পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sct বাংলার পুরনারী তাহারা যেন একটি ক্ষুদ্র জগৎ সৃষ্টি করিয়া চলিল। তোতা, ময়না, টিয়া, স্বর্ণচষ্ণু দায়েল,-কত পাখী, কোনটি হাতের উপর, কোন পাখী পিঞ্জরাবদ্ধ, তাহাদের সকলেই গুণী, কেউ ঠিক মানুষের মত কথা কয়, কেউ শিষ দিয়া পাগল করে, কেউ মেয়েদের সঙ্গে মেয়েদের মত নাচে, কেউ ছাড়িয়া দিলে বায়ুমণ্ডলে চক্রাকারে ঘুরিয়া পুনরায় শান্ত ছেলেটির মত নিজ পিঞ্জরে ঢোকে, তাদের বর্ণে সোনার আভা, কেহ অয়স্কান্ত মণির ন্যায় কৃষ্ণ ও উজ্জল, কাহারো পাখায় যেন মরকত, কেউ যেন সবুজেগড়া। পাখী ছাড়া কত ঘোড়া ! তাহদের শিক্ষা দীক্ষা অদ্ভুত,-গাধা, শেয়াল, এবং সজারু, সঙ্গে সঙ্গে এক পাল শিকারী কুকুর, আর সঙ্গে সঙ্গে দড়ি কাছি বঁাশ, তাম্বু, ধনু, কাটি ও শর। তাহারা যেন নিজেরাই একটি ছোট পল্পী লইয়া চলিয়াছে। তাহদের প্রধান দ্রব্য, মন্ত্রসিদ্ধ চাড়ালের হাড় । সেই হাড় ছোয়াইলে মরা মানুষ বাচিয়া উঠে, কাটা মুণ্ড কথা বলে। পূৰ্ব্বারাগ সেই দলের স্বৰ্ণ-প্ৰতিমা মহুয়ার রূপ পথিকের প্রধান লক্ষ্য, বালকযুবকের বিস্ময়ের বস্তু। সে যেন আসমান হইতে মাটিতে পড়িয়াছে, তাহার পিছনে তাহার কঁাধে হাত দিয়া চলিয়াছে সমবয়স্ক রূপসী সখী পালঙ্ক । হাসিয়া খেলিয়া কৌতুক করিতে করিতে তাহারা সেই উপত্যকাভূমি পরিক্রম করিয়া কয়েক দিন পরে যে গ্রামে আসিয়া পৌছিল তাহার নাম বামুন-ডাঙ্গা । বামুন-ডাঙ্গা পল্লীতে এক বামুন যুবরাজ ছিলেন, নাম নদের চাঁদ। তিনি তরুণ বয়স্ক ও অতি সুদর্শন। তিনি প্ৰাতে সভা করিয়া বসিয়া আছেন, দূত আসিয়া বলিল, “একদল বেদে এসেছে, তারা আশ্চৰ্য্য আশ্চৰ্য্য তামাসা দেখাতে পারে। তাদের সঙ্গে একটি মেয়ে আছে, তার মত সুন্দরী আমরা জন্মে দেখি নাই।” যুবরাজ ভিতর বাড়ীতে