পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৫৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

531 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড জেনারেল নিয়াজী পাবনা বাজারের মধ্য দিয়ে মোটরগাড়ী চালিয়ে যান। তিনি বাজারে সম্পূর্ণ স্বাভাবিকবাবে কাজকর্ম চলতে দেখেন। সফরকালে বিভিন্ন স্থানে জেনারেল নিয়াজ সৈন্যদের সাথে ঘরোয়াভাবে আলোচনা করেন এবং তাদের উচ্চ মনোবল দেখতে পান। তিনি মহাদেবপুর ও পাবনায় শান্তি কমিটির সদস্যদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। সশস্ত্র বাহিনী আক্রমণকারীকে হটিয়ে দেয়ার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত বলে তিনি তাদের আশ্বাস দেন। কিন্তু আভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে সেনাবাহিনী অনিচ্ছা সত্ত্বেও দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ তাদের মৃত্যুর অর্থ হচ্ছে পূর্ব পাকিস্তানে বিধবা ও এতিমের সংখ্যা বৃদ্ধি। সেতু উড়িয়ে দেয়, পাইলনে বিস্ফোরণ কিংবা রেল লাইন তুলে ফেলা নিজের ঘর ধ্বংস করারই সামিল এবং এইগুলি বিপথগামী লোকদের বলার জন্যই তিনি শান্তিকমিটির সদস্যদের উপদেশ দেন। তিনি বলেন যে, এই বিপথগামী লোকেরা বাস্তবিক পক্ষে এই দেশেরই সন্তান এবং এ দেশটিও তাদের। তাই যদি খাদ্য সরবরাহ চোরাচালান করা হয় বা প্রদেশের মশ্যে তার চলাচলে বাধা দেয়া হয় তাহলে এর জন্য সাধারণ মানুষ দুর্ভোগ পোহাবে। জেনারেল পরাধীন জাতির দুর্দশার বর্ণনা দিয়ে আজাদী পূর্বকালে মুসলমানগণ যে দুঃখ-দুর্দশায় দিন যাপন করেন, তা স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন যে, আমাদের সন্তানদের হিন্দুদের অধীনে যেতে দিব না। আমরা আমাদের মা-বোনদের তাদের দয়ার উপর ছেড়ে দিব না। জেনারেল নিয়াজী ইসলাম ও পাকিস্তানের দুশমনদের মোকাবিলার জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উপদেশ দেন। তিনি মুসলমানদের ইহিতাসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন যে, আমাদের প্রতিপক্ষ শ্রেষ্ঠ হয়েও আমাদের কখনো পরাজিত করতে পারেনি। তিনি বলেন যে, শুধু দেশদ্রোহীরা আমাদের ঐক্যকে ফাটল ধরানো জন্য কয়েকটি যুদ্ধে আমাদের পরাজয়বরণ করতে হয়। তিনি এইসব দেশদ্রোহী সম্পর্কে সজাগ থাকার জন্যে ও তাদের নির্মুল করার কাজে কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করার জন্য জনসাধারণের প্রতি উপদেশ দেন।