পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S to বঙ্গ-গৌরব তাহার পর ক্রমে তিনি কলকাতার উত্তর বিভাগের প্রধান প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট ২ নিযুক্ত হন। এই সকল কার্যে র্তাহার আইনজ্ঞানের পরিচয় প্রকাশ পায় ও ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ তঁহাকে ঠাকুর আইন অধ্যাপকও নিযুক্ত করিয়া সর্বোচ্চ সম্মানে বিভূষিত করেন। ঠিক সেই সময়েই তিনি মাদ্রাজ হাইকোর্টের জজ নিযুক্ত হন। এখনকার মত তখন সকল প্রদেশে প্রাদেশিকতা প্রসারিত হয় নাই, সেজন্য মাদ্রাজ প্রদেশে উপযুক্ত মুসলমানের অভাব দেখিয়া ভারত গবর্নমেন্ট বাংলাদেশ হইতেই জজ নির্বাচন করেন এবং পরলোকগত স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের যত্নে ও চেষ্টায় স্যার আবদর রহিমই ঐ পদ লাভ করেন। স্যার আবদার হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়েরই পরম প্রীতির পাত্র ছিলেন, বলিয়াই বাংলার সকলে একযোগে তাহাকে এই উচ্চপদ লাভের সাহায্য করিয়াছিল। মাদ্রাজে যাইয়াও তিনি স্বীয় কাৰ্যশক্তি প্রদর্শনে কাপিণ্য করেন নাই। অচিরকাল মধ্যেই তাহাকে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট ও সিণ্ডিকেট সভার সদস্য করা হয় ও তিনি সর্বপ্রকার জনহিতকর কার্যের সহিত নিজেকে সংযুক্ত করেন। তিনি যে সুদীর্ঘ দ্বাদশবর্ষ কাল মাদ্রাজে জজ পদে নিযুক্ত ছিলেন,তাহা তাহার শ্রেষ্ঠ কর্মজীবন বলিয়া অভিহিত করা হয়। তাহার কার্যফলে মাদ্রাজের লোক এবং মাদ্রাজ গভর্নমেন্ট তাহার প্রতি এত অনুরক্ত হইয়াছিলেন যে তঁহাকে দুইবার মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান করা হয়। একবার ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দের জুলাই হইতে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এবং পুনরায় ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের জুলাই হইতে অক্টোবর পর্যন্ত র্তাহাকে প্রধান বিচারপতির কার্য করিতে হইয়াছিল। মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতির পদ হইতে অবসর গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি বাংলাদেশে ফিরিয়া আসেন এবং বাংলার গভর্নমেন্ট তাহাকে গভর্নরের শাসন পরিষদের অন্যতম সদস্য নিযুক্ত করেন। মাদ্রাজ হইতে চলিয়া আসার পরও মাদ্রাজের লোক তাহাকে ভুলিতে পারে নাই। তাহারা তঁহাকে একবার মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক কনভোকেশন সভায় বক্তৃতা করিবার জন্য নিমন্ত্ৰণ করিয়া লইয়া গিয়াছিল। ইহার পর করিবার জন্য যাইতে হইয়াছিল। শাসন পরিষদের সদস্য পদ হইতে অবসর গ্রহণ করার পর হইতে স্যার আবদর রাজনীতি-ক্ষেত্রে কার্য করিতেছেন। তাহার পূর্বেও মুসলমানগণের মঙ্গলজনক বহু প্রতিষ্ঠানের সহিত তিনি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখিয়াছিলেন। ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে তাহাকে নিখিল হইয়াছিল। ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে তাঞ্জোরে যে নিখিল ভারত উলেমা সম্মিলন হয়, স্যার আবদর তাহাতে সভাপতিত্ব কবিবার জন্য আহূত হন ও তঁহার অভিভাষণে মুসলমান সমাজকে প্রীত করেন। গত কয়েক বৎসর যাবৎ তিনি ভারতে গভর্নমেন্টের ব্যবস্থা পরিষদের সদস্য হইয়াছেন এবং গত নির্বাচনের পর পরিষদের সদস্যগণ তঁহাকে সভাপতি পদ প্ৰদান করিয়া ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোচ্চ সম্মানজনক কাৰ্য করিবার সুযোগ দান করিয়াছেন।