পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
১৬৫

 তর্কবাচস্পতি মহাশয়, যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহকাণ্ডের শাস্ত্রীয়তা প্রতিপাদন করিবার নিমিত্ত, যে সমস্ত শাস্ত্র ও যুক্তি প্রদর্শন করিয়াছিলেন; তৎসমুদয় একপ্রকার আলোচিত হইল। তদ্বিষয়ে আর অধিক আলোচনার প্রয়োজন নাই। কেহ কেহ, এক সামান্য কথা উপলক্ষে, তাঁহার উপর দোষারোপ করিয়া থাকেন, তদ্বিষয়ে কিছু বলা আবশ্যক; এজন্য, আত্মবক্তব্য নির্দ্দেশ করিয়া, তর্কবাচস্পতিপ্রকরণের উপসংহার করিতেছি। তিনি গ্রন্থারম্ভে প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন,

 ধর্ম্মতত্ত্বং বুভুৎসূনাং বোধনয়ৈব মৎকৃতিঃ।

 তেনৈব কৃতকৃত্যোহস্মি ন জিগীষাস্তি লেশতঃ॥

 যাঁহারা ধর্ম্মের তত্ত্বজ্ঞান লাতে অভিলাষী, তাঁহাদের বোধ জন্ম-

 ইবার নিমিত্তই আমার যত্ন; তাহা হইলেই আমি কৃতার্থ হই;

 জিগীষার লেশমাত্র নাই।

অনেকে কহিয়া থাকেন, “জিগীষার লেশমাত্র নাই,” তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের এই নির্দ্দেশ কোনও মতে ন্যায়ানুগত নহে। তিনি, বাস্তবিক জিগীবার বশবর্ত্তী হইয়া, এই গ্রন্থের রচনা ও প্রচার করিয়াছেন; এমন স্থলে, জিগীষা নাই বলিয়া পরিচয় দেওয়া উচিত কৰ্ম হয় নাই। এ বিষয়ে আমার বক্তব্য এই যে, যাঁহারা এরূপ বিবেচনা করেন, কোনও কালে তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের সহিত তাঁহাদের আলাপ বা সহবাস ঘটিয়াছে, এরূপ বোধ হয় না। তিনি, জিগীষার বশবর্ত্তী হইয়া, গ্রন্থ প্রচার করিয়াছেন, এরূপ নির্দ্দেশ করা নিরবচ্ছিন্ন অর্ব্বাচীনতা প্রদর্শনমাত্র। জিগীষা তমোগুণের কার্য্য। যে সকল ব্যক্তি একবার স্বল্পকালমাত্র তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের সংস্রবে আসিয়াছেন, তাঁহারা মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করিয়া থাকেন, তাঁহার শরীরে তমোগুণের সংস্পর্শমাত্র নাই। যাঁহারা অনভিজ্ঞতাবশতঃ, তদীয় বিশুদ্ধ চরিতে ঈদৃশ অসম্ভাবনীয় দোষারোপ করিয়া থাকেন, তাঁহাদের প্রবোধনার্থে, বহুবিবাহবাদ গ্রন্থের কিঞ্চিৎ অংশ