পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

623 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড শিরোনাম সূত্র # তারিখ শহীদ আসাদ দিবস পালনোপলক্ষে স্বাধীন পূর্ব পূর্ব বাংলা বিপ্লবী ছাত্র ১৫ জানুয়ারী, ১৯৭১ বাংলা কায়েমের আহবান ইউনিয়ন ২০ শে জানুয়ারী শহীদ আসাদ দিবস সর্বত্র পূর্ণ হরতাল পালন করুন সশস্ত্র কৃষি বিপ্লবের পতাকা উর্ধ্বে তুলিয়া ধরুন আসাদের স্বপ্ন স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা কায়েম করুন শহীদ আসাদের রক্তমাখা ২০শে জানুয়ারী আমাদের মাঝে আবার ফিরিয়া আসিয়াছে। ২০শে জানুয়ারী পূর্ব বাংলার কৃষক শ্রমিক জনতার মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে এক গভীর বেদনাদায়ক ও সংগ্রাম দিন। এই দিন পূর্ব বাংলার ছাত্র-জনতা সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও বৃহৎ পুঁজির জাতীয় নিপিড়ন ও শ্রেণী শোষনের বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের বিস্ফোরণ ঘটাইয়াছিল। আমাদের সংগঠনের পূর্বসূরী ও প্রিয় সার্থী আসাদ ছিলেন এই অভু্যত্থানের একজন নির্ভীক সেনানী। ১৯৬৯ সালের ২০শে জানুয়ারীর সকাল বেলায় শহীদ আসাদসহ জঙ্গী ছাত্রসমাজ যখন নিষ্ঠুর অত্যাচারী আইয়ুবশাহীর বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করিয়া মেডিক্যাল কলেজের সম্মুখে করিয়া হত্যা করে জনতার মুক্তি সংগ্রামের নির্ভীক যোদ্ধা আসাদকে। যাহারা প্রত্যক্ষদশী তাহারা জানেন, আসাদের হত্যাকান্ড কোন আকস্মিক ঘটনা নয়। অত্যন্ত বীরত্বপূর্ণভাবে লড়াই করিতে করিতে আসাদ হাসিমুখে শাসকগোষ্ঠীর বুলেটকে বরণ করিয়া লইয়াছেন-আসাদ শহীদ হইয়াছেন। আসাদের হত্যা, জনগণের মধ্যে বিদ্রোহের যে আগুন ধূমায়িত হইয়া উঠিতেছিল, তাহাকে দাউ দাউ করিয়া জুলাইয়া দিল শাসকগোষ্ঠী শাসকগোষ্ঠীর প্রশাসনযন্ত্র অচল হইয়া গেল আর গ্রামাঞ্চল হইয়া পড়িল আধা-মুক্ত এলাকা। সৃষ্টি হইল পূর্ব বাংলার বুকে এক প্রচন্ড বিপ্লবী গণ-অভু্যখান। জনতার সে কি বিপ্লবী মেজাজ! কি বিপ্লবী প্রাণবন্যা! জনতার এই বিপ্লবী শক্তি উৎখাত করিল জালেম আইয়ুব শাহীকে। সংগ্রামী দেশবাসী ! যে আশা-আকাঙ্খা লইয়া কৃষক শ্রমিক সাধারণ মানুষ এই বিপ্লবী গণ-অভু্যত্থান সৃষ্টি করিয়াছিল, যে স্বপ্ন লইয়া শহীদ আসাদ মাত্র চবিবশ বছর বয়সে তাঁহার অমূল্য প্রাণ বিসর্জন দিয়াছিল, জনগণের সেই আশাআকাঙ্খা কি বাস্তবায়িত হইয়াছে? শহীদ আসাদের সেই স্বপন্ন কি সার্থক হইয়াছে? দুই বছর পর ২০শে জানুয়ারী সে প্রশ্ন লইয়া আজ আবার আমাদের দুয়ারে হাজির হইয়াছে। আমাদের আজ সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে হইবে। আসাদের প্রাণ বিসর্জন ও জনতার বিপ্লবী গণ-অভু্যত্থানের একটি মাত্র উদ্দেশ্যই ছিলঃ তেইশ বছর ধরিয়া পূর্ববাংলার জনগণের উপর সাম্রাজ্যবাদ সামন্তবাদ ও বৃহৎ পুঁজি এই তিন শত্রর শোষন ও শাসনের যে পাহাড় চাপিয়া বসিয়া আছে, তাহাকে সমূলে উৎপাটিত করা, পূর্ব বাংলার বুকে কৃষক-শ্রমিক, মধ্যবিত্ত তথা সমগ্র জনতার একটি রাষ্ট্র কায়েম করা। মৃত্যুর পূর্ব দিন পর্যন্ত আসাদ এই উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করিবার জন্যই সংগ্রাম করিয়া গিয়াছেন। শহীদ আসাদ সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও বৃহৎ পুঁজির শাসন ও শোষণমুক্ত এমন এক নতুন পূর্ব বাংলা রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখিতেন, যে রাষ্ট্রে পূর্ব বাংলার কৃষক জোতদারী মহাজনী শোষণ হইতে মুক্ত হইবে, গরীব ও ভূমিহীন কৃষক জমির মালিকানা পাইবে, শ্রমিক বাঁচার