পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৫১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

482 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড ১৬৩।কুমিল্লায় সামরিক গভর্নর দৈনিক পাকিস্তান ২৬ জুলাই, ১৯৭১ কুমিল্লায় প্রতিনিধিত্বমূলক সমাবেশে গভর্নর ভারত কখনও পূর্ব পাকিস্তানীদের বন্ধু হতে পারে না পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও খ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেঃ টিক্কা খান গতকাল রোব্বার পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকা সফরকালে কুমিল্লায় এক প্রতিনিধি সমাবেশে বলেন যে, যে ভারত গত বুধবার কুমিল্লা শহরের লোকদের উপর নির্বিচারে গোলাবর্ষণ করতে দ্বিধা করেনি সে কখনো পূর্ব পাকিস্তানের জনগনের বন্ধু হতে পারে না। এপিপির খবরে প্রকাশ উস্কানিবিহীন এই ভারতীয় গোলাগুলিতে নিহতদের জন্য সমবেদনা প্রকাশ করে গভর্ণর বলেন, এই ব্যবস্থা নিরপরাধ জনসাধারণের জীবনের প্রতি ভারতের চরম অবজ্ঞাই প্রদর্শন করেছে। জেনারেল টিক্কা খান বলেন, আমরা আমাদের জনগণের অর্থনৈতিক ভাগ্যেন্নয়নের জন্য শান্তি চাই । কিন্তু ভারত সীমান্তে উত্তেজনা জিইয়ে রাখছে। গভর্নর বলেন, ভারতীয় সৈন্যরা তাদের চরদের সহযোগিতায় মাঝে মাঝে বেসামরিক পোশাকে সীমান্ত এলাকায় অনুপ্রবেশ করে এবং আমাদের অর্থনীতির ধ্বংস সাধনের উদ্দেশ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে। পরিণামে সাধারন মানুষকেই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তিনি জনসাধারকে তাদের শত্রদের সম্পর্কে সর্তক করে দেন। তিনি বলেন, পল্লী এলাকার লেকদের গোলযোগ সৃষ্টিকারীদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষায় করার উদ্দেশ্যে রাজাকারদের নিয়োগ করা হচ্ছে । তিনি শান্তি বজায় রাখার এবং দুষ্কৃতকারীদের দমনে শন্তিকমিটির প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বলেন যে শান্তি কমিটিগুলো রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান নয় এবং তারা পাকিস্তানের সংহতি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার একমাত্র লক্ষ নিয়েই কাজ করছে। জেনারেল টিক্কা খান জনসাধারণকে গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন এগুলো জনসাধারণের স্বার্থের পরিপন্থী। সাম্প্রতিক একটি উদাহরণ দিয়ে গভর্নর বলেন যে, ঢাকায় শান্তিপূর্ণভাবে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। যারা বিভ্রান্তিকর গুজবের দরূন পরীক্ষা দেয়নি তারা একটি মূল্যবান শিক্ষাবছর হারিয়েছে। এলাকার খাদ্য মওজুদের পরিমাণে সন্তোষ প্রকাশ করে গভর্নর বলেন, যোগাযোগের অসুবিধা সত্ত্বেও প্রদেশের সব অংশের অভাবী লোকদের কাছে খাদ্য পৌছানো হবে । প্রেসিডেন্ট একাধিকবার আশ্বাস দিয়েছেন যে সব পাকিস্তানীদের গৃহে প্রত্যাবর্তনকে অভিনন্দন জানানো হবে। এর মাঝে ৯০ হাজারেরও বেশী লোক ফিরে এসেছে। অনুমোদিত পথে ভারতীয়রা বাধা দিচ্ছে বলে তাদের অধিকাংশকেই অননুমোদিত পথে আসতে হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। গভর্নর বলেন যে, পাকিস্তান সীমান্ত বরাবর জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক মোতায়েনের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে কিন্তু ভারত তা প্রত্যাখান করেছে। কারণ জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিতে তার সত্যিকার অভিসন্ধি ফাঁস হয়ে পড়বে।