পাতা:বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (কায়স্থ কাণ্ড, প্রথমাংশ, রাজন্য কাণ্ড).djvu/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস [ ১ম অধ্যায়। بون যোগ্য ছিল, এই সমুদয় ভূখও কর্ণসুবর্ণরাজ্যের ভস্তর্গত ছিল।" আবার স্ববিখ্যাত প্রত্নতত্ববিৎ কনিংহাম মনে করেন যে, সুবর্ণরেখা নদীপ্রবাহের নিকট ংিহভূম ও বরাহভূম জেলার মধ্যে কোন স্থানে কর্ণসুবর্ণের রাজধানী ছিল।” তৎপরে সু করিতে চেষ্টা করেন—বৰ্দ্ধমান জেলার কাঞ্চননগরই প্রাচীন}র্ণসুবর্ণ।” চীনপরিব্রাজক কর্ণসুবর্ণের পুরাতন রাজধানীর পাশে "তোমোচি বা ‘রক্তমৃত্তি’ নামে একটা স্ববৃহৎ সঙ্গারাম দেখিয়াছিলেন। মুর্শিদাবাদ জে অস্থাপি রাদামাটা নামে একটা প্রাচীন গ্রামের পাশ্বে একটা স্বরতৎ রাঙ্গামাটা নামে শু,"ষ্ট হয়, এই রাঙ্গামাটার ঢিপিই চীনপরিব্রাজক-বর্ণিত ‘রক্তমৃত্তি’ সঙ্ঘারামের ধ্বংসাবশেষ | কনিংহাম সাহেবের অনুমান ও মিথ্যা নয় যে সিংহভূম জেলার কোন স্থানে কর্ণসুবর্ণের এক সময়ে রাজধানী ছিল । পুৰ্ব্বেই লিথিয়াছি, রাজা শশাঙ্ক হর্ষদেব ও ভাস্করবর্মার সমবেত আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত ও পরাজিত হইয়া পাৰ্ব্বত্যপ্রদেশে আসিয়া আত্মরক্ষা করেন। প্রত্নতত্ববিৎ কনিং হামের সহকারী পুরাতত্ত্বান্বেষী বেগুলার সাহেব সিংহভূম ও ময়ূরভঞ্জের সীমাস্থিত বেণুসাগর নামক স্থানে রাজা শশাঙ্কের কীৰ্ত্ত দেখিয়া আসিয়াছেন।” আমরাও বৈতরণীনদীর অদূরে ও উক্ত বেণুসাগরের দেড়ক্রোশ অন্তরে ময়ূরভঞ্জের অন্যতম প্রাচীন রাজধানী খিজিঙ্গ বা খিচিং নামক স্থানে সুবিশাল শৈবকীৰ্ত্ত দেখিয়া আসিয়াছি। রাজা শশাঙ্ক যে একনিষ্ঠ শিবভক্ত ছিলেন, তাহা তাহার সমসাময়িক কৰুি বাণভট্ট ও চীনপরিব্রাজক উভয়েই প্রকাশ করিয়া গিয়াছেন। এক সময়ে উক্ত খিচিং হইতে বেণুসাগর পর্যন্ত একটা বৃহৎ রাজধানী ছিল, তাহা এই ভূখণ্ডের অবস্থা পৰ্য্যবেক্ষণ করিলে অনায়াসেই স্বীকার করিতে হয়। এই স্থানে যে এক সময়ে শত শত ইষ্টক-অট্টালিকা, পাষাণে নিৰ্ম্মিত শত শত দেবমন্দির এবং শত শত স্বচ্ছসলিল সরোবর বিদ্যমান ছিল, এখনও তাহার যথেষ্ট নিদর্শন রহিয়াছে। অস্কাপি এই নির্জন ও দুর্গম স্থানে শতাধিক বাধীন পুষ্করিণী ও অনেকগুলি সুপ্রাচীন ভগ্ন শিবমন্দির বিদ্যমান। আমার মনে হয়, শশাঙ্কদেব রাজ্যের উত্তরাংশ হারাইয়া দীর্ঘকাল এই নির্জন ও দুর্গম পাৰ্ব্বত্যপ্রদেশে অতিবাহিত করিয়াছিলেন। পূৰ্ব্বেই লিখিয়াছি, বরাহমিহির যে ভূখণ্ড বৰ্দ্ধমান ও স্বহ্ম বলিয়া পরিচিত করিয়াছেন, চীনপরিব্রাজকের ভ্রমণকাহিনীতে তাহাই ‘কর্ণসুবর্ণ’ নামে পরিচিত হইয়াছে। মহাভারতের প্রসিদ্ধ টীকাকার নীলকণ্ঠ মুগ্ধ’ দেশের বর্তমান নাম ‘রাঢ়’ নির্দেশ করিয়াছেন। ময়ূরভঞ্জ উৎকলবাসিগণের নিকট অস্কাপি রাঢ়’ নামে পরিচিত।” এরূপস্থলে সিংহভূৰ্ম ও ময়ূরভঞ্জ পর্য্যন্ত এক সময় কর্ণসুবর্ণরাজ্যের অন্তর্গত ছিল বলিয়াই মনে হয়। চীনপরিব্রাজকের ভ্রমণকাহিনীর বিবৃতিলেখক ওয়াটার সাহেব লিখিয়াছেন, ‘চীনপরিব্রাজক (es) Ancient Geography of India, p. 258, (**) Cunningham's Ancient Geography of India, p. 505. (es) Dr. Waddell's Exact Site of Pataliputra, p. 27. (en) Cunningham’s Arch. Sur. Reports, Vol. XIII. p. 74. (**) Mayurabhanja Archaealogical Survey Reports, Vol. I. p. LXIV.