পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

为总 বঙ্গ-গৌরব রাখিয়াছিলেন “শোভনোদ্যান” । এই শোভনোদ্যানটি তিনি মনের মত করিয়া সাজিত করিয়াছিলেন। তাহাতে কোনও বিলাসের উপকরণ ছিল না। বাহিরের উদ্যানে তিনি উদ্ভিদ-বিজ্ঞান শিক্ষার উপযোগী নানাবিধ বৃক্ষলতাদি রোপণ করিয়াছিলেন, গৃহের অভ্যন্তরে ভূতত্ত্ববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, জ্যোতিষ প্রভৃতি শাস্ত্ৰশিক্ষার নানাবিধ সরঞ্জাম এবং অমূল্য দুখপ্ৰাপ্য গ্ৰন্থরাজি সজ্জিত ছিল। এই গৃহে জ্ঞানচর্চায় অক্ষয়কুমার তাহার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যাপন করিয়াছিলেন । রুগ্নশরীরেও সাহিত্যসেবা করিতে অক্ষয়কুমার একদিনও বিরত হন নাই। ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি ‘চারুপাঠ’ * তৃতীয় ভাগ নামক মনোহর সন্দর্ভ পুস্তক প্রকাশিত করেন। ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে তিনি “ভারতবর্ষীয় উপাসক সম্প্রদায়” ১ম ও ২য়** ভাগ প্ৰকাশিত করেন। ভারতবর্ষের ১৮২ প্রকার উপাসক সম্প্রদায়ের যে বিবরণ তিনি লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন তাহা তঁহার অনন্য-সাধারণ অধ্যবসায়, অপূর্ব পাণ্ডিত্য ও গভীর গবেষণার পরিচয় দেয়। এরূপ গ্রন্থ বাংলা ভাষায় আর নাই। এই গ্রন্থ প্রকাশের ফলে তাহার যশঃসৌরভ য়ুরোপ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। কোন সুস্থাকায় ব্যক্তি প্ৰায় সহস্ৰ পৃষ্ঠায় পূর্ণ এইরূপ গবেষণামূলক গ্ৰন্থ লিখিতে পারেন। কিনা সন্দেহ! ভগ্নস্বাস্থ্য অক্ষয়কুমার রোগশয্যায় শয়ন করিয়া একটু একটু করিয়া এই মহাগ্রন্থ কিরূপে রচনা করিয়াছিলেন তাহা ভাবিলে বিস্মিত হইতে হয়। আবার ইহারই অবসরে তিনি ‘ধৰ্মনীতি’১২ নামক আরও একখানি সুচিন্তিত গ্রন্থ লিখিয়া গিয়াছেন। ১২৯৩ সালের ১৪ জ্যৈষ্ঠ, ইংরেজি ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি অকস্মাৎ মৃত্যুমুখে পতিত হন। মৃত্যুর দিনও সন্ধ্যাকালে তিনি নিয়মিত বায়ু সেবন করিয়া আসিয়াছিলেন। অক্ষয়কুমারের অসাধারণ বিদ্যানুরাগ, অপূর্ব অধ্যবসায়, গভীর স্বদেশপ্রেম তাহার দেশবাসীর নিকট চিরস্মরণীয় হইয়া থাকিবে। তাহার ন্যায় একনিষ্ঠ সাহিত্যসাধক অতি ळि ।