পাতা:বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (বৈশ্য কাণ্ড, প্রথমাংশ).djvu/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ অধ্যায় বৈশ্যসমাজের অধঃপতন পূর্ব পূর্ব অধ্যায়ে বৈশ্বসমাজের অভু্যদয় ও বৈশ্বসাম্রাজ্যের সংক্ষিপ্ত পরি চয় দিয়াছি । বলিতে কি, যতদিন আৰ্য্যাবৰ্ত্তে বৈশ্যরাজশক্তি অপ্রতিহত ছিল, ততদিন বৈশ্বাসমাজের বিরুদ্ধে দণ্ডায়মান হইতে কেহই সাহসী হন নাই । কিন্তু খুষ্টীয় ৯ম শতাব্দীর প্রারস্তে মগধের গুপ্তবংশের তিরোধানের সহিত শাস্ত্রজ্ঞ ব্রাহ্মণসমাজ পৈশুসমাজকে অধঃপতিত করিবার জন্য রীতিমত চেষ্টা করিতেছিলেন। দাক্ষিণাত্যে বহু পরবর্তী সময় পৰ্য্যন্ত বৈশ্বাধিপত্য অক্ষুণ্ণ থাকিলেও খৃষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দী হইতেই দাক্ষিণাত্যের বৈদিক বিপ্রগণ বৈশ্বমুল রাজবংশকে ক্ষত্রিয় করিয়া লইয়াছিলেন এবং আর্য্যাবৰ্ত্তে বৈশ্বজাতির বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণশক্তির অভু্যদয় নিরীক্ষণ করিয়া দক্ষিণাত্যবিপ্রগণ দক্ষিণাপথের বৈশুমুল রাজাধিরাজগণের আদি বর্ণপরিচয় বিলুপ্ত করিবার জন্যও যে বিশেষ যত্নপর হইয়াছিলেন, পূর্ব অধ্যায়ে সংক্ষেপে তাহার আভাস দিয়াছি। এমন কি দাক্ষিণাত্যের বিরাট বৈশ্বসমাজ হইতে র্তাহাদিগকে সম্পূর্ণ পৃথক রাখিবার জন্য ও যে ব্রাহ্মণসমাজের বিশেষ লক্ষ্য ছিল তাহাতে সন্দেহ নাই ; কিন্তু সেই সকল রাজবংশ বহু পরপঠা কাল পর্য্যন্ত যে স্ব স্ব:মুলবর্ণ বিস্মৃত হন নাই, তাহারও পরিচয় পাওয়া গিয়াছে । সে কথা পরে বলিব । খৃষ্টীয় ৯ম শতব্দে বৈশ্ব বর্ণকে স্ব স্ব সনাতন ধৰ্ম্মাধিকার হইতে বঞ্চিত করিবার যথেষ্ট চেষ্টা চলিয়াছিল। খৃষ্টীয় ১০ম শতাদের শেষভাগে আবু-রৈহান-আল-বেরুণী নামক প্রসিদ্ধ মুসলমান পণ্ডিত র্তাহার “হিন্দুস্তান” গ্রন্থে তাহার বেশ পরিচয় দিয়া গিয়াছেন । তিনি অনেক স্থলেই বৈশ্যসমাজের ধৰ্ম্মাধিকার ও অনুষ্ঠান সম্বন্ধে তৎকালপ্রচলিত শাস্ত্রীয় মত উদ্ধৃত করিয়াচেন, ঐ সকল মত অতি প্রয়োজনীয় বোধে নিক্ষ্মে কএক স্বলে উদ্ধৃত করিতেছি— "রাগণের ক্ষত্রিয়কে বেদ শিখাইবেন । ক্ষত্রিয় বেদাধ্যয়ন করিভে পরিবেন, কিন্তু তাপর কাহাকে এমন কি ব্রাহ্মণকেও শিখাইতে পরিবেন না। বৈশু ও শূদ্র বেদোচ্চারণ বা বেদপাঠ স্ত করিবেই না, এমন কি বেদ শুনিতেও নিষেধ