পাতা:বঙ্গরহস্য - ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সেই দিন অবধি বেচুবাৰু কলিকাতার মধ্যে বেচারাম সিংহ নামে পরিচিত্ত হটলেন। জাতি কায়স্থ, সন্ত্রমে জমীদার। এইরূপ লোক কলিকাতার মধ্যে কত গুলি আছেন, তাহার তালিকা আমাদের নিকটে নাই, কিন্তু নগরবাসী ধনবানের নিকটে তাদৃশ লোকের খ্যাতি-প্রতিপত্তি উজ্জ্বল হইয়া থাকে। সেইরূপ থ্যাতি-প্রতিপত্তি অর্জন করিয়া বাবু বেচারাম সিংহ বড়দলের ব্যবহারের অনুকরণ করতে লাগিলেন । গাড়ী-ঘোড়া র খা, হোটেলের খাতা রাখা, সহরতলীতে বাগান রাখা, রকমারি জায়গায় মেয়েমানুষ রাখা, হস্তায় হস্তায় থিয়েটার দেখা । এ ং হ্যািপ্তায় হস্তায় বন্ধুবান্ধ গণকে ভোগ নে নিমন্ত্রণ করা বড়লোকের কাৰ্য্য। বাবু বেচারাম সিংহ সেই সকল কাৰ্য্য শিখিলেন। সহরে ঢ়ি ঢ়ি হইয়া গেল, মেদিনীপুরের জমীদার বেচাল্লাম সিংহ যথার্থই একজন বড়লোক। যাহারা ভিতরের কিছু কিছু খবর রাখিত, তাঙ্গারা বলাবলি করিত—“কাপ্তেন বাবু।” যথার্থই কাপ্তেন বাবু। বেচারামের পিতামহ রামচরণ সিকদার সত্য সত্য। জমীদার ছিলেন না ; জমীদারগণের নিকট চাইতে মৌরাসি পাট্টা লইয়া কয়েক হাজার বিঘা জমীতে প্ৰজা বসাইয়া চাষ-আবাদ করাইতেন । তঁহার উপাধি ছিল পাট্রাদার ; ভাল করিয়া বুঝাইতে হইলে আমরা বলিব, চকুদার । সে পরিচয় পরে হইবে, এখন কায়স্থ জমীদার সাজিয়া বেচুবাবু কিরূপ খেলা খেলাইলেন, তাহার কিঞ্চিৎ পরিচয় দেওয়া আবশ্যক। বড় বড় সাহেব-দরজীর দোকান হইতে সাহেবী, নবাবী ও বাবুয়ানার পোষাক আনাইয়া এক ७कनि এক এক সাজে। তিনি সহরে বাহির হন ; সহরে অনেক স্থানে অনেক রকম সভা হয়, সেই সকল সভায় নাম লিখাইয়া পারিষদবর্গ সহ-মেম্বাররূপে উপনীত হন। বক্ততা করিবার ক্ষমতা ছিল না, বক্ততা করিতে পারেন না, কিন্তু এক একটা । প্ৰস্তাবে সভার লোকের অনুরোধে সেকেণ্ড করিতে হয়। সভার প্রস্তাবে সেকেণ্ড। করা কিরূপ, তাহা বেচারামের জানা ছিল না। একদিন একটা ক্ৰন্দনের সভায় যোগেশ্বর বাবু একটা প্রস্তাব করিবেন, বেচারাম বাৰু সেকেণ্ড কহিবেন, এইরূপ । স্থির হয়। যোগেশ্বর বাবু প্ৰস্তাব করিলেন, “একটী পাথরের মূৰ্ত্তি গড়াইয়া মৃত ব্যক্তির স্মরণ-চিহ্ন রাখিতে হইবে, খরচের জন্য চাঁদা করিতে হইবে, সভার সহানুভূতি জানাইয়া মৃত ব্যক্তির পরিবারগণের নিকটে সত্ত্বনাসূচক পত্র লিখিতে হইবে।” । S i SDS R