পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

279 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ গণহত্যার প্রতিবাদে ও স্বায়ত্ত শাসনের দাবীতে | রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দেও را راه اند و آن را ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান প্রচারপত্র দমননীতি, গণহত্যার প্রতিবাদে ও স্বায়ত্ত শাসনের দাবীতে দলমত নির্বিশেষে সকল দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ হউন ভাই ও ভগিনীগণ, জালিমশাহীর গুলিতে আবার জনতার রক্ত ঝরিয়াছে। গত ৭ই জুন ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, তেজগাঁয় পুলিশের গুলিতে এ দেশের শাস্তিকামী মানুষকে আবার জীবন বিসজন দিতে হইয়াছে। সরকারী হিসাব মতেই গুলিবর্ষণে নিহতের সংখ্যা এগারো। অগণিত মানুষ আহত হইয়াছেন। দেড় হাজার ব্যক্তিকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হইয়াছে। ঢাকাসহ প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে ১৪৪ ধারা জারি করা হইয়াছে। জনতাকে শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে সামরিক ট্রায়ালের ব্যবস্থা করা হইয়াছে। দমননীতির প্রয়োগে দেশব্যাপী ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হইয়াছে। রাজবন্দীদের মুক্তি পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবীতে আওয়ামী লীগের আহবানে গত ৭ই জুন তারিখে প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে শান্তিপূর্ন হরতার পালিত হয়। হরতালের সাফল্য শাসকচক্রকে হকচকিত করিয়া তোলে এবং ইহাকে বানচাল করার জন্য সরকার নিরস্ত্র জনসাধারণের উপর পুলিশ বাহিনী লেলাইয়া দেয় ও পুলিশ নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। রুটি, রুজি, ও গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য সংগ্রামরত জনতার উপর গুলিবর্ষণ ইহাই প্রথম নয়। ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের মাদারশায় কৃষকদের উপর, ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী ও ১৯৬২ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর ঢাকায় ছাত্রদের উপর, টংগী, খুলনা ও চট্টগ্রামে কালুরঘাটে শ্রমিকদের উপর, সুশং, সানেশ্বর, নাচোল, মাগুরা ও বালিশিরায় কৃষকদের উপর এবং ১৯৫০ সালের ২৪শে এপ্রিল রাজশাহী জেলের অভ্যন্তরে দেশপ্রেমিক রাজবন্দীদের উপর গুলি চালাইয়া ইতিপূর্বে শত শত ব্যক্তিকে হত্যা করা হইয়াছে। পেশোয়ারের চারসাদার জনসভার উপর গুলিবর্ষণ এবং বেলুচিস্তানের ঈদের জামাতে বোমা বর্ষণ করা হইয়াছে। পাঞ্জাব ও করাচীতে ছাত্র হত্যা করা হইয়াছে- বেলুচিস্তান ও সরহাদের ন্যাপ নেতৃবৃন্দকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলানো হইয়াছে। ৭ই জুনের দমননীতি এই নির্মম দমননীতিরই অন্যতম বীভৎস নজির। গত ১৯ বৎসর যাবৎ পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর চরিত্রের স্বরূপ সাময়িক ব্যতিক্রম বাদে মোটামুটি একই রূপ হইলেও নৃশংসতায় বর্তমান সরকার তার পূর্বসূরীদের অনেক পিছনে ফেলিয়া আসিয়াছে। গদি রক্ষার তাগিদে ঈদের জামাত অথবা রাজপথের শান্তিপূর্ণ জনতার উপর পাশবিক হত্যালীলা চালাইতেও এই সরকার বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে নাই।