পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খণ্ড
৭৩৩

Pakistan, forgetting the untold miseries and in describable affections which befalls the muslims of India just before and after the birth of Pakistan and, in fact, it will be equivalent to passing a vote of censure on Pakistan herself

 MR. SHEIKH MUJIBUR RAHMAN:

 জনাব স্পীকার সাহেব, আজ আমরা পূর্ব পাকিস্তান পরিষদ থেকে জাতীয় পরিষদের নিকট আমাদের opinion পাঠায় যে আমরা যুক্ত নির্বাচন চাই, না পৃথক নির্বাচন চাই- যিনি পৃথক নির্বাচনের পথে resoultion move করছেন তাঁর বক্তৃতা শুনেছি। তাঁর points শুনেছি। জনাব সুলতানুন আলমের বক্তৃতাও শুনেছি। কিছুদিন পূর্বে যখন আমরা শাসনতন্ত্র তৈরী করার কাজে ব্যস্ত ছিলাম তখন তেকে আলোচনা শুরু হয়েছে যুক্ত নির্বাচন হবে কি পৃথক নির্বাচন হবে। Constitution এই provision আছে যে সকল প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন প্রথা স্থির করে জাতীয় পরিষদের নিকট জানাবে। মিঃ স্পীকার, স্যার, অনেক আলোচনা আপনি শুনছেন, ইসলামী principle-এর কথা শুনেছেন। পাকিস্তান কেন চেয়েছিলাম? আমার একটি কথা মনে পড়ে; পাকিস্তান হওয়ার পূর্বে যারা এক জাতিত্বে বিশ্বাস করতঃ পাকিস্তান হওয়ার পর তারা দুই জাতিত্বে বিশ্বাস করছে। মিঃ স্পীকার, স্যার ইসলাম বিশ্বাস করে বিশ্বভ্রাতৃত্বে। আজকে একদল লোক খোদাকে ছোট করতে চায়। একমাত্র মুসলমানের আল্লাহ? দুনিয়ার মানুষের আল্লাহ নয়? এ সম্বন্ধে আলোচনা করতে চাই না। এইটুকু আলোচনা করতে চাই, যিনি দুনিয়ার মানুষের আল্লাহ, তিনি সমস্ত মানুষকে এক চক্ষে দেখেন। দুই জাতি, থিওরীর কথা বলতে বলতে কেউ বলেছেন পাকিস্তানে দুই জাতি আছে। জাতি হিসাবে যদি ধরা হয় তাহলে আমরা পাকিস্তানে ৫/৬/৭ জাতি আছি। মুসলমান জাতি, খৃষ্টান জাতি, শেখ জাতি, বৌদ্ধ জাতি, হিন্দু জাতি, পার্শী জাতি ইত্যাদি। অনেকেই বলেন তপশীলভুক্ত এক জাতি আছে। ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তান যে হয়েছে সে সম্বন্ধে কিছু আলোচনা করতে চাই। আজকে আমাদের এই পরিষদ থেকে opinion দিব যে এই প্রদেশ যুক্ত নির্বাচন চায়, কি পৃথক নির্বাচন চায়। জাতীয় পরিষদে যখন শাসনতন্ত্র প্রণয়ন হয় তখন সভাপতিত্ব করেছেন মিঃ গিবন। তিনি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বিশ্বাস করেন না। তিনি আমাদের ইসলামী শাসনতন্ত্র পাশ করে দিয়েছেন। জাতীয় পরিষদের ৮০ জন সদস্যের মধ্যে ১২ জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্য ইসলামী শাসনতন্ত্রের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। সেখানে হিন্দু, খৃষ্টান, বৌদ্ধ, একসঙ্গে ভোট দিয়ে ইসলামী শাসনতন্ত্র পাশ করেছে। এটা জায়েজ কিনা? মিঃ স্পীকার, স্যার, আমরা ধর্মের নামে যুগে যুগে exploit করেছি। এ সম্বন্ধে আলোচনা করতে চাই না। আমি practical দিক দিয়ে আলোচনা করতে চাই। যুক্ত নির্বাচন জায়েজ কি না জায়েজ তা প্রমাণ করবার মত মৌলানা ওদিকে আছেন। তাঁরা বলেছেন যে, মুসলমানেরা একটা পৃথক জাতি এবং পৃথক নির্বাচন ছাড়া ইসলাম থাকতে পারে না, ইসলাম বাঁচতে পারে না। ইসলামের নীতি উপেক্ষা করলে ইসলামের মূলে কুঠারাঘাত করা হবে। আমরা সারা দুনিয়ার ৫০ কোটি মুসলমান বাস করি। পূর্ব পাকিস্তানে সাড়ে চার কোটি লোক বাস করে। ইন্দোনেশীয়ার ৭ কোটি মুসলমান বাস করে; সেখানে হিন্দু, খৃষ্টান, বৌদ্ধ আছে, সেখানে যুক্ত নির্বাচন। ইজিপ্টে মুসলমান ও খৃষ্টান আছে, সেখানে যুক্ত নির্বাচন। টার্কীতে প্রেসিডেণ্ট মুসলমান, সেখানে যুক্ত নির্বাচন। ভারতে তিন কোটি মুসলমান হিন্দুদের সঙ্গে ভোট দেয়, সেখানে যুক্ত নির্বাচন। রাশিয়ার মুসলমানরা যুক্ত নির্বাচনে ভোট দেয়। দুনিয়ার সমস্ত জায়গায় মানুষ যুক্ত নির্বাচনে ভোট দেয়। আমরা যুক্ত নির্বাচনে ভোট দিলে কাফের হয়ে যাব?

 যখন জনাব সুলতানুল আলম চৌধুরী বক্তৃতা করছিলেন তখন আমরা চুপ করে ছিলাম। আমি এখন যুক্ত নির্বাচনের পক্ষে বলছি। আশা করি opposition আমার কথা শুনলেন। পৃথক নির্বাচন প্রস্তাব যদি পাশ হয়ে যায় আমরা দুনিয়ার সামনে হীন প্রতিপন্ন হয়ে যাব। এক বন্ধু বলেছেন, যখন আমরা ভারতে দশ কোটি মুসলামান ছিলাম তখন দুই জাতির ভিত্তিতে পাকিস্তান পেয়েছিলাম। ভাল কথা, যখন দেশ ভাগ হয়ে গেল তখন