পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

768 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড i শিরোনাম সূত্র তারিখ জয়দেবপুরে ইষ্ট বেংগল রেজিমেন্টকে নিরস্ত্র সাপ্তাহিক “স্বরাজ” ২০ মার্চ, ১৯৭১ ; করার প্রতিরোধের সংবাদ সিপাহী বিদ্রোহ (স্বরাজ রিপোর্টার) ইসলামাবাদ থেকে আগত অতিথি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সাথে শেখ মুজিবুর রহমান যখন ঢাকায় বসে অধিকার আদায়ের প্রশ্নে বৈঠক করে চলেছেন, ঠিক তেমনি এ মুহুর্তে মুক্তি সংগ্রামের বর্তমান পর্যায়ে ইতিহাসের নতুন অধ্যায় সংযোজিত হয়েছে। রাজধানী শহর ঢাকা থেকে প্রায় পচিশ মাইল দূরে জয়দেবপুরের রাজবাড়ীতে অবস্থানরত ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি ব্যাটালিয়ন তাদের হাতিয়ার ছিনিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। উধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাদের অস্ত্র ফিরিয়ে দেবার নির্দেশ দিয়েছিল কিন্তু সৈনিকরা তা অগ্রাহ্য করেছে। বারুদের মূখে দাঁড়িয়ে বিষেশ ট্রেনিং গ্রহণরত সৈনিকরা ওপরওয়ালার নির্দেশকে প্রতিরোধ করেছে। এ সংবাদ দাবানলের মত আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকার মানুষ শুনতে পেয়েছে রাজবাড়ীর ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের জোয়ানদের হাতের অস্ত্র ফিরিয়ে দেবার নির্দেশ এসেছিল। সৈনিকেরা তা প্রত্যাখান করেছেন। মূল ছাউনিতে ফিরে যাবার হুকুম হয়েছিল, তা তামিল করেনি কেউ। কেড়ে নিতে এসেছিল, তারা প্রতিরোধ করেছে। গ্রামের পর গ্রাম থেকে মানুষ এসেছে গত দুদিন ধরে টঙ্গী-জয়দেবপুর রোড়ের মোড়ে জমায়েত হয়েছে। একটার পর একটা ব্যারিকেড গড়ে তুলেছে। নবনির্বাচিত জাতীয় পরিষদ সদস্য জনাব শামসুল হকের নেতৃত্বে বিদ্রোহী ব্যাটালিয়নকে রক্ষা করতে ওরা সমবেত হয়েছিল। সভা করেছে বিকেল পাঁচটায়, তারপর মিছিল গেছে জয়দেবপুর। গত বৃহস্পতিবার এসে জমায়েত হয়। বিক্ষুব্ধ এই জনতা অগ্নিমূর্তি ধারণ করে। ঢাকার দিক থেকে যেন কোন বিরুদ্ধ শক্তি এসে এদের অস্ত্র পর্যন্ত অন্যদিকে টঙ্গীর শহরের কাছে। ঢাকার দিক থেকে ময়মনসিংহগামী কোন গাড়ী অপরাহ্ল থেকে আর যেতে পারেনি। জয়দেবপুরের কাছ থেকে যে রাস্তাটা অস্ত্র নির্মাণ কারখানার দিকে এগিয়ে গেছে, সেখানেও বিরুদ্ধবাদীদের প্রতিহত করার জন্য ব্যারিকেড তৈরী করে। তাছাড়া জয়দেবপুরের রেল লাইনে বাধার সৃষ্টি করে গাড়ী চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা হয়েছে। এই অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার সারাদিন ও অধিক রাত পর্যন্ত বিরোধী শক্তির পথ রোধ করে রাখা হয়।