পাতা:বঙ্গরহস্য - ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম তরঙ্গ 1 । Rà আজকাল সে প্রথার পরিবর্তে বরের ছদ্মবেশে পান্ধী দেখিতে যান, বরেরাই । কন্যাগণকে পরীক্ষা করেন বরেরাই সম্বন্ধ-সম্বন্ধে নিৰ্ব্বন্ধ প্রকাশ করেন, কেবল । দেনা-পাওনার কথাটী কৰ্ত্তাদের উপর অথবা গৃহিণীদের উপর নির্ভর করিয়া থাকে। একটী পাত্রের পাত্রী-দর্শনের একটা দৃষ্টান্ত এই স্থলে প্ৰকাশিত হইল। মফস্বলের একজন জমীদারের কন্যার বিবাহ, নিৰ্বাচিত পাত্ৰটীও জমীদারের পুত্র। পুত্র স্বয়ং ছদ্মবেশে কন্যা দেখিতে গিয়াছিলেন। দেখা-শুনা শেষ হইলে কন্যার পিতা সেই ছদ্মবেশী পাত্রকে সঙ্গে লইয়া উদ্যানভ্রমণে ৰান। সেই ছদ্মবেশী বাবু যে স্বয়ং বরপাত্ৰ, কন্যার পিতা তাহা বুঝিয়াছিলেন। পাত্ৰটী দেখিতে রূপবান, বয়স অল্প, সম্ভবমত বিদ্যা পরীক্ষাও করিয়াছেন, প্রায় সর্বাংশেই ভাল। ধন্যবানের পুত্র সচরাচর প্রায়ই সৌধীন হইয়া থাকেন, এই পাত্ৰটীও সৌসীন। তাহার হন্তে একগাছি সৌৰীন ধরণের ছড়ি ছিল। উষ্ম নম্রমণের সময় সেই ছড়ি দ্বারা তিনি পথের উভয় পাশ্বের সযত্ন-পালিত বৃক্ষ লতার নব মব পল্লব ভাঙ্গিয়া ভাঙ্গিয়া চলিতেছিলেন। জমীদার মহাশয়ের সেই দিকে দৃষ্টি ছিল। মধ্যে মধ্যে ভাবী জামাতার সেই কাৰ্য্য তিনি কটাক্ষে দর্শন করিতেছিলেন । উদ্যান হইতে ফিরিয়া আসিয়া যথাসময়ে পাত্ৰটীকে তিনি বিদায় করিয়া দিলেন। মনোমধ্যে একটী চিন্তার উদয় হইল। জমীদার মহাশয়টীি ভাবুক লোক ; প্ৰকৃতি দর্শনে তঁহার অন্তরে নৰ নৰ ভাবের উদয় হইত। র্যাহারা স্বভাবকবি না, তঁ, হাদের অন্তর ঐক্লপ গুণে অলঙ্কত। যাহাকে তিনি জামাতা করবেন ইচ্ছা করিয়াছিলেন, প্ৰকৃতির প্রতি তঁহার অনাদর দর্শন করিয়া অন্তরে বিরাগ জন্মিল। ষে ব্যক্তি প্ৰকৃতির শোভা নষ্ট করিতে পারে, যত্ন-ললিত তরুলতার কচি কচি পাতা গুলি ৰে ব্যক্তি ছিড়িয়া কেলিয়া দিল, কোন ক্রমেই তাহাকে জামাতা করা হইবে না, ইঙ্গুই তখন তঁহার সঙ্কল্প হইল। যাহার অন্তরে দয়া-মমতা আছে, প্ৰকৃতির শোভাদর্শনে বাহার অন্তরে প্রমোদের সঞ্চার হয়, সে কখন তাদৃশ নিষ্ঠৱ কাৰ্য্য করতে পারে না । উদ্যানবৰ্ণনে, উপবনবৰ্ণন, পৃথিবীর কবিগণ নবকিসলয়ের গুণকীৰ্ত্তন , করেন, নবৰিক পলায় দর্শন করিয়া ভাবুকের মনে • আনন্দোদয় হওয়া স্বাভাৰিক । , যাহারা ভাবুক নহে, তাহদের নয়নও মনোহর দৃশ্য দর্শনে পরিতৃপ্ত হয়। এই