পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

416 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ সাম্প্রদায়িক দল নিষিদ্ধ ঘোষিত দেশ বাংলা ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ ১ম বর্ষঃ ৮ম সংখ্যা বাংলাদেশে সুস্থ রাজনীতির উজ্জ্বল সম্ভাবনা সাম্প্রদায়িক দল নিষিদ্ধ ঘোষিত (দেশবাংলা রিপোর্ট) বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ ঘোষনা করেছেন, বাংলাদেশে অতঃপর কোন সাম্প্রদায়িক দল থাকবে না। জামাতে ইসলামী, তিন মুসলিম লীগ, পিডিপি ও নেজামে ইসলাম দলকে বেআইনী ঘোষণা করে জনাব তাজউদ্দিন যশোরে স্বাধীন বাংলার মাটিতে প্রথম প্রকাশ্যে জনসভায় দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন, এখন থেকে আর ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। বলা বাহুল্য প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষনা সর্বত্র অভিনন্দিত হয়েছে। বিগত বছর যাবৎ বাংলাদেশকে পদদলিত করে রাখার ব্যাপারে পশ্চিমা চক্র ধর্মের লেবাসধারী এই দলগুলিকে সর্বপ্রকারের মদত দিয়েছে এবং বাংলাদেশে একটি প্রতিক্রিয়াশীল স্বার্থ-সর্বস্ব দালাল শ্রেণী সৃষ্টি করার কাজে এই দলগুলিকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছে। গণতন্ত্রের টুটি টিপে ধরে, সর্বপ্রকারের প্রগতির পথ আগলে দাঁড়াবার ব্যাপারে এই সব রাজনৈতিক ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানগুলি যথেষ্ট সংগ্রাম’ও করেছে। ২৫শে মার্চ বাংলাদেশের উপর নারকীয় দুর্যোগ নেমে আসার পর এই দলগুলির গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল নেতৃবৃন্দ নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে শান্তি (?) কমিটি’ গঠনের জন্য টিক্কা খাঁর কাছে ধর্ণা দেয়। তারপর থেকে এই সব শান্তি সৈনিকেরা ইয়াহিয়া-টিক্কা চক্রের কামানের খোরাক এবং কামনার শিকার সন্ধানের জন্য শিকারী কুকুরের ভূমিকা পালন করে এসেছে। তারই ইনাম হিসাবে তাদের ভাগ্যে জুটেছিল উপনর্বিাচন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ হাতের গ্রাস হাতেই থেকেছে, মুখে পৌছাবার আগেই কৰ্ম্ম-কাবার হয়ে গেছে। অতীতে দক্ষিণপন্থী ধ্যান ধারণা পোষণ এবং সাম্প্রদায়িক চেতনাভিত্তিক রাজনৈতিক ক্রিয়াকর্মের পিছনে অন্ততঃ এইটুকু যুক্তি ছিল যে জনগণকেই ভালোমন্দ বিচার করতে দেওয়া হোক। গণতন্ত্রে কোন মতকে জোর করে শুদ্ধ করে দেওয়া চলে না। কিন্তু গত আট মাসে এই তথাকথিত দলগুলি দেশ ও জাতির সাথে যেভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং দেশের মাটি রক্ত রঞ্জিত করার কাজে শত্রকে সর্বপ্রকারের সহায়তা করেছে, তার প্রেক্ষিতে আজ সে ব্যাপারে কোন শৈথিল্য প্রদর্শনের সুযোগ নাই। পঞ্চমবাহিনীকে দেশের বুকে রাজীতি করতে দেওয়া যাবে না, এ সিদ্ধান্ত পরিপূর্ণভাবেই গণতান্ত্রিক। এই দলগুলি বেআইনী ঘোষিত হবার পর বাংলাদেশে ছোট-বড় মিলিয়ে যে সব দল-উপদল জীবিত থাকবে বলে মনে হয়; যেগুলি কম-বেশী স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশীদার থেকেছে, সেগুলিকে এভাবে সাজানো যেতে পারে (১) আওয়ামী লীগঃ বৃহত্তম এবং বলতে গেলে বর্তমান পর্যায়ে একক রাজনৈতিক দল। সহযোগী ছাত্র সংগঠন, বাংলাদেশ ছাত্রগীগ, শ্রমিক সংগঠন, জাতীয় শ্রমিক লীগ। (২)ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (মোজাফফর পন্থী) ও বাংলাদেশ কমু্যনিষ্ট পার্টি সহযোগী ছাত্র সংগঠন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, শ্রমিক সংগঠন, ট্রেড-ইউনিয়ন সেন্টার। সংগঠনগত ও জনসমর্থনের দিক