পাতা:বহুবিবাহ.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
১৭

নিবেদন করিল। রাজা অবিলম্বেই তাঁহাদের সংবর্দ্ধনা করিবেন, এই স্থির করিয়া, ব্রাহ্মণেরা আশীর্বাদ করিবার নিমিত্ত জলগণ্ডুষ হস্তে দণ্ডায়মান ছিলেন; এক্ষণে, ভঁহার অনাগমনবার্ত্তাশ্রবণে, করস্থিত আশীর্বাদবারি নিকটবর্ত্তী মল্লকাষ্ঠে ক্ষেপণ করিলেন; ব্রাহ্মণদিগের এমনই প্রভাব, আশীর্বাদবারি স্পর্শমাত্র, চিরশুষ্ক মল্লকাষ্ঠ সঞ্জীবিত, পল্লবিত ও পুষ্পফলে সুশোভিত হইয়া উঠিল।[১] এই অদ্ভুত সংবাদ তৎক্ষণাৎ নরপতিগোচরে নীত হইল। রাজা শুনিয়া চমৎকৃত হইলেন। তাঁহাদের আচার ও পরিচ্ছদের কথা শুনিয়া, প্রথমতঃ তাঁহার মনে অশ্রদ্ধা ও বিরাগ জন্মিয়াছিল; এক্ষণে বিলক্ষণ শ্রদ্ধা ও অনুরাগ জন্মিল। তখন তিনি, গলবস্ত্র ও কৃতাঞ্জলি হইয়া, দ্বারদেশে উপস্থিত হইলেন, এবং দৃঢ়তর ভক্তিযোগ সহকারে সাষ্টাঙ্গ প্রণিপাত করিয়া, ক্ষমাপ্রার্থনা করিলেন।[২]

 অনন্তর, রাজা নির্ধারিত শুভ দিবসে সেই পঞ্চ ব্রাহ্মণ দ্বারা পুষ্টিযাগ করাইলেন। যাগপ্রভাবে রাজমহিষী গর্ভবতী ও যথাকালে পুত্রবতী হইলেন। রাজা, যৎপরোনান্তি প্রীত হইয়া, নিজ রাজ্যে বাস করিবার নিমিত্ত, ব্রাহ্মণদিগকে অত্যন্ত অনুরোধ করিতে লাগিলেন। ব্রাহ্মণেরা, রাজার নির্বন্ধ উল্লঙ্ঘনে অসমর্থ হইয়া, তদীয় প্রস্তাবে সম্মত হইলেন, এবং পঞ্চকোটি, কামকোটি,


  1. বিক্রমপুরের লোকে বলেন, বল্লালসেনের বাটীর দক্ষিণে যে দিঘী আছে, তাহার উত্তর পাড়ে পাকা ঘাটের উপর ঐ বৃক্ষ অদ্যাপি সজীব আছে। বৃক্ষ অতি বৃহৎ; নাম গজারিবৃক্ষ। এজাতীয় বৃক্ষ বিক্রমপুরের আর কোথাও নাই। ময়মনসিংহ জিলার মধুপুর পাহাড় ভিন্ন অন্যত্র কুত্রাপি লক্ষিত হয় না। মল্লকাষ্ঠ স্থলে অনেকে গজের আলানস্তম্ভ বলিয়া উল্লেখ করিয়া থাকেন।
  2. এই উপাখ্যান সচরাচর যেরূপ উল্লিখিত হইয়া থাকে, অবিকল সেইরূপ নির্দিষ্ট হইল।