পাতা:বত্রিশ সিংহাসন - নীলমণি বসাক.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
বত্রিশ সিংহাসন

করিয়াছিলাম তাহার এই চরিত্র, রাণী আমাকে বঞ্চনা করিয়া নগররক্ষকের সহিত প্রণয় করিয়াছে। অতএব এরূপ সংসর্গে অবস্থান অপেক্ষা আমার পক্ষে নির্জন বন প্রয়াণ শ্রেয়স্কর। বারম্বার এই আক্ষেপ করিয়া রাজা বলিতে লাগিলেন আমার বুদ্ধিকে ধিক, আমি যদি আর রাজ্য করি তাহাকেও ধিক্‌, রাণীকেও ধিক্‌, কোটালকেও ধিক, বেশ্যাকেও ধিক, কামদেব যিনি এই সংসারের লােককে এরূপ দুর্ম্মতিতে মুগ্ধ করিয়া রাখিয়াছেন সেই কামদেবকেও ধিক।

 তদনন্তর ঐ ফুল হস্তে লইয়া রাজা মনে মনে বিচার করিতে লাগিলেন এ সংসারে তাবৎ বস্তুই অচিরস্থায়ী ও ক্ষণভঙ্গর, কালে কালে সকলেই লয় প্রাপ্ত হইবে। জন্ম গ্রহণ মাত্র সকলেই কাল গ্রাসে পতিত হইয়া রাছিয়াছে, এবং পরিণামে কিছুই সঙ্গী হয় না, তথাপি লােকে ভ্রান্তি প্রযুক্ত আমার আমার করিয়া বৃথা কাল ক্ষেপণ করে। এবং সকলেই সুখের ভাগী হইতে চাহে, দুঃখের ভাগী কেহই নহে। এই সংসার সমুদ্ররূপ, মায়া তাহার জল এবং লিসা তাহার মৎস্য, কিন্তু এই মৎস্য ধাৰণার্থ ধীবর কেহই নাই।

 এই প্রকার চিন্তায় ব্যাকুলিত হইয়া রাজা ভর্তৃ-হরি অন্তঃপুরে প্রবেশ করিয়া রাণীকে ক্রোধাভাসে জিজ্ঞাসা করিলেন আমি তােমাকে যে ফল দিয়াছিলাম তাহা কি করিয়াছ। রাণী বলিলেন মহারাজ আমি| তাহা ভক্ষণ করিয়াছি। তখন রাজা তাহাকে ঐ ফল