পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৬৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খন্ড আজ এক আকস্মিক আক্রমণে ভারত-বাংলাদেশ সীমামেত্ম খুলনা জেলার খাঞ্জি ফাঁড়িটি মুক্তিফৌজ কমান্ডো দখল করে নেয়। এখানে মুক্তিফৌজের সদর দপ্তর থেকে জানা গছে, মুক্তিফৌজ পশ্চিম পাক বাহিনীকে ফাঁড়ি থেকে সরে যেতে বাধ্য করে। পশ্চিম পাক বাহিনীর পরিত্যক্ত প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র মুক্তিফৌজের দখলে আসে। ৫৬ জন পাক সেনা খতম কৃষ্ণনগর থেকে পি.টি.আই জানাচ্ছেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে কুষ্টিয়া জেলার মেহেরেপুর এলাকায় মুক্তিফৌজের বহুমুখী আক্রমণে অন্তত ৫৬ জন পাক সৈন্য নিহত হয়েছে। আজ এখানে সীমান্তেরর ওপার থেকে পাওয়া সংবাদে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় মেহেরপুর মুক্তিফৌজের গেরিলা বাহিনীর ব্যাপকভাবে মর্টার ও মেশিনগানের আক্রমণে পাক বাহিনীর সৈন্যরা নিহত হয়। মেহেরপুর শহরের ২০ মাইলের মধ্যে মহিষকু--, প্রাগপুর, কাঠলি, গোপালপুর, শৈবনগর, ইছাখালি, কামদেবপুর, কোলা নাতুধা, দর্শনা, শ্যামপুরে মুক্তিফৌজের গেরিলারা পাক বাহিনীর উপর আক্রমণ চালায়। বুমেরাং আগরতলা থেকে পি, টি, আই জানাচ্ছেন, সামরিক আইন প্রশাসন মুক্তিফৌজকে খতম করার জন্য বাংলাদেশের রাজাকার, মুজাহিদ ও আনসার-এই তিন ধরনের আধা সামরিক বাহিনী তৈরী করেছিল। কিন্তু এখন এই বাহিনীগুলো পাক বাহিনীর পক্ষে বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাক কর্তৃপক্ষ এদের সেতু ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান পাহারা দেবার জন্য নিযুক্ত করেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অন্তর্ঘাতমূলক কাজে বাধা দিতে না পারলে তাদের গুলি করা হবে, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে ও তাদের বাড়ীর মেয়েদের ওপর অত্যাচার করা হবে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়। সীমান্তের ওপর থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, এই আধা সামরিক বাহিনী অনেক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মুক্তিফৌজ ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। শ্রীহট্ট হাসপাতালে স্থান নেই আগরতলা থেকে পি, টি, আই জানাচ্ছেন, শ্রীহট্ট সিভিল হাসপাতালে জায়গা নেই বলে সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়েছে। মুক্তফৌজের হাতে আহত পাক সৈন্যরা এখানে রয়েছে। আজ সীমান্তের ওপর থেকে পাওয়া সংবাদে জানা গেছে, সাংঘাতিকভাবে আহত হয়ে পাঁচশোর বেশী অফিসার ও সৈন্য চিকিৎসার জন্য ঐ হাসপাতালে রয়েছে। গেরিলা তৎপরতা বৃদ্ধি মুজিবনগর থেকে ইউ, এন, আই জানাচ্ছেন, মুক্তিফৌজের গেরিলা তৎপরতা পুনরায় বৃদ্ধি পেয়েছে। সেনাবাহিনী স্পেশাল ট্রেন যাতে চলতে না পারে তার জন্য তাঁরা রংপুরের উত্তরে কাকিনা এলাকায় রেল লাইন তুলে ফেলেছে। মুক্তিফৌজের পোঁতা মাইন বিস্ফোরণে ৪ জন পাক সৈন্য নিহত হয়েছে। রংপুর এলাকায় থানা আক্রমণ করে মুক্তিফৌজ গেরিলারা ৬ জন কনষ্টেবলকে খতম করে এবং তাদের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নেয়। গেরিলারা কয়েকটি টেলিফোন লাইন কেটে দেয়।