পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/৬১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজপুতানা। 8S “তঁহার ঝোঁক হয়। ইতিমধ্যে “পাইয়োনিয়ার” পত্রে কেরোলীর মহারাজার স্কুলে প্ৰধান শিক্ষকের প্রয়োজন আছে দেখিয়া তিনি ঐ পদের জন্য আবেদন করেন। তাহার আবেদন গ্ৰাহ হয় এবং তিনি মাসিক ৬০২ টাকা বেতনে নিযুক্ত হন। তিনি মির্জাপুর মিশনারী স্কুলের কৰ্ম্ম ত্যাগ করিয়া ১৮৮৬ খৃঃ অব্দের ২৬শে জুন নূতন কৰ্ম্মে প্রবৃত্ত হন। কেরোলী রাজ্যে তখন ভাল। ইংরাজী-জনা কৰ্ম্মচারী কেহই ছিলেন না, সুতরাং অনেক সময় চিঠি পত্রাদিতে অর্থবিভ্ৰাট ঘটত। ভোলানাথ বাবু চাকরীতে বাহাল হইবার পূর্বেই তাহার নিদর্শন প্ৰাপ্ত হইলেন। মহারাজার সেক্রেটারী তাঁহাকে যে মঞ্জৱী-পত্ৰ প্রেরণ করেন তাহাতে তাহার ধারণা হইয়াছিল কেরোলীর রাজধানী রেল ষ্টেশন হইতে ১৭ মাইল দূরে অবস্থিত। কিন্তু ষ্টেশনে নামিয়া তিনি অনুসন্ধানে জানিতে পারেন দূরত্ব প্রকৃতপক্ষে তিনগুণ অধিক অর্থাৎ ৫.২ মাইল। একে জ্যৈষ্ঠ মাসের দারুণ উত্তাপ, তাহাতে আবার মরুপর্বতময় প্রদেশের অজানা পথ, তাহাতে অজ্ঞাতপ্ৰকৃতি ভিন্নভাষাভাষী পল্লীবাসীদিগের মধ্য দিয়া যাইতে প্ৰথমে তঁাহাকে বিলক্ষণ ইতস্ততঃ করিতে হইয়াছিল। তঁহাকে যাইতে হইবে জয়পুর রাজ্যের ভিতর দিয়া । তখন বেলা তিনটা বাজিয়াছে। তিনি সাহসে ভর করিয়া একাশ্ববাহিত দ্বিচক্র রথ “এক্কায়” আরোহণ করিয়া বাহির হইয়া পড়িলেন। কলিকাতার বাহিরে র্যাহারা পদার্পণ করেন নাই তাহারা ‘শুনিয়া বিস্মিত হইবেন। এই ৫২ মাইল পথ অশ্বযানেযাইতে ভোলানাথ বাবুকে মাত্র তিনটী রৌপ্যমুদ্রা ব্যয় করিতে হইয়াছিল। পথে মহুয়া নামক গ্রামে তিনি রাত্ৰিবাস করিয়া পরদিন যথাস্থানে গিয়া উপস্থিত হন। কিন্তু এখানে আসিয়া অবধি বাঙ্গালীর মুখ দেখিতে না পাইয়া, উদয়াস্ত হিন্দী ভাষায় কথোপকথন করিতে করিতে প্ৰথম প্রথম এখানে কোন ক্রমেই মন টিকাইতে পারেন নাই। জনৈক উচ্চ কৰ্ম্মচারী কাশ্মীরী পণ্ডিত এবং স্কুলের সেক্রেটরী জনৈক উদারপ্রকৃতি রাজপুত র্তাহার সহায় হইয়াছিলেন এবং তঁাহারাই তাহার কথাবাৰ্ত্তার লোক ছিলেন । ভোলানাথ বাবুর আগমন কালে কেরোলীর মহারাজার বয়স ছিল ৬০ বৎসর। তিনি ৫০ বৎসর বয়সে রাজ্যের অধিকার প্রাপ্ত হন । কালোচিত শিক্ষার অভাবে তঁহার সময়ে নানা গোলযোগ উৎপন্ন হওয়ায় রাজ্যের বন্দোবস্ত পলিটিক্যাল এজেণ্টের হন্তে যায়। তখন এজেণ্ট ছিলেন। সার ইভান স্মিথ (Sir Evan