পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/১৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8tr বঙ্গ-গৌরব কেদারনাথ জীবনে বহু অর্থ উপার্জন করিয়া গিয়াছেন বটে, কিন্তু তােহর মধ্যে কেহ কোনোদিন অর্থের লোভ দেখে নাই। অর্থের প্রতি অধিক আসক্তি থাকিলে তিনি সারা জীবন (প্রায় ৪৪ বৎসর কাল) নিজেকে অধ্যাপনা কার্যে নিযুক্ত রাখিতে পারিতেন না। অধ্যাপনায় সময় ব্যয় না করিয়া যদি তিনি স্বাধীন ভাবে চিকিৎসকের কার্য করতেন তাহা হইলে আরও অনেক অধিক অর্থ উপার্জন করিতেন। কিন্তু তাহা হইলে তঁহার দ্বারা এত গবেষণার কার্য ও পুস্তক রচনা সম্ভব হইত না। কেদারনাথের জীবনের ইহাই প্রধান বিশেষত্ব ছিল। ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে দারুণ ইরিসিাপ্লাস রোগে তাহার স্বাস্থ্য নষ্ট হইয়া গিয়াছিল বটে, কিন্তু তথাপি তিনি অধ্যাপনা কার্য ছাড়িতে সম্মত হন নাই। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি কারমাইকেল কলেজের ছাত্রগণকে শিক্ষাদানের কার্যে নিজেকে নিযুক্ত রাখিয়াছিলেন। স্যার কেদারনাথের মত আসাধারণ মেধাবী ও মনীষাসম্পন্ন ব্যক্তি অতি অল্পই দৃষ্ট হইয়া থাকে। যে যুগে তঁহার মত পণ্ডিতের জন্ম হয়, সে যুগ ধন্য। তিনি বাংলা দেশের মুখ উজ্জ্বল করিয়া গিয়াছেন। ঈশানচন্দ্ৰ ঘোষ পল্লিগ্রামে জন্মগ্রহণ করিয়া দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত হওয়া সত্ত্বেও লোক কি করিয়া নিজের ভবিষ্যৎ-জীবন গঠন করিতে পারে এবং পরবর্তীকালে প্রচুর অর্থার্জন করিয়া রায় সাহেব ঈশানচন্দ্র ঘোষ মহাশয়ের জীবনী আলোচনা করিলে বুঝিতে পারি। যশোহর জেলায় এক পল্লিগ্রামে’ ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দেই ঈশানচন্দ্রের জন্ম হয়। তিনি নয়। বৎসর বয়সে পিতৃহীন হন”। তাহার পর কি করিয়া তিনি বিদ্যাশিক্ষা করিয়াছিলেন, তাহা শুনিলে বিস্মিত হইতে হয়। নয় বৎসর বয়স হইতেই তাহাকে সাধারণের সাহায্যের উপর নির্ভর করিতে হইয়ছিল। বি. এ পরীক্ষায় তিনি গণিতে* গভীর জ্ঞানের পরিচয় প্ৰদান করেন এবং ইংরেজিতে এম. এ পাশ* করেন। প্রথম জীবনে কয়েক বৎসর তাহাকে ইংলিশম্যান’ ও ‘অমৃতবাজার পত্রিকার’ সম্পাদকীয় বিভাগে চাকরি করিতে হইয়াছিল। ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি সরকারি শিক্ষাবিভাগে কার্য লাভ করেন এবং ত্রিশ বৎসরের অধিক কাল অতিশয় দক্ষতা ও সুখ্যাতির সহিত তিনি চাকরি করিয়া গিয়াছেন। ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে হইতে ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে অবসর গ্রহণ করার অব্যবহিত পূর্ব পর্যন্ত ।