পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সৈয়দ আমীর আলি S Sዒ এক বৎসর পর ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে আমীর আলি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য নির্বাচিত হন এবং পর বৎসর প্রেসিডেন্সি কলেজের মুসলমান আইনের (Muhammedian Law) অধ্যাপক নিযুক্ত হন। পাঁচ বৎসর তিনি এই স্থানে অধ্যাপনা করেন। এই সময় হইতেই তিনি মুসলমান সমাজের নানা সমস্যার বিষয় চিন্তা করিয়া তাহার সমাধান সম্বন্ধে গবেষণা করিতে থাকেন। কি উপায়ে সমাজকে ঘোর রক্ষণশীলতা ও গোঁড়ামি হইতে যুগোপযোগী করা যায় ও কিভাবে নৈতিক, সামাজিক ও কর্মজীবনের ধারার মধ্যে জগতের বর্তমান ভাব ও বৈশিষ্ট্যের উন্নত প্ৰণালী প্রবর্তন করিতে পারা যায় তদ্বিষয়ে তিনি বিশেষভাবে চেষ্টা করিতে থাকেন। এতদুদ্দেশ্যে ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে fëfi sfirëve rikG: Central National Muhammedan Association স্থাপন করেন। পাঁচিশ বৎসর কােল তিনি এই সমিতির সেক্রেটারি বা সম্পাদক থাকিয়া সমাজের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। ঐ বৎসরই তিনি মুসলমান সমাজের আর একটি বিরাট ও প্রধান অনুষ্ঠানের কার্যনির্বাহকমণ্ডলীতে যোগদান করিয়া একাদিক্ৰমে ২৮ বৎসর (১৮৭৬-১৯০৪ খ্রিঃ) সভাপতিরূপে তাহার উপর কর্তৃত্ব করেন। এই অনুষ্ঠান পুণাত্মা হাজি মহম্মদ মহসীন মহাশয়ের নাম সম্পর্কিত হুগলির বিখ্যাত ইমামবাড়া। গভর্নমেন্টের দৃষ্টি এই যুবক ব্যারিস্টারের প্রতি বরাবরই ছিল। র্তাহার পাঁচ বৎসর ব্যারিস্টারির পর ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলিকাতার প্রেসিডেন্সি ম্যাজিষ্ট্রেটের পদে নিযুক্ত হন। এই পদে তিনি বিশেষ কাৰ্যকুশলতার পরিচয় দেন। অত্যয় কাল মধ্যেই গভর্নমেন্ট তাহাকে অস্থায়ী চীফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্টেটের পদে উন্নীত করেন। পরে ঐ পদে তাঁহাকে স্থায়ী ভাবে নিযুক্ত করিবার কথা হয়; কিন্তু তিনি পুনরায় আইন ব্যবসায়ে যোগদানের সঙ্কল্প করিয়া ঐ পদে ইস্তফা দেন এবং হাইকোর্টে ফিরিয়া আসেন। ব্যারিস্টারিতে তিনি প্রভূত যশ ও অর্থ অর্জন করেন ও ক্ৰমে আইনের বিশেষজ্ঞ বলিয়া সুনাম প্রাপ্ত হন। এই সময় হইতে পাঁচ বৎসর কাল (১৮৭৯-৮৩ খ্রিঃ) তিনি বাংলার ছোটলাটের ব্যবস্থাপক সভার ও তৎপর বড়লাটের ব্যবস্থাপক সভার সভ্য হন। Str8 fờTGM7 fSsR 3 Ti-43 (Tagore Law) VONKSTYorks frNG TR || Strva খ্রিস্টাব্দে তিনি সি. আই. ই উপাধি লাভ করেন। তাহার কার্যের প্রধান ক্ষেত্র ছিল কলিকাতার হাইকোর্ট-শুধু আইন-ব্যবসায়ী হিসাবে নহে, মাননীয় বিচারক হিসাবেও বটে। এইজন্যই সাধারণত তিনি জাস্টিস আমীর আলি বলিয়া সকলের নিকট পরিচিত ছিলেন। ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে তিনি হাইকোর্টের বিচারপতির পদে নিযুক্ত হন। চৌদ্দ বৎসর সসম্মানে বিচারপতির আসন অলকৃত করিয়া ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে অবসর গ্রহণপূর্বক তিনি ইংল্যান্ডে যাইয়া বাস করেন। অবসর গ্রহণ করিলে স্বদেশ ও স্বজাতির কথা তিনি বিস্মৃত হন নাই, বরং তত্ৰত্য মুসলিম-লিগের শাখার সভাপতিরূপে সর্বদাই প্ৰভুত পরিশ্রম করিতে থাকেন। ভারতবাসীর মধ্যে বিলাতে সম্রাটের মন্ত্রণা সভায় (Privy Council) আমীর আলিই প্রথম সভ্য (১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে)। তঁহার এই সম্মানে সমগ্ৰ ভারতবর্ষ সম্মানিত হইয়াছিল।