বৈষ্ণব-চরিতাখ্যান— নরোত্তমবিলাস—১৬১৪-১৬২৫ খৃঃ। ১২৩৯ আতিথ্য। এইরূপ নানা কথা কহি পরস্পর। নরোত্তমে ছাড়িয়া যাইতে নারে ঘর ॥ নানা দ্ৰব্য আনি যত্নে কিছু ভুঞ্জাইল । শয়ন-নিমিত্ত দিব্যাসন আনি দিল ॥ নরোত্তমে ভোজন শয়ন নাহি ভায় । নাম-সঙ্কীৰ্ত্তনে নিশি জামিয়া পোহায় ॥ ধুলায় ধূসর অঙ্গ নেত্রে অশ্র-ধার। সে দশ। দেখিতে প্রাণ কানদয়ে সভার ॥ প্রভাত-সময়ে চলে সভা সম্বোধিয়া । পাছে পাছে ধায় লোক ব্যাকুল হইয়া ॥ যে জন দেখয়ে পথে এই দশা তার । নরোত্তম চিত্ত-বৃত্তি হরয়ে সভার ॥ সব তীর্থ দেখি নরোত্তম অল্প দিনে। মনের উল্লাসে প্রবেশয়ে বৃন্দাবনে ॥ নরোত্তম স্বপ্নে গৌরাঙ্গ-লীলা প্রত্যক্ষ করিতেছেন । কি আশ্চৰ্য্য জগন্নাথ রথাঞ্জে নৰ্ত্তন। মধ্যে গৌরচন্দ্র চারি পাশে প্রিয়গণ ॥ কি অভুত শোভা গোঁরগণের সহিতে। উপমা দিবার ঠাঞি নাই ত্ৰিজগতে ॥ প্রভুর ইঙ্গিত মাত্ৰে প্ৰিয় পরিকর। করিলেন গানের আরম্ভ মনোহর । বাজায় মদ্দল আদি অতি রসায়ন। চতুর্দিগে জয় জয় ধ্বনি অনুক্ষণ । গন্ধৰ্ব্ব কিন্নর যত মস্তষ্যের বেশে । নাচে গায় নানা ঘর্ষ বায়েন (১। উল্লাদে ॥ সীত্তন-মুথের-সমুদ্ৰ উথলিল ! স্বৰ্গ মৰ্ত্ত্য পাতাল এ সত্ৰ ব্যাপিল । শ্ৰীকৃষ্ণচৈতন্য নৃত্য করে সঙ্কীর্তনে। দেখিতে কাহার সাধ নাহি ত্ৰিভুবনে ॥ ধায় নারী পুরুষ অসংখ্য চারি ভিতে। পুপ-বৃষ্টি করে দেব পত্নীর সহিতে ॥ (১) বায়েন = বাজায়।
পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮৯
অবয়ব