পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/২১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

টীকা ও প্রাসঙ্গিক তথ্য 8ኳrS ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগর ১. জগন্মোহন ন্যায়ালংকার : রোজগারের আশায় ঠাকুরদাস কলকাতায় চলে এলেন। আশ্রয় পেলেন জগন্মোহন ন্যায়ালংকারের বাড়িতে। কিন্তু ইংরেজি না শিখলে তো চাকরি জুটবেনা-তাই তার এক বন্ধুকে বলে কয়ে তিনি ঠাকুরদাসের ইংরেজি শিক্ষার ব্যবস্থা করে দিলেন। কিন্তু নানা কারণে ঠাকুরদাসের সেখানে বেশিদিন থাকা সম্ভব হয়নি। ২ ভাগবতচরণ সিংহ ঃ ১৩ নং দিয়েহাটা, বড়বাজারের (বর্তমান ১৩ এ,বি, সি নং দিগম্বর জৈন (টেম্পল রোড) নিবাসী উত্তররাটী কায়স্থ জমিদার ভাগবতচরণ সিংহের সঙ্গে ঈশ্বরচন্দ্রের পিতামহ রামজয়ের যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা ছিল। ঠাকুরদাসকে তিনি তঁর নিজের বাড়িতে নিয়ে এসে রাখলেন। তিনি ঠাকুরদাসকে আট টাকা মাইনের একটি চাকরিও জুটিয়ে দেন। আর দুবেলা খেতে পাওয়া যেত ভাগবতচরণের বাড়িতে। এই ভাগবতচরণের একপুত্র জগদ্দুর্লভ সিংহ ও এক কন্যা রাইমণি। ৩. রামকান্ত তর্কবাগীশ : ২৩ কি ২৪ বছর বয়সে ঠাকুরদাসের বিয়ে হােল ভগবতী দেবীর সঙ্গে। ভগবতীর বাড়ি গোঘাটে, তার বাবার নাম রামকান্ত তর্কবাগীশ । আসল নাম রামকান্ত চট্টোপাধ্যায়। ভগবতীর মামা বাড়ি আরামবাগ মহকুমার পাতুলে, মাতামহের নাম পঞ্চানন তর্কবাগীশ । ৪. ভবানন্দ শিরোমণি ঃ ঈশ্বরচন্দ্রের জীবনীকার চণ্ডীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন “তিনি (বিদ্যাসাগর), যখন জননীগর্ভে অবস্থিতি করিতেছিলেন তখন তঁহার জননী উন্মদিনী। নানাপ্রকার ঔষধাদি সেবন করাইয়া কেহ তীহাকে রোগমুক্ত করিতে পারিলনা। কিন্তু বিদ্যাসাগর মহাশয় ভূমিষ্ঠ হইতে না হইতেই প্ৰসূতি আরোগ্যলাভ করিলেন, তাহার পূর্বজ্ঞান পূর্বভাব সমস্তই ফিরিয়া আসিল।.কথিত আছে যে, উদয়গঞ্জনিবাসী জ্যোতিষী ভবানন্দ শিরোমণি মহাশয় এই আসন্নপ্রসবা বধূর কোষ্ঠী গণনা করিয়া বলিয়া দিয়াছিলেন যে, বধুমাতার কোন প্রকার পীড়া হয় নাই। ঈশ্বরানুগৃহীত কোন মহাপুরুষ ইহার গর্ভে জন্মগ্রহণ করিয়াছেন তাঁহারই তেজঃপ্রভাবে প্রসূতি অধীরা হইয়া পড়িয়াছেন।” (চণ্ডীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়-বিদ্যাসাগর। আনন্দধারা প্রকাশন, ১৩৭৬ ঃ পূ. ৬-৭) ৫। রাধামোহন বিদ্যাভূষণ ঃ খানাকুল কৃষ্ণনগরের পশ্চিমে পাতুল গ্রামনিবাসী পঞ্চানন বিদ্যাবাগীশের (মুখোপাধ্যায়) চারপুত্র ও দুই কন্যা। চার পুত্রের নাম রাধামোহন বিদ্যাভূষণ, রামধন তর্কবাগীশ, গুরুপ্ৰসাদ শিরোমণি, বিশ্বেশ্বর মুখোপাধ্যায় ও কন্যারা হলেন গঙ্গামণি দেবীও তারাসুন্দরী দেবী। গঙ্গামণি দেবীর সঙ্গে গোঘাট নিবাসী সিদ্ধতান্ত্রিক রামকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের বিবাহ হয়। এদের দুই কন্যা জন্মে-লক্ষ্মীমণি দেবী ও ভগবতী। দেবী। ভগবতী দেবীর সঙ্গে ঠাকুরদাসের বিবাহ হয়। তাই সম্পর্কে বিদ্যাসাগরের বড় মাতুল রাধামোহন বিদ্যাভূষণ। শৈশবে অসুস্থ হয়ে পড়লে ঈশ্বরচন্দ্ৰ প্ৰায় মাস ছয়েক পাতুলে গিয়ে থাকেন ও বড় মামা রাধামোহনের যত্নে আরোগ্যলাভ করেন। বিদ্যাসাগর র্তার জীবনচরিতে র্তার এই মাতুলের কথা শ্ৰদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন।