পাতা:বঙ্গভাষা ও সাহিত্য - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত-শাখা ՀՀ Գ লাগিবে বলিয়া, ফিরয় কতই পাকে। আমার অঙ্গের বাতাস যেদিকে সে দিন সে মুখে থাকে। মনের কাকুতি বেকত। করিতে কত না সন্ধান জানে। পায়ের সেবক রায়শেপার কিছু জানে অনুমানে ৷” এই অপূৰ্ব্ব ব্রতের এই অপূৰ্ব্ব কথা। পঞ্চদশ শতাব্দীতে বঙ্গদেশে প্রেম ও সৌন্দৰ্য্যপূজার পূর্ণ१क्षेत्र* *ष्ठाञौद्रं દ્વારા দেখা দিয়াছিল। বিরল-দ্রুম নগর-রাজিতে বসন্তের সৌষ্ঠব এখন ceभ-नांश्डिा । বিকাশ পায় না। এখন বসন্ত বনে আসে-কোকিলের জন্য, রক্তকিশলয়ের জন্য, বনকুরঙ্গ ও কুরঙ্গীর জন্য ; মনুষ্য-সমাজে এখন বিজ্ঞানের নীরস শীত-বায়ু কবিত্বোব ফুল-পল্লব সংহার করিয়া সত্যের অস্থিপঞ্জির দেখাইতেছে ; এখনকার প্রেমের কবিতা পঞ্চদশ-শতাব্দীর স্মৃতিমাত্ৰে পৰ্য্যবসিত ; সেরূপ মধুব কথা এখন আর লিখিত হইবে না,-সেই স্বপ্নময়ী চিত্ৰলেখা বিজ্ঞানের শীতল নীহারিকা জড়িত হইয়া এখন চির-অস্পষ্ট হইয়া গিয়াছে। এই পুষ্পতরুপল্লব গুচ্ছমণ্ডিত পৃথিবী পূর্বে ও যেরূপ, এখনও অবশ্য সেইরূপ সুন্দর আছে -কিন্তু আমরা ইহাকে সুন্দর দেখিতে ভুলিয়া গিয়াছি। বৈষ্ণব পদাবলী বুঝিতে হইলে বঙ্গের পল্পী গীতিকাগুলি ভাল কবিয়া পড়া উচিত। বাঙ্গালার পল্লীতে পল্লীতে প্রেমের যে সর্বস্বপণ তপস্যা চলিতেছিল, তাহাতে বাঙ্গালার নর-নারী প্ৰেমেব এক অপূর্ব আদর্শ আয়ত্ব করিতে সমর্থ হইয়াছিল। এই পল্লী-গীতিকাগুলি স্পষ্ট করিয়া দেখাইবে, নর-নারীর ইন্দ্ৰিয়াতীত,-প্ৰাণ দেওয়া প্ৰেম কিরূপে ধীরে ধীরে বৈষ্ণণ স্বর্গের উপাদান যোগাইতেছিল। চণ্ডীদাসের প্রসিদ্ধ পদ-“এ ঘোর যামিনীমেঘের ঘটা, কেমনে আইলা বাটে” এর সঙ্গে গীতিকার “ধোপার পাট” মিলাইয়া পড়ুন, দেখিবেন পল্লীগীতিকাটি যেন এই গানের একটি ভাস্য। প্রেমের জন্য বঙ্গের নর-নারী যে কি উৎকট তপস্যা করিয়াছিল, তাহ পল্লী-গীতিকায় সোনার অক্ষরে লেখা হইয়াছে ; আর এক ধাপ উচুতে উঠিয়া বৈষ্ণবেরা রাই কানুর প্ৰেম আয়ত্ব করিয়াছিলেন, বৈষ্ণব ধৰ্ম্ম যুগব্যাপী জাতীয় তপস্যার ফল। চণ্ডীদাস বলিয়াছিলেন ; “ব্ৰহ্মাণ্ড ব্যাপিয়া আছয়ে যে জন কেহ না চিনয়ে তারে, প্রেমের আরতি যোজন জানিয়ে, সেই সে বুঝিতে পারে।” তিনি ভগবৎ প্ৰেম আস্বাদন করার পক্ষে নর-নারীর প্রেম অপরিহাৰ্য্য মনে করিয়াছিলেন, আর এক ধাপ উপরে উঠিয়া চৈতন্যদেব বলিলেন “প্ৰেম প্ৰেম করে লোকে প্ৰেম জানে কিবা, প্রেম করা কি হয়। রমণীর সেবা, অভেদ পুরুষ নারী যখন জানিবে, তখন প্রেমের তত্ত্ব হৃদয়ে ফুটিবে।” তিনি দিন রাত্রি চণ্ডীসের গান গাহিতেন, কিন্তু বুঝিয়াছিলেন উহা যে রাজ্যের কথা সে উৰ্দ্ধরাজ্য সাধারণের জন্য নহে। এইজন্যই তিনি নর-নারীর প্ৰেম দ্বারা ভগবৎ প্ৰেম পাওয়া যায়-একথা সামাজিক লোকের পক্ষে নিষেধ করিয়াছিলেন এবং “বহিরঙ্গ সঙ্গে নাম ংকীৰ্ত্তনের” নিরাপদ পথ প্ৰদৰ্শন প্রচার করিয়া ও অন্তরঙ্গ সহ” রস আস্বাদন করিতেন। বৈষ্ণবপদাবলী আনন্দলোকের কথা-সেই প্ৰেমে ষে ক্ৰোধ তাহার উপাদান আনন্দ-তােহাতে Wr