পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/৫৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজপুতানা। 8VS) হইল। বিদ্যাভূষণ অসাধারণ প্রতিভা ও অনন্যসাধারণ অধ্যবসায়-বলে সম্পূর্ণ নূতন ভাষ্য সত্বর প্রণয়ন করিয়া যথাসময়ে প্রকাশ্য সভায় জয়পুরাধিপতি ও পণ্ডিতমণ্ডলীর সমক্ষে উপস্থিত করিলেন। তদবধি এখানে এবং বৃন্দাবনে গৌড়ীয় বৈষ্ণবসম্প্রদায়ের প্রাধান্য সুপ্রতিষ্ঠিত হইল। আর একটি ঘটনা শ্ৰীযুক্ত কালীপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায় বি-এ, মহাশয়ের অষ্টাদশ শতাব্দীর বাঙ্গালার ইতিহাসে এইরূপ বিবৃত হইয়াছে যে জয়পুর ও বৃন্দাবনের বাঙ্গালী বৈষ্ণবগণের সহিত তাদেশীয় পণ্ডিতগণের বিচার হয়। তাৎকালীন বাঙ্গালী বৈষ্ণবগণ বিচারে অসমর্থ হইলে দ্বিতীয় জয়সিংহ বঙ্গদেশীয় বৈষ্ণবগণের সহিত বিচার করিবার জন্য স্বীয় সভাপণ্ডিত দিগ্বিজয়ী কৃষ্ণদেব ভট্টকে বঙ্গদেশে প্রেরণ করেন। দিগ্বিজয়ী পণ্ডিত পথিমধ্যে প্ৰয়াগ কাশী প্ৰভৃতি স্থানের বৈষ্ণবদিগকে বিচারে পরাস্ত করিয়া স্বকীয় মতে দস্তখত করাইয়া লইতে লইতে বঙ্গদেশে গিয়া উপস্থিত হন। এখানে শ্ৰীনিবাস আচাৰ্য্যঠাকুরের বংশধর পণ্ডিতপ্ৰবর রাধামোহন ঠাকুরের সহিত শাস্ত্রীয় বিচারে দিগ্বিজয়ী পণ্ডিত সম্পূর্ণরূপে পরাজিত হইয়া তাহার শিষ্যত্ব গ্ৰহণ করেন। তদবধি জয়পুর ও বৃন্দাবনে বাঙ্গালী বৈষ্ণবদিগের প্রভাব অপ্ৰতিহত হয়। ব্ৰজমণ্ডলের ন্যায় জয়পুরও বাঙ্গালী বৈষ্ণবদিগের পবিত্র তীর্থধাম । তঁহারা অনেকেই বৃন্দাবন হইতে দেশে ফিরিবার কালে অথবা বৃন্দাবনযাত্রার কালে জয়পুরের গোবিন্দজী এবং অন্য বিগ্ৰহাদ্বয় দর্শন করিয়া যান। ১৬৫৯ শকে এইরূপে বাঙ্গালী বৈষ্ণব সন্ন্যাসী বাবা আউলমনোহর দাস শেষ জীবনে বৃন্দাবন যাইবার পথে জয়পুরে উপস্থিত হন। এখানেই তাহার দেহত্যাগ হয়। বাঙ্গালী সন্ন্যাসী আউলমনোহর দাসের সমাধি জয়পুরে আজিও বিদ্যমান আছে। বেঙ্গল ব্যাঙ্কের দেওয়ান রামকমল সেনের পরলোক গমনে তঁহার জ্যেষ্ঠ পুত্ৰ হরিমোহন সেন পিতার পদে অধিষ্ঠিত হন। তিনি ১৮৪৪ হইতে ১৮৪৯ অব্দ পৰ্যন্ত ঐ পদে এবং কিছুকালের জন্য গবৰ্ণমেণ্ট ট্রেজারির দেওয়ানের পদে সুনামের সহিত কৰ্ম্ম করেন। ঐ সময় বাবু কাশীপ্রসাদ ঘোষ পরিচালিত"Hindu Intelligencer' ract গবর্ণমেণ্টের সেক্রেটরী হগ সাহেবের কঠোর আচরণ সম্বন্ধে কয়েকটী প্ৰবন্ধ বাহির হইলে হগ, সাহেব সে সকল হরিমোহন বাবুর লেখা বলিয়া অযথা দোষারোপ করেন। হরিমোহন বাবু তাহাতে অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া মাসিক দেড় হাজার টাকার কৰ্ম্ম অবলীলাক্রমে