পাতা:বঙ্গভাষা ও সাহিত্য - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গৌড়ীয় যুগ Sକଟ বুৰাইতে চাহিতেছেন, তখনও বলিতেছেন-আর জন্মে যেন তুমি আমার মত হও, নতুবা এ দুঃখ বুঝিতে পরিবে না, মরিয়া যেন আমি শ্ৰীনন্দনন্দন হই,-তোমাকে ভালবাসিয়া যেন ছাড়িয়া যাই, তখন বুঝিবে “পীরিত কেমন জ্বালা”। অন্য কোন কষ্ট দুঃখের কথা বলিলে তাহার প্রাণের ব্যথা বুঝাইতে পারিতেন না, তাহার দুঃখ যেরূপ অপাের, কানু প্রেমের আনন্দও সেইরূপ অপাের। “দুখির সহিতে, জলেরে যাইতে, সেকথা কহিবার নয়। যমুনার জল, করে ঝলমল, তাহে কি পরাণ স্বয়”_৮ চণ্ডীদাসের অনেক কথাই মনের ভিতর থাকে,-অতি অল্প কথায় তিনি ভাব রাজ্যের क्षेक्ऊि फ्रिग्रां যান-সমস্ত কথা বলেন না, পাঠককে তাহা পূরণ করিতে হয়। যখন সখীর সহিত রাধা জল আনিতে যান, তখন আনন্দে শরীর এলাইয়া পড়ে “সে কথা কহিবার নয়"। যমুনার জল কেন ঝলমল করে ?--যমুনার কূলে নীপ তরুর ডালে শিখি পুচ্ছ মাথায় কৃষ্ণ বসিয়া থাকেন, তাহার প্ৰতিবিম্ব পড়াতে জল ঝলমল করে, রাই উৰ্দ্ধদিকে লজ্জায় চাহিতে পারেন না-তিনি সেই কথা বলিতেছেন। পরবর্তী অনেক কবি তাহা বিশদ করিয়া বলিয়াছেন ; একজন লিখিয়াছেন “ঢেউ দিও না জলে বলে কিশোরী, দরশনে দাগ দিলে হবে পাতকী”। কেন উদ্ধৃদিকে চাহিয়া gRsCKF Gwifwu পারেন না, সে কথা আর এক কবি লিখিয়াছেন :-"দাদা বলাই সঙ্গে ছিল" সুতরাং পরবর্তী সমজুদার কবির চণ্ডীদাসের স্বল্পাক্ষর কবিতার ব্যাখ্যা করিয়াছেন, তিনি শুধু “সে কথা বলিবাের নয়" এবং

  • যমুনার জল, করে ঝলমল” লিখিয়া ছাড়িয়া দিয়াছেন।

চণ্ডীদাসের অনেক পদে যে সর্বোচ্চ প্রেমের ইঙ্গিত আছে, তাহাতে পার্থিব প্রেম অপাৰ্থিবের সঙ্গে মিশিয়া গিয়াছে, তাহার বিস্তুত বিবৃত্তি দেওয়া এখানে অসম্ভব । তিনি প্ৰেম সম্বন্ধে একটি সার কথা বলিয়াছেন- “চণ্ডীদাস কহে, শুন বিনোদিনী, পীরিতি না কহে কথা। পীরিতি লাগিয়া পরাণ ছাড়িলে औब्रिठि भिलएम एठ५ ।” যখন জাতীয় কোন বহু কৃচ্ছপূর্ণ তপস্যার ফলে ভাব রাজ্যের রাজা অবতীর্ণ হইবেন, তাহার পূর্বেই তাহার আগমনী চারিদিক হইতে ধ্বনিত হয়। রাজা রাজ্য হইতে স্বতন্ত্র নহেন, বাজ্যের ভাব রাশি তঁহার মধ্যে স্বতই প্ৰকাশ পায়। বুদ্ধদেবের পূর্বে উপনিষদে ও নানা দর্শনে যে সকল কথা ফুটিয়া উঠিয়াছিল, বুদ্ধ সেই সকল ভাবের প্রতীক স্বরূপ অবতীর্ণ হইয়াছিলেন। ভল্টেয়ার ও রুশো যে সকল মত প্রচার করিয়াছিলেন, তাহারই প্ৰতীক স্বরূপ নেপোলিয়নের আবির্ভাব। চৈতন্তের আবির্ভাবের পূর্বেই জয়দেব মেঘদৰ্শনে রাধিকার আনন্দ ও কৃষ্ণক্রম বর্ণনা করিয়াছিলেন, মাধবেন্দ্রপুরী মেঘদৰ্শনে মূচ্ছিত হইয়া পড়িতেন ; কিন্তু চণ্ডীদাসের মধ্যে মহাপ্রভুর নীলার আভাষ সৰ্ব্বাপেক্ষা বেশী পাওয়া যায়—ইহা তঁহার আগমনী গান ; যেরূপ প্রভাত হইবার পূর্বে উষাসুন্দরী সোণার শাড়ী পরিয়া দিথলয়ে দেখা দেন এবং সুৰ্য্যোদয়ের আভাষ ইঙ্গিতে ব্যক্ত করেন, চণ্ডীদাসের