পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



686

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র: একাদশ খণ্ড

আবার দীর্ঘদিন যাবৎ বিমান বাহিনীকে কাজে লাগাচ্ছে। বোমা ফেলছে যত্রতত্র। মুক্তিবাহিনীর এতে কোন ক্ষতি হচ্ছে না, কারণ লড়াইয়ের এই নতুন পর্যায়ে তাদের প্রস্তুতি ও রণকৌশল তাঁরা নিখুঁত করেছেন।

  গত সাত দিন ধরে পাক ফৌজ মুক্তিবাহিনীর হারে দারুণ মার খাচ্ছে। পাক ফৌজ আর রাজাকার মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা এই কয়দিনে প্রায় দু’শ। কয়েজন পাক সেনা বন্দীও হয়েছে। পাক ফৌজ এখন বিমান বাহিনীর সমর্থন ছাড়া মুক্তিবাহিনী বিরুদ্ধে তৎপরতায় নামতে ভয় পাচ্ছে।

 উঃ পুঃ সেক্টরে মুক্তিবাহিনী বত্রিশ ঘণ্টা ধরে পাক ফৌজকে নিযুক্ত রাখে। ওই লড়াইয়ে একজন পাক মেজরসহ ৩২ জন পাক সেনা ও ৫০ জন রাজাকার নিহত হয়। যশোরে ধুলিয়ানঘাটে এক সংঘর্ষে ৫ জন পাক সেনা নিহত হয়েছে। শ্রীহট্ট ও কুমিল্লা জেলায় ৫৭ জন পাক সেনা ও ২৪ জন রাজাকার; কুষ্টিয়া ও রাজশাহী জেলায় ১০ জন পাক সেনা ও ২০ জন রাজাকার নিহত হয়েছে। মুক্তিবাহিনী সরাসরি পাক শিবিরগুলির উপর আক্রমণ চালিয়ে তারপর গেরিলা কায়দায় নিজেদের গুপ্তঘাঁটিগুলিতে ফিরে যাচ্ছে। পাকফৌজ তাদের পাত্তা পাচ্ছে না।



রাজশাহী বেতার কেন্দ্রটি মুক্তিবাহিনী দুবার স্তব্ধ করে দেয়। চট্টগ্রামেও তারা সক্রিয়। -পি টি আই



-যুগান্তর, ৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
* * * * *

কাউখালী থানা, কাঁঠালিয়া থানা, ভাণ্ডারিয়া থানা ধ্বংসঃ ৮৭ জন পাঞ্জাবী

পাক পুলিশ নিহতঃ প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার

বরিশালঃ

 বিলম্বে প্রাপ্ত এক খবরে জানা গেছে, মুক্তিবাহিনী কাউখালী থানা আক্রমণ করে থানাটি ধ্বংস করে দিয়েছে। থানার সমস্ত রাইফেল মুক্তিবাহিনীর হস্তগত হয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণের কাছ থেকে জানা যায় কাউখালীর কোন এক স্থানে মুক্তিবাহিনীর ঘাঁটি ছিল। এই সংবাদ স্থানীয় থানার দারোগা এবং শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান জানতে পেরে কিছু দালাল পুলিশ এবং রাজাকার নিয়ে ঘাঁটির উপর হামলা চালায়। মুক্তি কমাণ্ডোদের প্রচণ্ড মারের মুখে হানাদাররা পালিয়ে যায়। কিন্তু দারোগা এবং চেয়ারম্যান মুক্তিবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। সংবাদ পেয়ে পরের দিন বরিশাল থেকে পাক বর্বর সৈন্যরা গান বোট নিয়ে কাউখালীর উপর ব্যাপক হামলা চালায়। এতে প্রায় পাঁচ শতাধিক নিরীহ মানুষ মৃত্যুবরণ করে। মুক্তিবাহিনী কিছুটা সরে এসে আবার আঘাত হানার প্রস্তুতি চালাচ্ছে। আর এক খবরে জানা যায়, মুক্তিবাহিনী কাঁঠালিয়া এবং ভাণ্ডারিয়া থানা আক্রমন করে ৮৭ জন পাঞ্জাবী সৈন্য খতম করেছে।

পটুয়াখালীঃ

 জানা গেছে, আমাদের অসমসাহসী মুক্তিবাহিনী বেতগী থানার কুখ্যাত দালাল কাদের ও জেন্নাতকে হত্যা করেছে। এছাড়া সমাজবিরোধী কাজের জন্য শান্তি কমিটির সদস্য ফজলু, বাখরুদ্দীন, হামিদ ও আমু কেরানীর সমস্ত সম্পত্তি স্থানীয় গরিব জনগণের মধ্যে বিতরণ করে দিয়েছে। মুক্তিবাহিনী মঠবাড়িয়া থানার কুখ্যাত মুসলিম লীগ দালাল সামাদ মাষ্টার ও মান্নানকে হত্যা করেছে। এছাড়া দাউখালী দেলোয়ারসহ ৫ জন ডাকাতকে হত্যা করেছে।

খুলনাঃ

 আমাদের রণাঙ্গন প্রতিনিধি খুলনার বিভিন্ন শহর ঘুরে এসে জানিয়েছেন, মুক্ত অঞ্চলে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়ছে। এই সফরকালীন সময়ে আমাদের প্রতিনিধি মুক্তাঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধাদের কতিপয় ঘটিতে প্রবেশ করার সুযোগ পান। এ সকল স্থানে ক্যাপ্টেন নুরুল হুদা (হীরু), ক্যাপ্টেন মাহবুব, লেফটেন্যাণ্ট মোহাম্মদ