পাতা:বনবাণী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

দ্বিতীয় পর্ব

কেন ধরে রাখা, ও-যে যাবে চলে
মিলনলগন গত হলে।
স্বপনশেষে নয়ন মেলাে,
নিবু নিবু দীপ নিবায়ে ফেলো,
কী হবে শুকানাে ফুলদলে।

 এখনো কোকিল ডাকছে, এখনো শিরীষবনের পুস্পাঞ্জলি উঠছে ভরে ভরে, তবু এই চঞ্চলতার অন্তরে অন্তরে একটা বেদনা শিউরিয়ে উঠল। বিদায়দিনের প্রথম হাওয়া অশথগাছের পাতায় পাতায় ঝর্‌ ঝর্‌ করে উঠছে। সভার বীণা বুঝি নীরব হবে, দিগন্তে পথের একতারায় সুর বাঁধা হচ্ছে- মনে হচ্ছে, যেন বসন্তী রঙ ম্লান হয়ে গেরুয়া রঙে নামল।

চলে যায়, মরি হায়, বসন্তের দিন।
দূর শাখে পিক ডাকে বিরামবিহীন।
অধীর সমীরভরে
উচ্ছ্বসি বকুল ঝরে,
গন্ধ-সনে হল মন সুদূরে বিলীন।

পুলকিত আম্রবীথি ফাল্গুনেরই তাপে,
মধুকরগুঞ্জরণে ছায়াতল কাঁপে।
কেন জানি অকারণে
সারাবেলা আনমনে
পরানে বাজায় বীণা কে গাে উদাসীন॥

১৬৬