পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/২৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খণ্ড
২৩৯

ভার নিক। কে করবে না করবে বলতে পারব না, আমাদের কথা হচ্ছে এটা কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্ন দায়িত্ব এবং তাদের এখানে লোক পাঠিয়ে ব্যবস্থা করা যাতে তাদের খেটে খাবার ব্যবস্থা হয়। যারা সক্ষম তারা যাতে এখানে কাজকর্ম করে খেতে পারেন শুধু বসে না খেতে হয় তার ব্যবস্থা করতে হবে। যাঁরা আজ ওখানে লড়াই করছেন তাঁরা পৃথিবীর গণতান্ত্রিক মানুরে জন্য লড়াই করছেন, এজন্য আমাদের এইসব ব্যবস্থা করা দরকার। তারপর যেটা আছে সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেইখানে আসল বিচার হবে। আমি বলেছি প্রস্তাবের মধ্যে এক হয়ে বলেছি কেন্দ্রীয় সরকার যদি এই দাবিগুলি মেনে না নেন তাহলে আমরা বলছি এই প্রস্তাবের মধ্যে সরকার এবং জনগণকে অ্যাসেম্বলি থেকে ডাক দেওয়া হচ্ছে অর্থাৎ পশ্চিম বাংলার সরকার এবং জনগণকে ডাক দেওয়া হচ্ছে আপনারা চাপ সৃষ্টি করুন, ব্যবস্থা করুন যাতে ওরা এটা মেনে নেন। এইটা আমি জানি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দেখব, তাঁদের কি অসুবিধা আছে। আজকে প্রধানমন্ত্রী মিটিং ডেকেছেন দিল্লীতে। আমাদের প্রতিনিধিরা সেখানে গিয়েছেন। কি হবে না সেটা নিশ্চয় বিরোধী দলের লোকেরা বিচার করবেন। অন্য কোন রকম রাজনীতি করতে চাই না। এটা করছেন না কেন তা বুঝতে পারছি না। আমরা কোন বড় রকমের ঝুঁকি আছে বলে মনে করছি না। আমরা মনে করি, এটা মেনে নেওয়া উচিত। আমরা এটা প্রতিজ্ঞা করেছি এই প্রস্তাব গ্রহণ করে সে প্রতিজ্ঞা করেছি, এই কথা বরতে চাই যে, আমরা সদস্যরা যাঁরা ভোট দেবেন এই প্রস্তাবের পক্ষে তাঁরা বুঝেশুনে দেবেন পরবর্তীকালে আমাদের আন্দোলন করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে বাধ্য করতে হবে, এই দাবিগুলো যা আছে তা যাতে মেনে নেওয়া হয়।

 আমার এই বিষয়ে একটা সুপারিশ আছে। আমরা যেন শুধু একটা চিঠি পাঠিয়েই চুপ করে বসে না থাকি, অর্থাৎ প্রস্তাবের একটা কপি পাঠিয়ে দিয়েই শুধু এতে আমরা সন্তুষ্ট না হই। আমরা যাঁরা এই প্রস্তাব গ্রহণ করছি তার মধ্যে কয়েকজন প্রতিনিধি যদি দিল্লীতে গিয়ে সেখানকার সরকারের কাছে উপস্থাপিত করতে পারি এবং আমাদের এই প্রস্তাব নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারি। যদি তাঁদের কোন অসুবিধা থাকে তাহলে আমাদের বলবেন এবং আমাদের বক্তব্য যাতে এক সঙ্গে রাখতে পারি তার ব্যবস্থা করুন।

 আমি বসবার আগে শুধু একটা কথা বলতে চাই। এই প্রস্তাব অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি। আমরা মনে করি এটা আমাদের জীবনমরণের সংগ্রাম, গণতান্ত্রিক সংগ্রাম এই কথাগুলো বলে বলব আমি আশা করি এখানকার সদস্যরা ভুল বুঝবেন এবং আমরা যারা এই বিরোধী দলে আছি, এই পক্ষে আছি আমাদের সরকারের সঙ্গে কোন একটি ক্ষেত্রেও মিল নেই, কোন মৌলিক ব্যাপারে কোন বিষয়ে মিল নেই। আমরা এই সরকারের যত তাড়াতাড়ি পতন হয় তাই চাই। কিন্তু যতদিন এই সরকার আছে, যতদিন আমরা বিরোধী আছি এবং এর মধ্যে আমাদের উপর যত আঘাত হোক, আমাদের রক্ত ঝরিয়ে, আমাদের জেলে পাঠিয়ে, গুণ্ডার আক্রমণ, পুলিশের আক্রমণ, কংগ্রেসী আক্রমণ- যত কিছুই হোক এবং এই রক্তাক্ত অবস্থায়, এই রকম অশ্রু বিসর্জনের সময় বাংলাদেশের মানুষের এই সংগ্রামে এই প্রতিশ্রুতি দিতে চাই যা কিছুই হোক আমরা আছি তাঁদের সঙ্গে। এই কথা বলে এই প্রস্তাবকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করছি।

(At this stage the House was adjourned for twenty minutes.)

(After adjournment)

 শ্রী আবদুস সাত্তারঃ মাননীয় স্পীকার মহাশয়, আমাদের মূখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সম্পর্কে যে প্রস্তাব এই হাউস-এ এনেছেন তা আমি সমর্থন করছি এবং সমর্থনের পেছনে আমার যে কারণ তা আপনার সামনে রাখবার চেষ্টা করব। আমাদের বিরোধী দলের নেতার বক্তব্যের প্রথম অংশটা আমার সত্যিই ভাল লেগেছিল। তিনি বারবার বলেছেন এই রেজলিউশন-এর পেছনে কংগ্রেসের সত্যিকারের অনেস্টি আছে কিনা সে সম্বন্ধে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এবং তা আমি সরকার পক্ষের তরফ থেকে বলছি আজ যে প্রস্তাব আনয়ন করা হয়েছে সেই প্রস্তাবের পেছনে আমাদের সম্পূর্ণ সমর্থন আছে এবং আন্তরিকতা আছে। আমাদের প্রথম যে ক্যাবিনেট মিটিং হয় সেই ক্যাবিনেট মিটিং-এ আমরা এই প্রস্তাব নিয়েছিলাম এবং প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের এইি সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলাম। এটা ঠিক আমি তাঁর সঙ্গে একমত যে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান হয়েছিল। কিন্তু আজ