিতে গাহিতে যেন সহসা সুর চড়াইয়া কি এক অজ্ঞাত সুন্দর রাগিণী ধরিয়াছে, তাহা ভক্ত ও সাধকের কৰ্ণে পৌছিতে সমর্থ হইয়াছে। বৈষ্ণব কবিতা নদীর মোহানার সহিত তুলিত হইতে পারে, এই গীতি কুলু কুলু স্বরে মানব জগতের সুখ দুঃখের কথা পদাবলী সাহিত্য। यांख्रिकङ् ।