পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
বহুবিবাহ।

সবর্ণা বিহিতা”। কিন্তু অবশিষ্ট ব্যাখ্যা কুল্লুকভক্টের ব্যাখ্যার ছায়াস্বরূপ; সুতরাং, কুল্লুকভট্টের ব্যাখ্যার ঐ অংশে যে দোষ দর্শিত হইয়াছে, তদীয় ব্যাখ্যাতে সেই দোষ সর্ব্বতোভাবে বর্ত্তিতেছে। তর্কবাচস্পতি মহাশয়, প্রসিদ্ধ বৈয়াকরণ হইয়া, শ্রেষ্ঠশব্দের প্রকৃত অর্থ অবগত নহেন, ইহা অত্যন্ত আশ্চর্য্যের বিষয়। তিনি বলিতে পারেন, আমি যেমন দেখিয়াছি, তেমন লিখিয়াছি; কিন্তু শাস্ত্রার্থসংস্থাপনে প্রবৃত্ত হইয়া, “যথা দৃষ্টং তথা লিখিতম্” এই প্রণালী অবলম্বন করিয়া চলা তৎসদৃশ প্রসিদ্ধ পণ্ডিতের পক্ষে প্রশংসার বিষয় নহে। যাহা হউক, পূর্ব্বে যেরূপ দর্শিত হইয়াছে তদনুসারে, “ক্রমশো বরাঃ” এ স্থলে “অবরাঃ” এই পাঠ প্রকৃত পাঠ, সে বিষয়ে আর সংশয় করা যাইতে পারে না। “অবরাঃ” এই পাঠ সত্ত্বেও রতিকামনায় বিবাহ করিতে ইচ্ছা হইলে, সবর্ণা ও অসবর্ণা উভয়বিধ কন্যা বিবাহ করিবেক, এ অর্থ কোনও মতে প্রতিপন্ন হইতে পারে না। অবরশব্দের অর্থ হীন, নিকৃষ্ট; বক্ষ্যমাণ অবরা কন্যা বিবাহ করিবেক, এরূপ বলিলে, আপন অপেক্ষা নিকৃষ্ট বর্ণের কন্যা বিবাহ করিবেক, ইহাই প্রতীয়মান হয়। পরবচনে সবর্ণা ও অসবর্ণা উভয়বিধ কন্যার নির্দ্দেশ আছে, যথার্থ বটে। কিন্তু পূর্ব্ববচনে, বক্ষ্যমাণ কন্যা বিবাহ করিবেক, যদি এইরূপ সামান্যাকারে নির্দ্দেশ থাকিত, তাহা হইলে কথঞ্চিৎ সবর্ণা ও অসবর্ণা উভয়বিধ কন্যার বিবাহ অভিপ্রেত বলিয়া প্রতিপন্ন হইতে পারিত। কিন্তু যখন বক্ষ্যমাণ অবরা কন্যা বিবাহ করিবেক এরূপ বিশেষ নির্দ্দেশ আছে, তখন আপন অপেক্ষা নিকৃষ্ট বর্ণের কন্যা অর্থাৎ অনুলোমক্রমে অসবর্ণ বিবাহ করিবেক, ইহাই প্রতিপন্ন হয়, এতদ্ভিন্ন অন্য কোনও অর্থ কোনও ক্রমে প্রতিপন্ন হইতে পারে না। অতএব, রতিকামনায় বিবাহপ্রবৃত্ত ব্যক্তি সবর্ণা ও অসবর্ণা বিবাহ করিবেক, তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের এই ব্যাখ্যা সম্পূর্ণ ভ্রান্তিমূলক। তিনি পাঠে ভুল করিয়াছেন, সুতরাং, অর্থে ভুল অপরিহার্য্য।