পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৩০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খণ্ড
২৭৯

দিচ্ছেন না। বড় গলা করে জোতদার জামিদারদের বিরুদ্ধে বলেছিলেন, কিন্তু বাংলাদেশের অবস্থা আমরা দেখতে পাচ্ছি। সামান্য গরীব জমির মালিক সী আর পি-র অত্যাচারে জোতদাদের সহযোগিতায় জমি থেকে উৎখাত হচ্ছে। এই সমস্ত দেখে আমাদের লজ্জা ক্ষোভ লাগে। আমরা সরকারের চরিত্র দেখতে পাচ্ছি। এই সরকারের কাছে মৌলিক একটা প্রস্তাব দিলেই আমাদের সমস্ত দাবি আদায় হবে না। আমাদের দাবি আদায় করতে হবে আন্দোলনের মাধ্যমে। গণ- আন্দোলন ছাড়া প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের কাছ থেকে কোন দাবি আদায় করা যাবে না। মিঃ স্পীকার, স্যার, কবির সুরে একটা কবিতা আমার মনে জেগে উঠছে-

সাবাস বাংলাদেশ-
এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়,
জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার তবু
মাথা নোয়াবার নয়।

 মিঃ স্পীকার, স্যার, বাংলাদেশের যে সমস্ত অগনিত যুবক, ছাত্র, অগণিত ভাই, বোন, যে বিপ্লবী চেতনা, যে বিপ্লবী উন্মেষ তুলে ধরেছেন তাকে অভিনন্দন জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি।

 শ্রী সুধীরচন্দ্র বেরাঃ মাননীয় স্পীকার মহোদয়, আমি মুখ্যমন্ত্রী কর্তৃক যে প্রস্তাব এই সভায় আনা হয়েছে তা সর্বান্তঃকরনে এবং পুর্ণভাবে সমর্থন করি। আমি এখান দেখলাম আলোচনার মাধ্যমে এই প্রস্তাব সমর্থণ করতে গিয়ে কোন কোন রাজনৈতিক দল নিজেদের রাজনৈতিক মূলধন বাড়াবার চেষ্টা করেছেন। এটা আমি তীব্রভাবে নিন্দা করছি। পূর্ব বাংলার এই স্বাধীনতা সংগ্রাম বিশেষ গুরুত্বপুর্ণ। কারন স্বাধীনতার জন্য মানুষের সংগ্রাম জন্মগত। মানণীয় অধ্যক্ষ মহাশয়, আপনি যদি ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে দেখেন তাহলে দেখবেন মানুষ তার আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার অর্জনের জন্য অনেক রক্ত, অনেক জীবন দিয়েছে। আমেরিকার স্বাধীনতার যুদ্ধ থেকে আরম্ভ করে ফরাসী বিপ্লব প্রভৃতির মধ্য দিয়ে এ কথাই স্বীকৃত হয়ে এসেছে যে প্রতিটি জাতির তার স্বাধিকার রক্ষার অধিকার থাকবে, তার আত্মনিয়ন্ত্রাণাধিকার থাকবে। পূর্ব বাংলার লোক যখন তাদের সেই স্বাধিকার প্রয়োগ করতে গেল তখন সাম্রাজ্যবাদী মদগর্বী ইয়াহিয়ার আঘাত লাগল; তিনি পাল্টা আঘাত লাগালেন। মাননীয় স্পীকার মহাশয়, আপনি জানেন পূর্ব বাংলার যে সংগ্রাম, হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্টানের যে মিলিত সংগ্রাম এর নজির ভারতবর্ষের ইতিহাসে পাওয়া খুবই দুর্লভ এবং এই সংগ্রামের নজির পৃথিবিতে আছে কিনা সন্দেহ। এই স্বাধীনতা সংগ্রাম তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত দেখতে পাই। প্রথম হচ্ছে - অহিংস অসহযোগ আন্দোলন, দ্বিতীয় হচ্ছে- সশস্ত্র সংগ্রাম এবং তৃতীয় হচ্ছে- স্বাধীনতা ঘোষণা। ভারতবর্ষের মধ্যে অনেক অভিযোগ করেছেন- কংগ্রেস সরকার দেড় মাস পর্যন্ত ঘুমিয়েছিলেন। তাঁরা যদি একটু ভেবে দেখেন তাহলে দেখবেন বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষনা করার আগ পর্যন্ত এটা পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার ছিল এবং আন্তর্জাতিক আইনে আমরা সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারতাম না। কিন্তু যে মুহুর্তে তাঁরা সরকার তৈরী করেছেন এবং স্বাধীনতা ঘোষনা করেছেন সেই মুহুর্ত থেকে সংগ্রামী রূপ বদলে গিয়েছে এবং আজকে তাদের স্বীকৃতি দিলে সার্বভৌম সরকার হবে এবং তার উপর হস্তক্ষেপ করলে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের আওতায় পড়ে। দুঃখের বিষয়, আজ বড় শক্তি, বিগ পাওয়ার্স যাদের বিগ ব্রাদার্স হওয়া উচিত ছিল, তারা স্বীকৃতি দেয় নি এবং আমরা স্বীকৃতি দাবি করছি কারণ আমরা মনে করি বাংলাদেশ সরকার।

 Government of the people’ by the people and for the people shall never perish from this earth.

 এই বলে বাংলাদেশের সরকার এবং জনগণকে অভিন্দন জানিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করছি।

 Shri A. II. Bester witch: Mr. Speaker, Sir, before we finish I rise on a point of order. Yesterday we had a talk regarding transport arrangement but it is unfortunate that from the Government side we have received on information, or even an indication that