পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৭০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Va& বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খন্ড ইয়াহিয়া খাঁ হয়ে গেল, এখনকার সরকারকে জেলে আটক করল এবং জনসাধারণকে প্রহার করা শুরু করে দিল আমি সরকারকে জিজ্ঞেস করব তখন কিঅবস্থা হবে। আজ বাংলাদেশের সংগ্রাম যারা করছে তারা গণতন্ত্রের জন্য, প্রজাতন্ত্রের জন্য এবং সমগ্র বিশ্বের জন্য লড়ছে। আমার ক্ষোভ রয়েছে রাশিয়া ও আমেরিকার ওপর। তারা জনগণের প্রতিনিধিবৃন্দের ওকালতী করেন, প্রজাতন্ত্রের দোহাই দেন কিন্তু বাংলাদেশের সাহায্যের জন্য অগ্রসর হচ্ছেন না। চীন নিজেকে জনগণের সবচেয়ে বড় ত্রাণকর্তা মনে করে, সেও আজ বাংলাদেশের জনগণকে নির্মুল করতে, তাদের স্বাধীনতাযুদ্ধে ইয়াহিয়া খাঁর সরকারকে সর্বতোভাবে সাহায্য করছে এবং বলছে আমরা ইয়াহিয়া খাঁর হিটলারশাহীকে সাহায্য করব। আজ যাঁরা গণতন্ত্রপ্রিয় লোক আছেন, তাঁরা কোথায় চলে গেছেন, বাংলাদেশে যে গণহত্যা চলছে তা থামানোর চেষ্টা কেন করা হচ্ছে না এবং তার বিরুদ্ধে কেন আওয়াজ তোলা হচ্ছে না? এটি মহাভারতের মত ব্যাপর হয়ে গেছে। যখন দ্রৌপদীর শাড়ী হরণ করা হয়েছিল তখন যত বড় বড় ব্যক্তি ছিলেন ভীষ্ম পিতামহ এবং কৃষ্ণ এরা নিস্ত্রীয়ভাবে তাকিয়ে ছিলেন এবং এরই ফলে তখন মহাভারতযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। আজ বাংলাদেশে ৭ লক্ষ লোক মেরে ফেলেছে। দ্রৌপদীর শাড়ী হরণ করা হয়েছিল। তখন মহাভারত যুদ্ধ হয়েছিল আজ এত মানুষ নিহত হয়েছে তবুও ভারতে জনগণ চুপচাপ বসে আছেন। রাবণ সীতাকে লঙ্কা নিয়ে গিয়েছিল, যার ফলে যুদ্ধ হলো এবং রামায়ন রচিত হলো। কংগ্রেস ও মুসলীম লীগ দেশকে বিভক্ত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগণ ভুল করেনি, ভুল করেছিলেন আপনারা যারা দেশ ভাগ করেছিলেন। জনসাধারণের কোন ভুল ছিল না। আপনাদের দরুণ দেশ ভাগ হয়েছে, যারা ডিক্টেটর যারা সেনা পরিচালক যারা গ্রামের পর গ্রাম জুলিয়ে দিয়েছে। একথা বলতে আমার লজ্জা হচ্ছে যে বাংলাদেশে নারীদের ওপর কি কি অত্যাচার হয়েছে। এসব কথা আমি সংবাদপত্র পড়ে বলছি না, আমি সেখানে যাই, তাদের লোকজনদের সাথে সাক্ষাৎ করি এবং এই ভিত্তিতে আমি বলতে পারি, কোন মুর্দা লোকও যদি ওসব কথা শনে তবে তার মধ্যে ক্রোধের সঞ্চার হবে এবং ইচ্ছে হবে অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে গিয়ে তাদের হেফাজত করতে। পরিস্থিতি এরূপ কিন্তু আমরা কিছু করছি না। এক কোটি রিফিউজী এসে যাবে, সরকার বলছেন, ৭০ লক্ষ এসে পড়েছে। শ্রী নাগেরশ্বর প্রসাদ শাহীঃ ৮০ লক্ষ। শ্ৰী শীলভদ্র ইয়াজীঃ যখন গণতন্ত্রের সংগ্রাম চলছে তখন শরণ সিংহ ভীষ্ম পিতামহের মতন কি বসে আমেরিকাও বলছে যে, আমরা সারা পৃথিবীর গনতন্ত্রের জন্য লড়ছি তাহলে সে কি করছে? ওখানে গণতন্ত্রের কবর হচ্ছে এবং এর সাথে সাথে যে গণতন্ত্রপ্রিয় লোকেরা ভোট দিয়েছিল তাদেরকে বেছে বেছে মারা হচ্ছে। হিন্দু মুসলিম প্ৰসংগ আমি তুলছি না, হিন্দুদের মধ্যে একশভাগই তো মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন ছিল--- শ্রী যোগ্রেন্দ মিত্র (উত্তর প্রদেশ): আপনার জানা আছে একশ ভাগই ছিল? শ্ৰী শীলভদ্র ইয়াজীঃ আপনি এখানে বসে আছেন, আমি সেখানে যাই মুক্তিফৌজদের সাথে দেখা করে আসি, আপনি শুধু লক্ষণেী পর্যন্ত যান, আপনি তো শুধু দর্শক। আমি বলছিলাম গণতন্দ্রের যে সংগ্রাম চলছে তাতে আমাদের করণীয় কি। এখন স্বীকৃতি দেয়া হবে কি না। আমাদের আজাদ হিন্দের সরকার গঠিত হয়েছিল নেতাজীর নেতৃত্বে, কোন সরকার স্বীকৃতি দিল কি দিল না এটাও মানি না। পাকিস্তান আজ বাঙ্গছে ভুট্টোর নিবুদ্ধিতায়, ইয়াহিয়া খানের ভুলে পাকিস্তান ভাঙ্গনের প্রান্তে এবং চূড়ান্তভাবে ভাঙ্গবে কিন্তু আমাদের সরকার কি ভূমিকা পালন করবে। দ্বিজাতিতত্ত্ব চিরকালে জন্য নির্মুল করবে না কি করবে। সে যদি এখনই কোন পদক্ষেপ না নেয় তবে পূর্ববর্তী বক্তাগণ যেমন বলেছেন, তাদের সাহাযার্থে