পাতা:বর্ণপরিচয় - প্রথম ভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (৬২তম সংস্করণ).pdf/৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষষ্টিতম সংস্করণের বিজ্ঞাপন

আবশ্যক বোধ হওয়াতে, এই সংস্করণে কোনও কোনও অংশ পরিবর্ত্তিত হইয়াছে; সুতরাং সেই সেই অংশে পূর্ব্বতন সংস্করণের সহিত অনেক বৈলক্ষণ্য লক্ষিত হইবেক।

 প্রায় সর্ব্বত্র দৃষ্ট হইয়া থাকে, বালকেরা অ, আ, এই দুই বর্ণস্থলে স্বরের অ, স্বরের আ, বলিয়া থাকে। যাহাতে তাহারা, সেরূপ না বলিয়া, কেবল অ, আ এইরূপ বলে, তদ্রূপ উপদেশ দেওয়া আবশ্যক।

 যে সকল শব্দের অন্ত্য বর্ণে আ, ই, ঈ, উ, ঊ, ঋ এই সকল স্বর বর্ণের যোগ নাই, উহাদের অধিকাংশ হলন্ত, কতকগুলি অকারান্ত, উচ্চারিত হইয়া থাকে। যথা, হলন্ত―গুড়, ঘর, হাত, জল, পথ, বন ইত্যাদি; অকারান্ত―কত, ছোট, ভাল, ঘৃত, দৈব, মৌন ইত্যাদি। কিন্তু অনেক স্থলেই দেখিতে পাওয়া যায়, এই বৈলক্ষণ্যের অনুসরণ না করিয়া, তাদৃশ শব্দ মাত্রই অকারান্ত উচ্চারিত হইয়া থাকে। বর্ণযোজনার উদাহরণ স্থলে যে সকল শব্দ প্রযুক্ত হইয়াছে, তন্মধ্যে যে গুলি অকারান্ত উচ্চারিত হওয়া আবশ্যক, সেই সেই শব্দের পার্শ্বদেশে * এইরূপ চিহ্ন যোজিত হইল। যে সকল শব্দের পার্শ্বদেশে তদ্রূপ চিহ্ন নাই, উহারা হলন্ত উচ্চারিত হইবেক।

 বাঙ্গালা ভাষায় তকারের ত, ৎ, এই দ্বিবিধ কলেবর প্রচলিত আছে। দ্বিতীয় কলেবরের নাম খণ্ড তকার। ঈষৎ, জগৎ, বৃহৎ প্রভৃতি সংস্কৃত শব্দ লিখিবার সময় খণ্ড তকার ব্যবহৃত হইয়া থাকে। খণ্ড তকারের স্বরূপ পরিজ্ঞানের নিমিত্ত, বর্ণপরিচয় পরীক্ষার শেষ ভাগে তকারের দুই কলেবর প্রদর্শিত হইল।

শ্রীঈশ্বরচন্দ্র শর্ম্মা

 কর্ম্মাটাঁড।

১লা পৌষ, সংবৎ ১৯৩২।