পাতা:বর্ত্তমান জগৎ - প্রথম ভাগ.pdf/১৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কবরের দেশে দিন পনরা-আসোয়ানের গ্রানাইট পাহাড ১৪১ মিশরীয় শিল্পীরা যে তঁহাদের কারুকাৰ্য্যে স্বজাতীয় অঙ্গ প্ৰত্যঙ্গ ও আকৃতির সৌষ্ঠবই প্ৰধানত অঙ্কিত করিয়াছেন তাহার কোন সন্দেহ নাই । তাহদের প্রত্যেক মূৰ্ত্তিতে এবং চিত্রে মিশরবাসীর একই রূপকল্পনা দেপিতে পাই । মিশরবাসীর পোষাক-পরিচ্ছদ ও নাক, কান, চক্ষু, মস্তক, কেশ, মুখের আয়তন ও বিস্তৃতি সবই এক ছাচে তৈয়ারী বোপ হয়। কিন্তু শিল্পীরা যখন পারস্য, হোয়াইট, সীরিয়, লীবিয়া ইত্যাদি অন্যান্য শত্ৰু-জাতিসমূহের চিত্র আঁকিয়াছেন তখন তাহাদিগকে স্বতন্ত্র বেশে সজ্জিত দেখাইয়াছেন, তাহাদের স্বতন্ত্র গঠনাকৃতি এবং মুখের ও মস্তকের ভিন্নপ্রকার পরিমাণ বুঝাইয়াছেন। ইহার দ্বারা মিশরবাসীরা যে পার্শ্ববৰ্ত্তী নরসিমাজ হইতে শারীরিক গঠনে স্বতন্ত্র ছিল তাহ বেশ বুঝিতে পারি। কিন্তু আধুনিক বিশেরীন গ্রামের আকৃতি-সৌষ্ঠবযুক্ত বিচিত্র কেশাবিন্যাসশীল কৃষ্ণাভ নরসিমাজ প্রাচীন মিশরবাসীর বংশধর কি না। তাহ বিচার করা একপ্রকার অসম্ভব । * * বিশেরীন পল্লী ত্যাগ করিয়া আরও উত্তরে অগ্রসর হইলাম। সুবর্ণ মরুপথেই চলিতেছি। পূর্বে গ্রানাইট পাহাড়, পশ্চিমে খেজুরবনের ভিতর আসোয়ান-নগর, দূরে নাইলেবি অপারকুলস্থ সুবর্ণরঞ্জিত বালুকাময় শৃঙ্গ । খানিক পরে মৰ্ম্মরপর্ববতে পৌছিলাম । এই গ্রানাইটের জন্মনিকেতন, ইহাই একমাত্ৰ মৰ্ম্মরশৃঙ্গ । মৰ্ম্মরশিলার উৰ্দ্ধদেশে উঠিলাম। দেখিলাম যতদূর দৃষ্টি যায় কেবল স্বর্ণরেণুসদৃশ বালুকাবাশি এবং সুবর্ণ স্তপের আভা উজ্জল সূৰ্য্যকিরণের প্রভাবে চক্ষু ঝলসিয়া দিতেছে। “স্বদেশের ধূলি স্বর্ণরেণু বলি রেখো হৃদে এ ধ্রুবজ্ঞান।” মিশরের এই অঞ্চলবাসী জনগণ বঙ্গ কবিতার এই পদ যথার্থরূপে উপলব্ধি করিতে সমর্থ। শোণ ও ফন্তু নদীর বালুকারাশি দেখিয়া ভারতবাসী এই সুবৰ্ণভূমির কথঞ্চিৎ আভাস পাইবেন ।