পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলার রাজধানী কলিকাতা لابعا অরণ্য মধ্যে চৌরঙ্গীনাথ নামক একজন সিদ্ধযোগী বাস করিতেন। র্তাহার নামানুসারে এই রাজপথের নাম হইয়াছে বলিয়া অনেকে অনুমান করেন। সন্ধ্যার সময় আলোক মালায় ভূষিত হইয়া চৌরঙ্গ অতি অপূৰ্ব্ব শোভা ধারণ করে। যাদুঘর-চৌরঙ্গীর উপরেই সুবিখ্যাত যাদুঘর অবস্থিত। এখানে নানাপ্রকার ভূতত্ত্ব, পুরাতত্ত্ব, জীবতত্ত্ব, স্থাপত্য, ভাস্কৰ্য্য ও চিত্রবিদ্যা সম্পর্কিত প্রাচীন ও আধুনিক বস্তু সংগৃহীত আছে। ভারতবর্ষের মধ্যে এত বড় ও এরূপ বৈচিত্র পূর্ণ মিউজিয়ম আর নাই। বিবিধ খনিজ পদার্থ, কৃষিজাত দ্রব্য, মৃত পশুপক্ষী ও জীবজন্তুর নমুনা, প্রাচীন হিন্দু, জৈন ও বৌদ্ধযুগের শিল্প সাধনার নিদর্শন, সহস্ৰ বৎসরেরও অধিক পুরাতন মিশর দেশীয় মমি বা শবদেহ, ব্রহ্মরাজ থিবোর স্বর্ণসিংহাসন, মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পা হইতে আবিষ্কৃত পাচ হাজার বৎসরের পুরাতন দ্রব্য ও অনার্য জাতির ব্যবহৃত বহুবিধ বস্তু প্রভৃতির দ্বারা মুসজ্জিত এই বৃহৎ ভবনটি দেখিলে একাধারে আনন্দ ও শিক্ষা উভয়ই লাভ হয়। ঐতিহাসিকযুগের নিদর্শনের মধ্যে সারনাথের অশোকস্তম্ভের চূড়া ও একটি প্রকাণ্ড প্রস্তর পেটিকা বিশেষ দ্রষ্টব্য। ইহার মধ্যে অন্যান্য দ্রব্য ব্যতীত খৃষ্টপূর্ব তৃতীয় বা চতুর্থ শতকের প্রস্তর কোঁটার মধ্যে বুদ্ধদেবের অস্থি পাওয়া গিয়াছিল। গণ্ডার – আলিপুর চিড়িয়াখালী মুদ্রাকক্ষে বহু ভারতীয় মুদ্রা এবং মূল্যবান জহরত ও প্রস্তরাদি রক্ষিত আছে। ইহার মধ্যে সম্রাট সাজাহানের একটি পান্নার পেয়ালা আছে। ১৭৩৯ খৃষ্টাব্দে নাদির শাহ দিল্লী লুণ্ঠনকালে এই পেয়ালাটি লইয়া গিয়াছিলেন। যাদুঘরে প্রায় পাঁচশত উল্কাপিণ্ড রক্ষিত আছে। উল্কাপিণ্ডের এত অধিক সংগ্ৰহ এসিয়া মহাদেশে আর কোথাও নাই। এই সংগ্রহটি সমস্ত পৃথিবীর মধ্যে একটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করিয়াছে ।