পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খণ্ড
১৯
শিরোনাম সূত্র তারিখ
বাংলাদেশের আন্দোলনকে সমর্থনের জন্য বিশ্বশান্তি কংগ্রেসের প্রতিনিধিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর আহ্বান দৈনিক ‘আনন্দবাজার’ ৫ মে, ১৯৭১

পূর্ববঙ্গের স্বাধীনতা আন্দোলন সমর্থন করুন:

বিশ্বশান্তি কংগ্রেসে ইন্দিরাজীর বার্তা

 বুদাপেস্ট, ১৩-মে—আজ এখানে বিশ্বশান্তি কংগ্রেসের দিনব্যাপী অধিবেশন শুরু হয়েছে। অধিবেশনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সমর্থন জানানোর জন্য ভারতের বক্তব্য অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিরা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও একজন প্রতিনিধি সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।

 ৮০টি দেশের প্রায় ৭০০ প্রতিনিধির সামনে প্রকাশ্য অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর বার্তাটি পড়ে শোনানো হয়। তাতে শ্রীমতি গান্ধী বলেছেন, ভারতের অবস্থায় পূর্ববঙ্গের ঘটনাবলীতে উদাসীন থাকা কঠিন।

 প্রধানমন্ত্রী ওই বার্তায় বলেছেন, প্রায় ২০ লক্ষ উদ্বাস্তু ভারতে চলে এসেছেন—ফলে আমাদের উপর প্রচণ্ড চাপ পড়েছে। এই উদ্বাস্তুরা যাতে নিরাপদে মর্যাদার সঙ্গে দেশে ফিরে যেতে পারেন—তেমন অবস্থা সৃষ্টি করার জন্য পাকিস্তানকে অবশ্যই বাধ্য করতে হবে।


 শ্রীমতি গান্ধী বলেছেন, আশা করি, বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানবসমাজ মানবিক অধিকার রক্ষার জন্য উঠে দাঁড়াবেন। পূর্ববঙ্গের জনসাধারণের ন্যায্য দাবি, তাঁদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই তাঁদের দেশ শাসন করবেন। বিশ্বের মানুষ, আশা করি, এই দাবি সমর্থন করবেন এবং তাঁদের ওই অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য সচেষ্ট হবেন। এই গুরুত্বের পরিস্থিতি এবং লক্ষ লক্ষ নির্দোষ মানুষের অবর্ণনীয় দুর্দশায় আমার মন ভারাক্রান্ত।

 ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য শ্রী অমৃত নাহাত বার্তাটি পড়ে শোনান। তাঁকে প্রবল হর্ষধ্বনি জানিয়ে সদস্যরা অভিনন্দন জানান।

 ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতা শ্রীকৃষ্ণ মেনন বলেন, পূর্ববঙ্গে গৃহযুদ্ধ নয়—গুলি চালিয়ে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দমন করা হচ্ছে। তিনি হিটলারী অত্যাচারের সঙ্গে পূর্ববঙ্গের ঘটনার তুলনা করেন।

 শ্রী মেনন আরও বলেন, পূর্ববঙ্গ বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম জাতীয় এলাকা এবং হাংগারির চেয়ে তার জনসংখ্যা ১০ গুণেরও বেশি।

—পি টি আই