পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀՖՖ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড ধরছে। লোকটা আমাকে হামাগুড়ি দিয়ে আসতে দেখে নৌকা নিয়ে নদীর তীরে চলে আসে এবং আমার অনুরোধে আমাকে নদী পার করে দেয়। আমি অতিকষ্টে রামচন্দ্রপুর নামক একটা গ্রামে সন্ধ্যা ৭টার সময় একটা বাড়ীতে গিয়ে থাকার জন্য একটু জায়গা চাই কিন্তু ঐ বাড়িওয়ালা খান সেনাদের ভয়ে জায়গা দিতে অস্বিকার করে। আমি বলি আমার আর চলার শক্তি নাই তখন ঐ বাড়ীর ৪ জন লোক একটা তক্তায় করে আমাকে নিয়ে রামচন্দ্রপুর স্কুলে রেখে আসার কথা বলে সুন্দরপুর নদীর ঘাটে ফেলে রেখে আসে। আমি সেখানে আধামরা অবস্থায় পড়ে থাকি। তখন রাত্রি ১০-৩০ মিঃ। সেই সময় কোটচাঁদপুর হাট হতে জালাল নামক একটা লোক সুন্দরপুর নদীর ঘাটে আমাকে দেখে তাড়াতাড়ি করে মহেশপুর চলে এসে খবর দেয়। তৎক্ষণাৎ মহেশপুর হতে জালাল ও আরও চারজন লোক একটা বাঁশের মাচাল নিয়ে সেখানে চলে যায় এবং ঐ মাচালে করে আমাকে মহেশপুর নিয়ে আসে। আমাকে মহেশপুর নিয়ে এসে কোহিনুর বেগমের বাসায় রেখে এবং বজলু নামক একজন ডাক্তারের চিকিৎসায় ১০/১৫ দিন পর আমি সুস্থ হয়ে উঠলে ডাক্তার একটা গরুর গাড়ী ভাড়া করে আমার পরিবারের সকলকে ভারতে পাঠিয়ে দেয়। তারপর আমি ভারতে গিয়ে সিন্দ্রানী হাসপাতালে প্রায় দু’মাস চিকিৎসা করার পর সুস্থ হয়ে উঠি এবং বাংলাদেশ স্বাধিন হবার পরপরই বাংলাদেশে চলে আসি। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর আমি জানতে পারি আমার সঙ্গে যাদেরকে ধরে নেওয়া হয়েছে এবং আমার সঙ্গে যাদেরকে একই গর্তে পুতে রাখা হয়েছিল আমি ছাড়া আর সবাই নাকি মারা গেছে। স্বাক্ষর /শ্ৰী বিনয় কৃষ্ণ দত্ত ২৭/১/৭৩