শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
---|---|---|
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রস্তাব: ‘বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র ও সামরিক শিক্ষাসহ’ সর্বপ্রকার সাহায্য দিতে হবে। | কালান্তর | ২৬ জুন, ১৯৭১ |
অস্ত্র, সামরিক শিক্ষা ও সর্বপ্রকার সাহায্য দিতে হবে
বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে কমিউনিস্ট পার্টির দাবী
“বাংলাদেশকে মুক্ত করার জন্য বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র ও সামরিক শিক্ষাসহ সর্বপ্রকার সাহায্য করতে হবে”- ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য পরিষদের এক বিবৃতিতে এই দাবী করেন। বাংলাদেশের সরকারকে এখনো স্বীকৃতি না দেওয়ার জন্য এই বিবৃতিতে ভারত সরকারের সমালোচনা করা হয়েছে। এবং অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য দাবী জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের সমস্যাকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে দেখার জন্য এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা ও শরনার্থীদের সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য কমিউনিস্ট পার্টি সদস্য, সমর্থক এবং জনসাধারণকে আবেদন জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি জাতীয় সংহতিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী সম্মেলন আহ্বানের জন্য ও পার্টি দাবী জানিয়েছেন।
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পরিষদ গত ১৬ ও ১৭ জুন তারিখে দুই দিনব্যাপী অধিবেশনে মিলিত হন। এই অধিবেশনের অন্যান্য আলোচ্যসূচীর মধ্যে বাংলাদেশের বর্তমান মুক্তিযুদ্ধেরও পর্যালোচনা হয়। এই অধিবেশনে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শ্রী রাজেশ্বর রাও এবং কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শ্রী ভবানী উপস্থিত ছিলেন। রাজ্য পরিষদের এই সভায় রাজ্য জুড়ে যে নৃশংস ভ্রাতৃঘাতী আন্তঃপার্টি সংঘর্ষ চলছে সে বিষয়েও আলোচনা হয় এবং এই হানাহানি বন্ধের জন্য কিছু কার্যকরী ব্যবস্থা সম্পর্কেও এই সভায় আলোচিত হয়।
অধিবেশন শেষে এক বিবৃতিতে বলা হয় যে, বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সমর্থন ও সংহতি জানানো সারা ভারতবর্ষের জনগণের এখন জরুরী কর্তব্য বলে কমিউনিস্ট পার্টির পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য পরিষদ মনে করেন। প্রায় ষাট লক্ষাধিক মানুষ ইয়াহিয়া চক্রের অত্যাচারের মুখে দেশ ছেড়ে এই দেশে শরণার্থী হিসাবে এসেছেন। মুক্তিযোদ্ধারা যাতে তাদের দেশকে যথাসত্ত্বর মুক্ত করতে পারে তার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র, সামরিক শিক্ষা ও অন্যান্য সম্ভাব্য সর্বপ্রকার সাহায্য করতে হবে। এর ফলেই গৃহহীন মানুষ তাদের ঘরে ফিরে যেতে পারবে বলে পরিষদ মনে করে। এই প্রয়োজনেই বাংলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন বলে রাজ্য পরিষদ মনে করে। এই স্বীকৃতি দানের বিষয়ে কিছু না করার জন্য কমিউনিস্ট পার্টির রাজ্য পরিষদ ভারত সরকারের সমালোচনা করেছেন এবং পর্টি তার সমস্ত শাখাকে বাংলাদেশের স্বীকৃতির দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য বলেছেন।
পার্টির জন্য পরিষদ তার সমস্ত শাখাকে বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরের ব্যবস্থাদি উন্নতি করার জন্য কাজ করতে বলেছেন। শরণার্থী শিবিরে যাঁরা আছেন তাঁরা যাতে আশ্রয়, খাদ্য, ওষুধ রীতিমতো পান এবং যাঁরা বিভিন্ন ব্যক্তির কিংবা আত্মীয় বাড়িতে আছেন, তাঁদের প্রয়োজনে তাঁরাও যাতে সাহয্য পান তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে হবে। বৃদ্ধ, শিশু ও মহিলাদের যাতে যথাসম্ভব ভালোভাবে রাখা যায় যুবকদের যাতে