পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



684

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খণ্ড

ওরা চরণে দলে গেল মরণ-শঙ্কারে

(নিজস্ব বার্তা পরিবেশক)

 সিলেট জিলার অন্তর্গত মৌলভীবাজার মহকুমার বিভিন্ন স্থানের মুক্তিযুদ্ধে পার্টির আরও তিনজন সমর্থক শহীদ হইয়াছেন। পাকিস্তানী হানাদার সৈন্যদের বিরুদ্ধে অসমসাহসিক লড়াইয়ে তাঁহারা বীরের মৃত্যুবরণ করেন। ইহাদের সহসিকতা ও দেশপ্রেম চিরদিন মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রানিত করিবে।

 (১) সম্প্রতি কমলপুর সেক্টরে এক গেরিলা অভিযানে শহীদ হন সিলেট সদর থানার জামালপুরের সুরুজ।

  তিনি কালীপুর চা-বাগানে গেরিলা অভিযানে গিয়াছিলেন।

 (২) ফেঞ্চগঞ্জ সারকারখানায় অভিযান চালাইতে গিয়া নেওয়ার আলী গ্রেফতার হন। স্থানীয় দালালরা

  তাঁহাকে ধরাইয়া দিয়াছিল। পরে পাক সৈন্যরা তাঁহাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। শহীদ নেওয়ার

  আলীর বাড়ী সিলেট সদর থানার কালিমুগ বাজারে।

 (৩) বিয়ানীবাজার থানা ন্যাপের সহ-সভাপতি আবদুল খালেক সম্প্রতি পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর

  হাতে গ্রেফতার হন। এবং পরে তাঁহাকে পিটাইয়া মারিয়া ফেলা হয়।

 অপর একজন ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী বড়লেখা থানার দিলখুসা চা বাগানে গেরিলা অভিযানে যাইয়া গুরুত্বররূপে আহত হন।



-মুক্তিযুদ্ধ, ৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
* * * * *

যশোহর কুষ্টিয়া এবং খুলনার বিস্তীর্ণ এলাকা মুক্ত

যশোরঃ

 ২রা আগষ্ট মুক্তিবাহিনী যশোরের লেবুতলা, রায়পুর ও হাসিমপুর থেকে পাক বাহিনীকে তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। আমাদের রণাঙ্গন প্রতিনিধি মুক্তাঞ্চল ঘুরে এসে বলেছেন, এখানে গত কয়েকদিনের যুদ্ধে প্রচুর খান সেনা খতম হয়েছে। মুক্তিবাহিনীর ব্যাপক আক্রমণে পাক দখলদার সৈন্যরা পালিয়ে যায়। এই সমস্ত এলাকা এখন মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। এখানে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়ে স্বাধীনতা রক্ষার অতন্দ্র প্রহরীরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর এক খবরে জানা গেছে, গত ২৯ শে আগষ্ট রাতে মুক্তিসেনারা নগহাটার পাক ছাউনি আক্রমণ করে ১৩০ জন পাক সেনাকে খতম করেছেন।

শেষ সংবাদ-

 ৩রা আগষ্ট খুলনা বসন্তপুরে মুক্তিফৌজ একখানা গানবোট ধ্বংস করে দিয়েছেন।

উকসা-গোবিন্দপুরে নয় ঘণ্টা যুদ্ধঃ গোবিন্দপুর মুক্ত

খুলনাঃ

 ৩০ শে আগষ্ট। উকসা-গোবিন্দুরে মুক্তিবাহিনীর শক্তিশালী ঘাঁটির উপর প্রায় চারশত পাক সেনা আক্রমণ চালালে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। সকাল নয়টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত যুদ্ধ চলে। বাংলাদেশের বীর বিপ্লবী মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘ নয় ঘণ্টা যুদ্ধের পর শত্রুসেনাদের তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়।



-বিপ্লবী বাংলাদেশ, ৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১