পাতা:বঙ্গভাষা ও সাহিত্য - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লৌকিক-ধৰ্ম্মশাখা \OSS হইল ফাপর।” এই সময় দেবী কৃপা করিয়া বলিলেন, “আমি চণ্ডী, তোমাকে বর দিতে আসিয়াছি।” এই স্বভাব-নিৰ্ভীক সত্যবাদী ব্যাধ স্বীয় সামাজিক হীনতা ও অপরাধ স্মরণ করিয়া চিরবিনীত, সে চণ্ডীকে বলিতেছে,-“হিংসামতি ব্যাধ আমি অতি নীচ জাতি। কি কারণে মাের গৃহে আসিবে পাৰ্ব্বতী।” তখন দেবী স্বীয় দশভূজামূৰ্ত্তি দেখাইয়া সন্দেহ ভঞ্জন করিলেন। সেই মূৰ্ত্তির বর্ণনাটি এস্থলে বড় शून्द्र शङ्खै८छ् । চণ্ডীর অপূর্ব মূৰ্ত্তি দেখিয়া ব্যাধ ও ফুল্লারা কঁাদিয়া পায় পড়িল। চণ্ডী কালকেতুকে একটি অঙ্গুরী উপহার দিলেন, কিন্তু-“লাইতে নিষেধ করে ফুল্পর সুন্দরী। এক অঙ্গুরীতে প্ৰভু হবে কোন কাম। সারিতে নারিবে প্ৰভু হইলে দুনাম”। সুতরাং চণ্ডীদেবীকে আরও সাত ঘড়া ধন দিতে হইল। এই সাত ঘড়া ধন ফুল্লারা ও কালকেতু সমস্ত বহিয়া লাইতে পারিল না ; তখন কালকেতু তাহার অভ্যস্ত সরলতা সহকারে একটি অনুরোধ করিল,- “এক ঘড়া ধন মা। আপনি কঁাখে কর।” ক্ষীণাঙ্গী দেবী এক ঘড়া ধন নিজে কঁাখে তুলিয়া লইলেন ; কিন্তু কালকেতু মুখ, দরিদ্র-তােহর মনে যে সমস্ত ভাব খেলা করিয়াছে, কবি তাহার কোনটিই গোপন করেন নাই—তাহার সরলতা, বর্বরতা, মুর্থতা এবং চরিত্ৰবল এ সমস্তই ব্যাধ-নায়কেরই উপযোগী, অন্য কোন মানদণ্ডে তাহার তুলনা করিলে অন্যায় হইবে । যখন চণ্ডী ধনঘাড়া লইয়া ধীরে ধীরে চলিতেছেন তখন-“মনে মনে মহাবীর করেন যুকতি । ধন ঘড়ী লৈয়ে পাছে পলায় পাৰ্বতী।” এই সকল বর্ণনায় এরূপ একটি সুন্দর আকৃত্রিমতার বিকাশ আছে, যাহা প্রথম শ্রেণীর কবি ভিন্ন অন্য কেহ দেখাইতে পারে না। মুরারিশীলের নিকট অঙ্গুরী ভাঙ্গাইবার স্থলটি স্থানান্তরে উদ্ধৃত হইয়াছে। একদিকে প্ৰবঞ্চক মুরারির কপট-ভদ্রতা সূচক প্রশ্ন, অপরদিকে কালকেতুর সরল বন্ধুভাবের উত্তর ও নিৰ্ভীক সত্যপ্রিয়তা তাহার বর্বরতাকেও যেন প্রকৃত সুনীতির বর্ণে উজ্জ্বল করিয়াছে। ইহার পর কালকেতু চণ্ডীর আদেশে গুজরাটের বন কাটাইয়া তথায় রাজধানী স্থাপন করিল। কিন্তু পরবত্তী অংশে মুকুন্দকবি তাহার চরিত্রের দৃঢ়তা রক্ষা করিতে পারেন নাই। মুকুন্দের কালকেতু ব্যাধ, তাহার কালকেতু রাজা হইতে

  • (? मtल ।

भूदून 8 भक्ष्य। শ্ৰেষ্ঠ। তঁহার কালকেতু কলিঙ্গাধিপতির সহিত যুদ্ধে হারিয়া, স্ত্রীর অনুরোধে শয়নপ্রকোষ্ঠে লুকাইয়াছিল—এ দৃশ্য দেখিয়া দুঃখিত হইয়াছি। কবি বাঙ্গালী বীরকে বোধ হয় যথাদৃষ্ট তথা অঙ্কন করিয়াছেন, কিন্তু মাধবাচাৰ্য্য কালকেতুর শেষ জীবন বেশ প্রশংসনীয় ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন ; ফুল্লারা যখন স্বামীকে যুদ্ধ করিতে নিষেধ করিতেছে, তখন কালকেতু বলিতেছে—“শুনিয়া যে বীরবর, কোপে কঁপে থর খর, শুন রাম আমার উত্তর। করে লৈয়া শার গাওঁী, পূজিব মণ্ডলচণ্ডী বলি দিব কলিঙ্গ ঈশ্বর।