পাতা:বহুবিবাহ.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।

হয়, তাহার পক্ষে অসবর্ণবিবাহে অধিকারবোধনার্থ শাস্ত্রকারের চতুর্থ বিধি প্রদর্শন করিয়াছেন। বিবাহবিষয়ে এতদ্ব্যতিরিক্ত আর বিধি দেখিতে পাওয়া যায় না। সুতরাং, স্ত্রী বিদ্যমান থাকিতে, নির্দিষ্ট নিমিত্ত ব্যতিরেকে, যদৃচ্ছাক্রমে পুনরায় সবর্ণবিবাহ করা শাস্ত্রকারদিগের অনুমোদিত নহে। ফলতঃ, সবর্ণাবিবাহান্তর যদৃচ্ছাক্রমে বিবাহপ্রবৃত্ত ব্যক্তির পক্ষে অসবর্ণাবিবাহের বিধি প্রদর্শিত হওয়াতে, তাদৃশ ব্যক্তির তথাবিধ স্থলে সবর্ণাবিবাহ নিষিদ্ধকল্প হইতেছে।

 এরূপ বিধিকে পরিসংখ্যা বলে। পরিসংখ্যাবিধির নিয়ম এই, যে স্থল ধরিয়া বিধি দেওয়া যায়, তদ্ব্যতিরিক্ত স্থলে নিষেধ সিদ্ধ হয়। বিধি ত্রিবিধ অপূর্ব্ববিধি, নিয়মবিধি ও পরিসংখ্যাবিধি। বিধি ব্যতিরেকে যে স্থলে কোনও রূপে প্রবৃত্তি সম্ভবে না, তাহাকে অপূর্ব্ববিধি কহে; যেমন, “স্বর্গকামো যজেত”, স্বকামনায় যাগ করিবেক। এই বিধি থাকিলে, লোকে স্বর্গলাভবাসনায় কদাচ যাগে প্রবৃত্ত হইত না; কারণ, যাগ করিলে স্বর্গলাভ হয় ইহা প্রমাণান্তর দ্বারা প্রাপ্ত নহে। যে বিধি দ্বারা কোনও বিষয় নিয়মবদ্ধ করা যায়, তাহাকে নিয়মবিধি বলে; যেমন, “সমে যজেত”, সম দেশে যাগ করিবেক। লোকের পক্ষে যাগ করিবার বিধি আছে; সেই যাগ কোনও স্থানে অবস্থিত হইয়া করিতে হইবেক; লোকে ইচ্ছানুসারে সমান অসমান উভয়বিধ স্থানেই যাগ করিতে পারিত; কিন্তু “সমে যজেত”, এই বিধি দ্বারা সমান স্থানে যাগ করিবেক ইহা নিয়মবদ্ধ হইল। যে বিধি দ্বারা বিহিত বিষয়ের অতিরিক্ত স্থলে নিষেধ সিদ্ধ হয়, এবং বিহিত স্থলে বিধি অনুযায়ী কার্য্য করা সম্পূর্ণ ইচ্ছাধীন থাকে, তাহাকে পরিসংখ্যাবিধি বলে; যেমন, “পঞ্চ পঞ্চনখা ভক্ষ্যাঃ”, পাঁচটি পরুনখ ভক্ষণীয়। লোকে যদৃচ্ছাক্রমে যাবতীয় পঞ্চনখ জন্তু ভক্ষণ করিতে পারিত, কিন্তু “পঞ্চ পঞ্চনখা ভক্ষ্যাঃ”, এই বিধি দ্বারা বিহিত শশ প্রভৃতি পঞ্চ ব্যতিরিক্ত কুক্কুরাদি যাবতীয় পঞ্চনখ জন্তু ভক্ষণনিষেধ সিদ্ধ হইতেছে;